
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দকে জড়িয়ে ইউটিউব ও ফেসবুকে মানহানিকর ভিডিও প্রকাশ নিয়ে আরো একটি মামলা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২০ জুন) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে ৩৪২/২৩ মামলাটি দায়ের করেন তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ এমরুল করিম রাশেদ।
এর আগে একই অভিযোগে গতকাল নগরীর চকবাজার থানায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের পক্ষে আরও একটি মামলা করেন মামলাটি দায়ের করেন মো. আরিফুল ইসলাম নামের এক যুবলীগ নেতা।
আরও খবর- তথ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ, কানাডা প্রবাসী ইউটিউবারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে মামলা
এদিকে আজ দায়ের হওয়ামামলাটি গ্রহণ করে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জহিরুল কবির চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন একই সঙ্গে বিভ্রান্তি ছড়ানো ভিডিওগুলো সরাতে বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলাটির পরবর্তী তারিখ আগামী ১০ আগস্ট নির্ধরণ হয়েছে।
মামলায় মানহানিকর ভিডিও প্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর ঘটনায় কানাডা প্রবাসী ইউটিউবার নাজমুস সাকিবসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- এইচ এম কামাল, আজাদ শাহাদাত, সানি প্রধান, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, খোন্দকার ইসলাম এবং হাজী হারুন রশিদ। এ ছাড়া যারা ‘নাগরিক টিভি’র ওই ভিডিওতে লাইক, কমেন্টস ও শেয়ার করেছেন, সেই অজ্ঞাত ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা সাইবার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ষড়যন্ত্রকারী, হলুদ ও ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ব্যক্তি। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী, শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে কুৎসা রটনা, চরিত্রহনন ও চাঁদা দাবি করে, এটাই আসামিদের একমাত্র পেশা ও নেশা।
তারই ধারাবাহিকতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে হেয় করতে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ‘নাগরিক টিভি’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ থেকে নাম উল্লেখ করে ১৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, উল্লেখিত ছবি সম্বলিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন।
মামলার বাদী এমরুল করিম রাশেদ জানান, প্রকৃত অর্থে এটা কোনো টিভি চ্যানেল নয়, এটি একটি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজ মাত্র। তাদের উল্লেখিত কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রকৃত ‘নাগরিক টিভি’র কর্তৃপক্ষ আসামি কর্তৃক পরিচালিত ভুয়া ও অবৈধ নামধারী ‘নাগরিক টিভি’র সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই মর্মে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যে প্রচার করেছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এপিপি নিখিল কুমার নাথ বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ইউটিউব ও ফেইসবুক থেকে কথিত দুর্নীতির ভিডিওটি প্রত্যাহারের জন্য বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন।
বাদী পক্ষে মামলার শুনানিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ মিন্টু, আইনজীবী এম এ নাছের চৌধুরী, সুভাষ বড়ুয়া, রেহানা বেগম রানু, মোহাম্মদ দিদার, রবিউল আলম, দেলোয়ার হোসেনসহ ডজন খানেক আইনজীবী অংশ নেন।