
কক্সবাজারের পেকুয়ায় দাওয়াত দিয়ে বাড়িতে ডেকে আব্দুল মালেক ওরফে মালেক মাঝি (৩৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার টৈটং ইউপির ঘোনার মাথা এলাকার মীর আহমদের বাড়িতে এই লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটে। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুর ৩ টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল মালেকের মৃত্যু হয়।
নিহত আব্দুল মালেক উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের গুড়িকাটা এলাকার নুরুল হকের পুত্র।
জানা যায়, সোমবার রাতে আবদুল মালেককে একই ইউনিয়নের ঘোনার মাথা এলাকার আত্মীয় মীর আহমেদের ছেলে রাশেদ তাদের বাড়িতে রাতে দাওয়াত দেয়। সেই অনুযায়ী মালেক রাতে দাওয়াত খেতে গেলে মীর আহমদ, তার ভাই বাহাদুর, মীর আহমদের ছেলে রাশেদ, আরফাত ও এরশাদসহ আরো কয়েকজন মিলে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর পর কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রাখে। এসময় আবুল কাশেম নামের স্থানীয় এক যুবকের মাধ্যমে খবর পেয়ে মালেক মাঝির ভাই আব্দু খালেক মাঝি ও মোহাম্মদ ফারুকসহ বাড়ির লোকজন ও পেকুয়া থানার পুলিশসহ ওই বাড়ি থেকে মালেককে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বড় ভাই আব্দু খালেক জানান, গত রাতে (সোমবার) আমার ভাইকে মীর আহমেদের ছেলে রাশেদকে পরিকল্পিতভাবে দাওয়াত খাওয়ানোর কথা বলে ফোন করে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর পর কুপিয়ে মারাত্ম জখম করে তারা।
তিনি আরো বলেন, গেল ইউপি নির্বাচনে মেম্বার (সাধারণ সদস্য) পদে নির্বাচন করেছিল আমার ভাই। নির্বাচনে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে আমার ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নির্দেশে সুকৌশলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
নিহতের ভাই ফারুক বলেন, নির্বাচনের ইস্যুকে কেন্দ্র করে আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই। গত ইউপি নির্বাচনে আমার ভাই মেম্বার পদে প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু কিছু ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে আমার ভাইকে হারিয়ে দেয়। তখন থেকে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কিছু প্রভাবশালী ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী একই ইউপির খলিফামুরা এলাকার মৃত বজল আহমদের পুত্র আবুল কাশেম বলেন, আমার এক বন্ধু আমাকে ফোন করে ঘটনাটি সম্পর্কে জানালে তৎক্ষণাৎ আব্দু মালেকের ভাই আব্দু খালেককে অবহিত করি। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে মালেককে মীর আহমেদের বাড়ি থেকে রশি দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন লোকজন ও নিহতের কাছ থেকে বক্তব্য নেন। আমার অনুরোধ নিরপরাধ কোন মানুষ যাতে মামলার আসামি না হয়।
এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার বলেন, হত্যার ঘটনা সম্পর্কে শুনেছি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।