বিএনপি ঘোষণা দিয়ে সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসে নিজেরাই সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি বলেছিল সরকারের পতন ঘটাবে, ১০ তারিখের পর থেকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ চলবে। তারা সরকারের পতন ঘটাতে এসে নিজেদের পতন ঘটিয়ে দিয়েছেন। সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসে নিজেরা পদত্যাগ করে বসলেন সংসদ থেকে।
তিনি আজ সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন।
নগরীর কাজীর দেউড়িস্থ এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
সম্মেলনের প্রথম পর্বে. ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করে সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসেছিলেন। উল্টো তারাই সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। বিএনপি বলেছিল, ১০ ডিসেম্বর তাদের ১ দফা দাবি। আর সমাবেশে তারা এখন ১০ দফা দাবিতে এসেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি মনে করেছেন সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সরকারের ভীত নড়ে যাবে। সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে এর বেশি কিছু হয়নি। তারা যেদিন পদত্যাগ করেছে সেদিনই সংসদ সচিবালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদের আসন শুন্য ঘোষণা করেছে। সামনে উপনির্বাচন হবে, এখন তারা বুঝবে কি ভুলটি তারা করেছেন।
তথ্য মন্ত্রী বলেন, গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতোই বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার কথা বলে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করেছে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কঠিন দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেলে, দেওয়ালের কিছু হয় না। উল্টো যে ধাক্কা দেয় সেই মাথায় ব্যথা পায়৷ তাই তেমনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ধাক্কা খেতে এলে আওয়ামী লীগের কিছুই হবে না। উল্টো বিএনপি ভেঙে পড়ে যাবে।
বিএনপি শীতের পাখির মতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি শীতের পাখির মতো নির্বাচনের সময় আসবে। রিজভী, ফখরুল, তারেক জিয়া থেকে টাকা নিয়ে নির্বাচন করবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামীলীগকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বিএনপি নিজেরাই ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এমন শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে কেউ ধাক্কা দিলে সেই নিচে পড়ে যায়। কঠিন দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেলে, দেওয়ালের যেমন কিছু হয় না, উল্টো যে ধাক্কা দেয় সেই মাথায় ব্যথা পায়। তেমনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ধাক্কা খেতে এলে আওয়ামী লীগের কিছুই হবে না। উল্টো বিএনপি ভেঙে পড়ে যাবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ছিল। অনেক হিসেব নিকেশ করেই বিএনপি ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। ঘোষণা দিয়েছিলেন দশ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। শেষমেষ বিএনপি অফিসের ভেতরে পাওয়া গেল পনেরটি তাজা বোমা, ১৬০ বস্তা চাল, আড়াই লাখ পানির বোতল আর লাঠিসোটা। তার মানে হচ্ছে তারা আসলে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানোর জন্য নয়াপল্টনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ৭ তারিখ থেকে সমাবেশ শুরু করে পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করল। যখন সরকার কঠোর হল তখন আবার বসল, তারা বেছে নিল গোলাপবাগ মাঠ। সেখানে চট্টগ্রামের দেওয়ানহাটের মত গরুর হাট বসে। এত ময়দান থাকতে তারা বেছে নিল গরুর হাটের ময়দান। পঞ্চাশ হাজার বর্গফুটের এই ময়দানে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ ধরে। আশপাশের রাস্তা মিলিয়ে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার মানুষের সমাবেশ করলেন তারা।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।
