
কয়েকদিন টানা চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো গেল না সেই আলোচিত বানরকে। আজ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে বানরটি মারা যায় বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) চিকিৎসকরা।
খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হয়েছিল আলোচিত বানরটি। সে নিজেই সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেসে গিয়ে পরপর ৩দিন চিকিৎসা নেয়। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে ব্যাক আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে তার অবস্থা আরও খারাপ হলে চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) বানরটির চিকিৎসা চলছিল।

চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য্য জানান, চেষ্টা করেও আহত বানরটিকে বাঁচানো গেল না। আজ দুপুরে মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দুই দিন বানরটির অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল। খাওয়া দাওয়া করছিল, রেসপন্সও ভাল ছিল। কিন্তু গতকাল বিকাল থেকে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। যাই খাওয়ানো হচ্ছিল বমি করছিল। বিকাল ৫টার দিকে তাকে আবার সিভাসুতে পাঠানো হয়। ডাক্তাররা দুটি স্যালাইন পুশ করেন। আর মুখে খাওয়ানোর জন্য লিকুইড খাবার দেন। কিন্তু খুব একটা উন্নতি হয়নি। আজ দুপুরের দিকে মারা গেছে। আমাদের অফিস এলাকায় কোথাও মাটিচাপা দেওয়া হবে বানরটিকে।’
জানা যায়, খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে কোনোভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত হয় বানরটি। গত সোমবার বানরটিকে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে শনিবার থেকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এটির চিকিৎসা চলছিল। আহত অবস্থায় বানরটি নিজেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে যায় বলে জানায় সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ।
তিনি বলেন, গত শনিবার বানরটি আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে ঘুরতে থাকলে চিকিৎসা দেই। চিকিৎসা শেষে বাগানে চলে যায়। পরদিন রবিবার বিকালে আবারও আসে। তখন এর ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করে ওষুধ দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেই। এ সময় চুপচাপ বসে ছিল। চিকিৎসা শেষে বানরটি বাগানে ফিরে যায়। সোমবার সকালে বানরটি আবারও হাসপাতালে আসে। চিকিৎসকরা বানরটির পূর্বের ব্যান্ডেজ খুলে পুনরায় ড্রেসিং করে দেয়।’
একটি বানর প্রতিদিন হাসপাতালে আসার এই খবর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বারবার বন বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়কে জানালে তারা এসে বানরটি উদ্ধার করে। পরে বানরটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল।