ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চট্টগ্রামের বনাঞ্চল থেকে পাচার হচ্ছে কোটি টাকার কাঠ

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

চট্টগ্রাম বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে প্রতি রাতে পাচার হচ্ছে কোটি টাকার কাঠ। সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে শুরু করে সামাজিক বনায়নও রেহাই পাচ্ছে না। পাচারকারীদের সঙ্গে যোগসাজশ স্থানীয় সরকারি বন বিট কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়েছেন কাঠ পাচারে। প্রতিবছর সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত চলে এ কাঠ পাচারের মহোৎসব। এ সাত মাস বনপ্রহরীদের কাছে ‘(সিজন) মৌসুম’ নামে পরিচিত।

অনুসন্ধনে জানা যায়, সরকারি অর্থায়নে সৃজিত বন বাগান ধ্বংসের পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে সরকারের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ফটিকছড়ির ৫টি রেঞ্জ অফিসের আওতায় ১৫টি বন বিট থেকে প্রতিরাতেই চলছে কাঠ পাচারের মহোৎসব। বন বিট, থানা পুলিশ ও ক্ষমতাসীনদের নামে প্রতিরাতে লক্ষ টাকার চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।

পাচার হওয়া কাঠগুলোর মধ্যে রয়েছে- আকাশমণি, জারুল, জাম, সেগুন, চাপালিশ, গামারি, কড়ই ও গর্জনসহ নানা প্রজাতির গাছ। দিনে এসব গাছ কেটে রাতভর তা পাচার করা হয়। রাত যত গভীর হয় পাল্লা দিয়ে ততই বাড়তে থাকে কাঠ পাচারের উৎসব।

নারায়ণহাট রেঞ্জের নারায়ণহাট বন বিট, দাঁতমারা বন বিট, বালু খালী বন বিট, ধুরুং বন বিট, হাজারিখীল রেঞ্জের বারমাসিয়া বন বিট, ফটিকছড়ি বন বিট, হাসনাবাদ রেঞ্জের হাসনাবাদ বন বিট, তারাখোঁ বন বিট, হাটহাজারী রেঞ্জের শোভনছড়ি বন বিট, করেরহাট রেঞ্জের হেয়াকো বন বিট ও আঁধার মানিক বন বিট থেকে প্রতিদিন নির্বিচারে এসব মূল্যবান গাছ কাটা হচ্ছে।

.

অনুসন্ধনে আরো জানা যায়, বিশেষ করে রাউজান ও হাটহাজারীর বিভিন্ন ইটভাটায় এসব কাঠ পাচার করা হচ্ছে। এছাড়া নাজিরহাটে কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেটকারীদের একটি সমিতিও করেছে। যাতে অন্য কেউ অন্য ইটভাটায় কাঠ বিক্রি করতে না পারে। জিপ প্রতি ৪-৫শ’ টাকা, মিনি ট্রাক ১ হাজার থেকে ১৫শ’ টাকা, বড় ট্রাক ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা, টিসি ট্রাক ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে বন বিট ও থানা পুলিশ।

এছাড়া গোল গাছ ও চিরাই গাছের ক্ষেত্রে প্রতি জিপ গাড়ি ৮ থেকে ১২শ’ টাকা, মিনি ট্রাক ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার, বড় ট্রাক ৮ থেকে ১২ হাজার, টিসি ট্রাক ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে ফটিকছড়ির ধুরুং বন বিটের বিভিন্ন বনায়নে দেখা যায়, এসব চাঁদা আদায়ে নারায়ণহাট এলাকায় ইজারার ভিত্তিতে স্থানীয় কালেক্টর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বন বিভাগের বিশেষ টহল বাহিনী (স্পেশাল নামে পরিচিত)’র নামেও মোটা অংকের চাঁদা তোলা হচ্ছে।

ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ সরবরাহকারী সাহাবুল আলম (৪৩) বলেন, ঘাটে ঘাটে চাঁদা না দিলে গাড়ি পার হয় না। আবার নাজিরহাটের কাঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়েও ব্যবসা করা যায় না।
দাঁতমারা এলাকার কাঠুরিয়া আইয়ুব (৩৮) জানান, বন বিভাগের দখলদার এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকায় জ্বালানি কাঠের বাগান ক্রয় করেছি। এ জন্য ইউপিডিএফ, জেএসএস বনবিট অফিস ও স্থানীয় নেতাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। আবার গাড়ি প্রতি চাঁদাও দিতে হচ্ছে।

নারায়ণহাট বন বিটের সন্ধিপ পাড়া এলাকার বাসিন্দা কিছমত আলী (৫৫) বলেন, এখানে আমাদের বসতি প্রায় ২০-৩০ বছরের। আমাদের লাগানো গাছ কাঠতেও প্রতি বছর বিট অফিসকে চাঁদা দিতে হয়। না হলে উচ্ছেদ হতে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামাজিক বনায়নের লট ক্রেতা এক ব্যবসায়ী বলেন, নিলামে বাগান ক্রয় করে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা এবং নিয়ম মেনে গাছ কাটলেও বনবিট ও রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের প্রধান বন কর্মকর্তা মো. জগলুল হোসেন বলেন, বনবিট ও রেঞ্জ অফিস রাখা হয়েছে বনায়ন রক্ষার জন্য। কাঠ চোরের সঙ্গে যোগসাজশে কাঠ পাচার করে বন ধ্বংস করার জন্য নয়।

তিনি আরো বলেন, সব সড়কে শীতকালীন বিশেষ টহল টিম (স্পেশাল টিম) সক্রিয় করা হবে এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print