
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সীতাকুণ্ড কুমিরা ফেরিঘাট থেকে সন্দ্বীপগামী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে।
আজ বুধবার (২৮ জুন) দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার কুমিরা ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং ঘটনাস্থল থেকে নয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
জানাগেছে, ঈদে সন্দ্বীপে যাওয়ার জন্য ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজারো যাত্রী ভোর থেকে টিকেটের জন্যে কুমিরা ঘাটে অবস্থান করে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নাম্বার সিগন্যাল ঘোষণা ও সাগর উত্তাল থাকায় ঘাট কর্তৃপক্ষ জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখে। এতে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় হাজারো যাত্রী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।
উত্তেজিত যাত্রীদের শান্ত করতে ঘাট কর্তৃপক্ষ সকালে উদ্ধতন কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে সকালে সন্দ্বীপ থেকে একটি জাহাজ নিয়ে আসেন। সেই জাহাজে করে প্রায় ১ হাজার যাত্রী সন্দ্বীপে ফিরে। এরপর আরো ১ হাজারের অধিক যাত্রী কুমিরা ঘাটে অপেক্ষায় থাকেন।
বিষয়টি কুমিরা ঘাট কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ, সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলেও আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় জাহাজের ক্যাপ্টেন জাহাজ চালাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ফলে কাউন্টার থেকে টিকেট বিক্রি বন্ধ রাখা হয়। হাজারো যাত্রীর বাড়ি যাওয়া অনিশ্চিত হলে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন তারা। এসময় তারা কাউন্টারে ব্যাপক ভাঙচুর করে। অফিসের সমস্ত দরজা, জানালা, গ্লাস, চেয়ার- টেবিল ভেঙে ফেলে।
বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা অফিসে সমস্ত আসবাবপত্র ভেঙে সাগরে ফেলে দেয়। এবং কাউন্টার থেকে নগদ সাড়ে তিনলক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে জানান ঘাট কর্তৃপক্ষ।
খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানা, নৌ পুলিশ, কোষ্টগার্ড ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্দ্বীপ থেকে কুমিরা আসা নরুত্তম বনিক নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হাজারো যাত্রী টিকেট না পেয়ে কাউন্টারে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা সব জিনিসপত্র সাগরে ফেলে দেয়। কুমিরা ঘাট পরিচালক নয়ন জানান, আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জাহাজ বন্ধ রাখা হয়। এরপরও যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে সকালে একটি জাহাজ পাঠানো হয়। এরপর আরো ১ হাজারের মতো যাত্রী আটকা পড়লে বিষযটি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্ত জাহাজ চলাচল অনুকূলে পরিবেশ না থাকায় ক্যাপ্টেন জাহাজ ছাড়তে রাজি হননি। যার ফলে বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা কাউন্টার ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এবং ক্যাশের নগদ সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। তিনি বলেন, জাহাজ ছাড়া না ছাড়ার বিষয়টি আমাদের অনুকূলে নয়।
আবহাওয়া খারাপ হলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া জাহাজ ছাড়া যায়না। একটা দুর্ঘটনা ঘটলে সেটার দায় আমাদের উপর বর্তাবে।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে হাজারো সন্দ্বীপবাসী পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করতে না পেরে ক্ষুব্দ হয়ে ফিরে যান।