
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিদেশে পণ্য রপ্তানির ঘটনা উদঘাটন করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। জব্দ করা হয়েছে ৩ কোটি টাকা মূল্যের ৭টি কনটেইনার ভর্তি রপ্তানীর জন্য রাখা পণ্য।
রাজধানী ঢাকার মোল্লারটেক এলাকার প্রতিষ্ঠান সাবিহা সাইকি ফ্যাশন। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এলসি জালিয়াতি করে ইতোমধ্যে ২২ কোটি টাকা মূল্যের ৮৫টি চালান রপ্তানি করেছে মর্মে তদন্তে উদঘাটিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে ভুয়া এলসির মাধ্যমে বিদেশে পণ্য রপ্তানীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বিদেশে টাকা পাচার করেছে। এলসির কাগজপত্রের প্রাথমিক তদন্তে প্রতিষ্ঠানটির কারসাজির প্রমাণও পেয়েছে সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম মহানগরীর কাঠগড় এলাকার এসইপিএল ডিপোর মাধ্যমে পণ্যচালানগুলো রপ্তানি হচ্ছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে ৭ কন্টেইনার আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা।
সাবিহা সাইকি ফ্যাশন নামের প্রতিষ্ঠানটি ম্যানস টিশার্ট ও লেডিস ড্রেস রপ্তানির ঘোষণা দিলেও আটক করা সাতটি কনটেইনার খুলে দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানি ম্যানস্ ট্রাউজার, টিশার্ট, পোলো শার্ট ও বেবি সেট রপ্তানি করছিল বলে জানায় শুল্ক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার বলেন, এলসি জালিয়াতি করে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ২২ কোটি টাকা মূল্যের ৮৫টি চালান রপ্তানি করেছে। বাকি সাত কনটেইনারে থাকা ৯ চালান আমরা আটক করেছি। সেখানেই আমরা জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছি। তারা কম পণ্য ঘোষণা দিয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি করছিল। ওই নয় চালানে আমরা ১১৮ মেট্রিক টন পণ্য আটক করেছি। যার মূল্য ৩ কোটি টাকা। আমরা তাদের সবগুলো রপ্তানি চালান তদন্ত করে দেখবো। তাই আমাদের যুগ্ম পরিচালক মো. সাইফুর রহমানকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটি দলিল জালিয়াতি করে পণ্য রপ্তানি করছিল এমন খবর পেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাঠগড় এলাকার এসইপিএল ডিপোতে অভিযান চালানো হয়।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটির বিল অব এক্সপোর্টের ১৫টি বিল যাচাই করে দেখার জন্য অগ্রণী ব্যাংকে পাঠানো হয়।
অগ্রণী ব্যাংক জানায়, সাবিহা সাইকি ফ্যাশন নামে তাদের কোন গ্রাহক নেই। ব্যাংকটি জানায়, বিল অব এক্সপোর্ট অগ্রণী ব্যাংক প্রধান শাখার অন্য রপ্তানিকারকের নামে ইস্যু করা। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি ভুয়া এলসি ব্যবহার করে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করছিল। প্রতিষ্ঠানটির মোট ৯৪টি চালান ছিল। ইতোমধ্যে ৮৫টি চালান জালিয়াতি করে মালয়েশিয়া, সুদান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো তে রপ্তানি করেছে। তাই বৈধ উপায়ে বৈদেশিক মুদ্রা আসার সুযোগ না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি মানিলন্ডারিং করেছে। এ চালানের বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে নগরের হালিশহর এলাকার সিএন্ডএফ এজেন্ট লিমাক্স শিপার্স লিমিটেড কোন সহযোগিতা করেনি।