খাগড়াছড়িতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই বিভাগের ইফতার মাহফিল এবং পৌর শ্রমিক লীগের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ আদেশের কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘খাগড়াছড়িতে ইফতার মাহফিল ও সমাবেশ চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা অবনতি হতে পারে। এজন্য আগামীকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি বাস টার্মিনাল ও এর আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারামতে এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।’
জানা গেছে, খাগড়াছড়িতে ৮ এপ্রিল শনিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই বিভাগের ইফতার ও দোয়া মাহফিলে বাধা সৃষ্টি করলে বা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে আগামী ১২ ও ১৩ এপ্রিল খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জেলা বিএনপি।
একই দিনে খাগড়াছড়ি পৌর শ্রমিক লীগ সমাবেশ ডাকায় খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
শুক্রবার বেলা ১১টায় শহরের কলাবাগান এলাকায় নিজ বাসভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি সাংবাদিকদের জানান, ৮ এপ্রিল শনিবার খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই বিভাগের ইফতার ও দোয়া মাহফিল হওয়ার নির্ধারিত তারিখ। ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়াও চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগের স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিকসহ জেলা বিএনপি ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা অংশ নেবেন।
তিনি বলেন, ইফতার মাহফিলের ভেন্যু নির্ধারনের জন্য ইতোমধ্যে গত ২৮ মার্চ খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও সরকারি কলেজ মাঠ এবং ৩ এপ্রিল আউটার স্টেডিয়াম মাঠ, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ ও সর্বশেষ খাগড়াছড়ি বিসিক শিল্প নগরী মাঠ পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে আবেদন করা হলেও অনুমতি মিলেনি। এ নিয়ে জেলা বিএনপির নেতারা বারবার সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ ও সমন্বয় করলেও তারা বিভিন্ন অজুহাতে কাল বিলম্ব করছে।
তিনি আরো বলেন, ইফতার একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান, এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। দেশের বিভিন্ন জেলায় এমন অনুষ্ঠান হচ্ছে এবং প্রশাসন অনুমতি দিচ্ছে। কিন্তু শুধুমাত্র খাগড়াছড়িতে ভেন্যু অনুমতি দিতে প্রশাসনের বিভিন্ন গড়িমসি ও তালবাহানা একটি স্বাধীন দেশে গণতন্ত্রের পরিপন্থী। খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি এহেন কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নিজস্ব ব্যক্তিগত জমি বা মাঠে এই ইফতার মাহফিলের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে প্রশাসনকে তা অবগত, নিরাপত্তাসহ সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে পত্র দেয়া হয়েছে এবং ইফতার মাহফিলের যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠন, বিভিন্ন কর্মসূচির নামে একই তারিখে জেলার বিভিন্ন মাঠ অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এতে প্রতীয়মান হচ্ছে, তারা আমাদের ধর্মীয় প্রোগ্রামটা বানচাল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা মেনে নেয়া যায় না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, আমাদের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন করতে কোনোরকম বাধা সৃষ্টি করলে বা এতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তারই প্রতিবাদে আমরা আগামী ১২ ও ১৩ এপ্রিল খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।
এমতাবাস্থায় আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, আমাদেরকে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির দিকে ঠেলে না দিয়ে আপনারা আমাদেরকে ইফতার মাহফিল সু-সম্পন্ন করতে সাহায্য করবেন।