
সরকার পতনের এক দফা দাবীতে চট্টগ্রামে বিএনপির পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৯ জুলাই) নগরীতে স্বরণকালে বৃহৎ এই পদযাত্রায় অংশ নিয়েছে হাজার হাজার নেতাকমী।
নগরীর কাজীর দেউড়িস্থ নূর আহমদ সড়ক থেকে বেলা পৌনে ৪টায় শুরু হয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করে দেওয়ান হাট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস ট্রাক ও নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে নেতাকমী ব্যানার পেষ্টুন নিয়ে শ্লোগান দিয়ে মিছিল সহকারে নূর আহমদ সড়কে জড়ো হয়।
বেলা ৩টা থেকে সেখানেই মহানগর ও উত্তর দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিএনপির একদফা শেখ হাসিনার বিদায়ের ডাক বলে মন্তব্য করে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করতেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ও ডিসির পোস্টিং দিচ্ছে। আজকে টিএনওর পোস্টিং হচ্ছে। কেন হচ্ছে? আবার ভোট চুরি করতে। জনগণের ভোটের অধিকার হনন করতে। যাদের পোস্টিং করা হচ্ছে, তারা তাদের দলীয় মানুষ। ভুলে যান। বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের আর ভোট চুরি করতে দেবে না।
তিনি বলেন-আজকের এই পদযাত্রায় সরকার পতনের ম্যাসেজ দিয়েছে জনগণ। ফ্যাসিস্ট সরকারকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দিয়ে পতন করতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের উপর হামলা করেছে। আমাদের শান্তি-শৃঙ্খলভাবে আন্দোলন করতে হবে। সহিংসতা যারা করে তাদের সঙ্গে জনগণ নেই৷ আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, গণতন্ত্রকামী মানুষ, বিশ্বের বিভিন্ন সরকার ও ব্যক্তিকে সমর্থন দিচ্ছেন।
সবাই সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন দেখতে চাই জানিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে হবে। ভোট চুরির করার জন্য পুলিশ, ডিসি ও ইউএনও পোস্টিং করার হচ্ছে। যাদের পোস্টিং করার হচ্ছে, তারা তাদের দলীয় মানুষ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গণতান্ত্রিক বিশ্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে প্রত্যেক নাগরিক ভোট প্রদানের মাধ্যমে তাদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করবে, তাদের সরকার নির্বাচিত করবে। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। কিছু কিছু বিদেশির আনাগোণা আপনারা দেখেছেন। তারা কেন বাংলাদেশে এসেছে, তারা কি ভারতে গেছে, শ্রীলঙ্কায় গেছে ? না, তারা শুধু বাংলাদেশে এসেছে ভোট চোরদের আস্তানা ভেঙ্গে দেয়ার জন্য। তারা বলেছে, তারা বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ, অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন দেখতে যায়, তারা বাংলাদেশে মানবাধিকার দেখতে চায়, তারা বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দেখতে চায়।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর পরিচালানায় অনুষ্ঠিত সমাবেশ আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মীর নাসির উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।
সভা শেষে অনুষ্ঠিত পদযাত্রা নূর আহমদ সড়ক থেকে শুরু হয়ে লাভ লেইন, এনায়েত বাজার, জুবলী রোড, আমতল, রিয়াজুদ্দিন বাজার নিউ মার্কেট, স্টেশন রোড়, কদমতলী হয়ে দেওয়ানহাট গিয়ে পদযাত্রা শেষ হয়।