
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে টানা বৃষ্টিপাতে চট্টগ্রাম নগরীর লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) থেকে টানা চারদিন ধরে নগরীতে কখনো থেমে থেমে আবার কখনো ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে নগরীর বেশিরভাগ নিচু এলাকা এখনো পানির নিচে। জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। অনেক এলাকায় ডুবে গেছে রান্নার চুলাও। সড়ক ও অলিগলি হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে আসবাব, জ্বলছে না রান্নার চুলা। এতে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো বেশি কষ্টে আছেন। সরকারিভাবে কোনো খাবার সহযোগিতা পায়নি বলে তাদের অভিযোগ।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। নিম্নচাপের কারণে এ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী ৯ আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
নগরীর বাকলিয়া থানার ডিসি রোডের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে আছি। বাসাবাড়ি থেকে রাস্তা অনেকটা উঁচু করে নির্মাণ করায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। পানি জমে এখন বাসার ভেতরেও ঢুকে পড়েছে। টানা চারদিন ধরে যে বৃষ্টি হচ্ছে তা থামার কোনো লক্ষণ নেই। এতে আমাদের আমাদের ভোগান্তি আরও বাড়ছে।
একই চিত্র দেখা যায় নগরীর বাকলিয়া, হালিশহর, চকবাজার, দেওয়ানবাজার, মুরাদপুর, ষোলশহর, বহদ্দারহাট, বিবিরহাট ফিরিঙ্গিবাজার, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, রিয়াজুদ্দিন বাজার, মুরাদপুর, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ বিভিন্ন নিচু এলাকায়। এসব এলাকা হাঁটু থেকে কোমর সমান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় টানা চারদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে অনেকেই পড়েছেন। অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনের বাসায়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নির্মাণ করছে। নগরীর খালগুলো থেকে সাড়ে ৯ লাখ কিউবিক মিটার মাটি তোলার কথা তাদের। কিন্তু ৫ বছরে তারা কিছুই করেনি। এতে ভারী বর্ষণের কারণে জমে যাওয়া অতিরিক্ত পানি ধারণ করতে পারছে না৷ এছাড়া পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করেন। কিন্তু কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষ নালা-নর্দমায় পলিথিন ও প্লাস্টিকের আবর্জনা ফেলে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।