
দলীয় নেতাকর্মীর বিশাল বহর নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়ায় আচরন বিধি লংঘন হয়েছে কিনা প্রশ্ন করায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ঊপর হামলা করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা, ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও তার অনুসারীরা। এসময় এক টেলিভিশন সাংবাদিকের জামার কলার টেনে ধরে তাকে ঘুষি মারেন এমপি নিজেই।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই হামলা চালায় বলে হামলার শিকার সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসককে অভিযোগ দিয়েছেন।
হামলার শিকার রাকিব উদ্দিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের চট্টগ্রাম ব্যুরোতে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘ওনি (এমপি) আমাদের সামনেই দলবল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। জমা দিয়ে ডিসির কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী ৫ জনের অধিক লোক নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যেতে পারবেন না। তাই ব্রিফিংয়ের শুরুতে এই বিষয়ে প্রশ্ন করায় ওনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার দিকে তেড়ে আসেন। আমাকে মরধর করে নিচে ফেলে দেন। ওনার সমর্থকরাও আমাকে মারধর করে, ক্যামেরা ভাংচুর ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন ও মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে আছড়ে ফেলে দেয়।’ তারা মাছরাঙা ও দেশ টেলিভিশনের মাইক্রোফোন ও ট্রাইপড ভেঙ্গে ফেলেন। এ সময় দুই সাংবাদিক আহত হন।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে সাংবাদিকরা মৌখিক অভিযোগ দিলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়। এ সময় তিনি ভুক্তভোগী সাংবাদিককে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিবেদক রাকিব উদ্দিনসহ সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করার ঘটনায় চট্টগ্রাম-১৬ আসনের আ.লীগ প্রার্থী মোস্তাফিজকে শোকজ করেছে কমিশন গঠিত নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি (চট্টগ্রাম-১৬)
কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, রিয়াজ হায়দার চৌধুরী এই ঘটনা খুবই নিন্দনীয়। এই সাংসদ আগেও সাংবাদিকদের হুমকি ও হামলা করেছে। দলের সাধারণ সম্পাদক নিয়েও বাজে মন্তব্য করে ভাইরাল হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
উল্লেখ্য, নির্বাচনি আচরণ বিধিমালায় কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় মিছিল বা কোনো প্রকার শোডাউন করতে পারবেন না। একইসাথে পাঁচজনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না বলেও উল্লেখ আছে।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।