
জেলার চন্দনাইশ উপজেলায় পাহাড় কাটার সংবাদ প্রকাশ করায় আইয়ুব মিয়াজী (৩৪) নামে এক সাংবাদিককে মারধর করে দোতলা থেকে নিচে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টার করেছে। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই সাংবাদিক। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আইয়ুব মিয়াজী দৈনিক জনবাণী, পূর্বতারা, স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। দোহাজারী পৌরসভা এলাকায় আর কে প্লাজার দোতলায় একটি কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে তার। দুর্বৃত্তরা তার সেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে।
হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে বৃহস্পতিবার মানবন্ধন পালন করেছে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
তাকে দোতলা থেকে ফেলে দেওয়ার একটি সিসিটিভি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
আইয়ুব মিয়াজীর বাবা আবদুল শুক্কুর বলেন, ‘আমার ছেলে পাহাড় কাটা নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ করেছিল। এ কারণে পাহাড় কাটায় জড়িতরা ক্ষুব্ধ হয়ে তার কম্পিউটার দোকানে হামলা চালায়। ওই সময় দোকান ভাঙচুর করে তাকে হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে দোকানের দোতলা থেকে নিচে ফেলে দেয়। এতে গুরুতর আহত হয়। ওই দিন তাকে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরদিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের ওপর হামলার ঘটনায় চন্দনাইশ থানায় মামলা করেছি। পুলিশ এখনও ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করেনি।’
আইয়ুব মিয়াজীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার দোহাজারী পৌর সদরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আইয়ুব মিয়াজী বলেন, ‘উপজেলার জামিজজুরি ইউনিয়নে পাহাড় ও মাটি কাটা নিয়ে জনবাণী পত্রিকায় ১০-১২ দিন আগে আমার একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এরপর উপজেলা প্রশাসন সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। এই কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার স্থানীয় আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন যুবক এসে আমার প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। তারা আমাকে প্রথমে দা দিয়ে কোপ মারার চেষ্টা করে, লোহার বাটাম দিয়ে বুকে আঘাত করে। একপর্যায়ে দোতলা থেকে নিচে ফেলে দেয়। এখনও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছি না।’
এদিকে, আইয়ুব মিয়াজীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার দোহাজারী পৌর সদরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। চন্দনাইশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়।
চন্দনাইশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিন দিন পার হয়ে গেলেও এখনও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি চাই।’
চন্দনাইশ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাংবাদিক আইয়ুব মিয়াজীর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।’