
ঢাকায় অবস্থানরত নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাজ্য। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশেকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশৃঙ্খলা হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই এই নির্দেশনা দিয়েছেন দেশটি।
আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দেশটির ভ্রমণ পরামর্শবিষয়ক ওয়েবসাইটে এ সতর্কতার কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ঘিরে শহরের চারপাশে পরিবহন, যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং চলাচলে ব্যাঘাত হতে পারে। সমাবেশের কারণে সংঘর্ষ-সংঘাতও হতে পারে, এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও থাকতে পারে।
ভ্রমণ সতর্কতায় আরও বলা হয়, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঘিরে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিও সম্ভবত বেড়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত ব্রিটিশ নাগরিকদের বড় ধরনের জমায়েতসহ রাজনৈতিক র্যালি এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিমিয় সভায় সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আসলে জনসভা নয়, ১০ ডিসেম্বর ইস্যু বানিয়ে বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। কেউ এ চেষ্টা চালালে দলের নেতারা জনগণকে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে। এমন ঘোষণার পর যুক্তরাজ্য তার নাগরিকদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে জায়গা দেয়া হয়েছে। পুলিশের সাথে আলোচনার সময় বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল। যেখানে বাংলাদেশের সব বড় বড় জনসভা হয়েছে। আসলে এখন তারা রাস্তায় জনসভা করে গাড়ি ভাঙচুর করতে চায়। তারা জনজীবনে বিপত্তি ঘটাতে চায়।
প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো জনসভা করতে চায় না। তারা এটিকে ইস্যু বানাতে চায় এবং দেশে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টায় আছে তারা। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালালে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করবে।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী ও ইশরাক হোসেনের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে সাংবাদিদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের বিরুদ্ধে তো মামলা আছে। জামিন বাতিল হলে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তাদের জামিন আদালত বাতিল করেছে। এখানে সরকারের কোনো হাত নেই।
এদিকে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস পল্টনের রাস্তায় না হলে গোপিবাগের রাস্তায় সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। অনুমতি দেওয়ার পরও তারা ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিকল্প ভেন্যু তৈরির প্রস্তাব দেয়। বিএনপির পক্ষ থেকে আরামবাগে বিকল্প ভেন্যুর জন্য মতিঝিল বিভাগের ডিসির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে ডিএমপি কমিশনারের কাছে আসেনি।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি আরও বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এখন পর্যন্ত বিকল্প ভেন্যু নিয়ে ভাবেনি। যেহেতু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাই এখন পর্যন্ত ডিএমপি সেই অবস্থানেই রয়েছে। কোনো রাস্তার ওপরে ডিএমপি অনুমতি দেবে না। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় যে ধরনের কার্যক্রম নেওয়া দরকার ডিএমপি তা নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না চাওয়ার পেছনে বিএনপি কোনো কারণ উল্লেখ করেছে কি না জানতে চাইলে ডিসি ফারুক হোসেন বলেন, তারা সিকিউরিটির একটা থ্রেট ফিল করছে বলে জানা গেছে। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যত ধরনের পুলিশি সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজন সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস আমরা দিয়েছি। সূত্র: বাংলাভিশন