
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় সাপের কামড়ে আবারও এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এক সপ্তােহর ব্যবধানে এক কিশোরীসহ ২ জনের মৃত্যু হল।
সোমবার ( ১২ জুন) বিকালে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে মো. জুয়েল নামে যুবককে সাপে কামড় দেয়। মঙ্গলবার (১৩ জুন) ভোরে নৌ-পথে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পথে মারা যান তিনি। নিহত জুয়েল উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
জানা গেছে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিভেনম থাকার পরেও মারার ব্যবস্থা না থাকায় বিনা চিকিৎসায় মারা যান ওই যুবক।
জুয়েলের ভাই দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সাপে কামড় দেওয়ার পর জুয়েল কাউকে না জানিয়ে জেলে পাড়ায় যাচ্ছিল ওঝার কাছে। খবর পেয়ে আমরা তাকে সেখান থেকে হাসপাতাল নিয়ে যাই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানানো হয় এন্টিভেনম আছে কিন্তু এন্টিভেনম দিতে আইসিইউ লাগবে। কিন্তু সেটি নেই। তাই রোগীকে চট্টগ্রাম নিতে বলে। রাতে চট্টগ্রাম যাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় অপেক্ষা করতে হয়। ভোরে নৌ-পথে চট্টগ্রাম মেডিকেল নেওয়ার পথে জুয়েল মারা যায়।’
গাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা বলেন, এন্টিভেনম থাকার পরও সাপে কাটা রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার বিষয়টি উপজেলা কমিটির আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তোলা হবে।
সন্দ্বীপের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মানস বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের স্টকে এন্টিভেনম ছিল। কিন্তু দক্ষ লোক ও প্রয়োজনীয় সেটআপ নেই। সেই কারণে এন্টিভেনম প্রয়োগ করা হয়নি। জুয়েলের ঘটনার পর উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলাপ হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে এখন থেকে যারা রিস্ক বন্ড দিবে তাদের এন্টিভেনম প্রয়োগ করা হবে।’
এর আগে গত ৬ জুন উপজেলার বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন উড়িরচরে সাপের কামড়ে রাবেয়া (১২) নামে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। তাকেও কোনো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
নিহত স্কুলছাত্রীর নাম রাবেয়া বেগম উরিরচর নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ও উরিরচর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বলি মাঝির বাড়ির মো.মোহাব্বত সওদাগরের কন্যা।
রাবেয়ার পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, সোমবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে ঘুরতে গেলে সেখানে ঘরের মধ্যে বিষধর সাপে তাকে কামড় দেয়। সে দ্রুত এসে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানায়। এর কিছুক্ষণ পরে সে মারা যায়।
রাবেয়ার পিতা মোহাব্বত সওদাগর জানান,আমার মেয়ে তাকে সাপে কামড়ানোর কথা জানালে আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী নেওয়ার ব্যবস্থা করছিলাম। কিন্তু মেয়ে আর সময় দিলনা, এক থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যে তার মৃত্যু হয়।