আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ার জলদস্যূদের আস্তানায় ১৯ দিন ধরে জিম্মিজীবন কাটাচ্ছে ২৩ বাংলাদেশীসহ দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজ এম আব্দুল্লাহ। এনিয়ে ২৩ নাবিক পরিবার জাহাজ মালিক সংশ্লিষ্ট ও দেশবাসীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়লেও তাদের মুক্তির বিষয়ে এখনো তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। জাহাজ মালিক পক্ষ এবং সরকারের পক্ষ থেকে জোর প্রচেষ্টা চালানো হলেও ঈদের আগে তারা মুক্তি পাচ্ছে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ফলে বন্দিদের পরিবারগুলোতে উদ্বেগ আতঙ্ক বাড়ছে।
এমভি আব্দুল্লাহর মালিক পক্ষ জানায়ম, জিম্মিদের মুক্ত করতে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে মুক্তি পেতে সময় লাগবে। ঈদুল ফিতরের আগে সম্ভবনা কম বলে জানায় মালিক পক্ষ। তবে সৌভাগ্যক্রমে ঈদের আগে মুক্তি পেলেও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নাবিকদের দেশে আনতে অন্তত একমাস সময় লাগতে পারে। এ পরিস্থিতিতে হয়তো এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করা হবে না ২৩ নাবিকের।
ঈদের আগে নাবিকদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে কোন কোন মিডিয়ায় খবর বের হলেও তা সঠিক নয় বলে জানান জিম্মি জাহাজ মালিক কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং কর্তৃপক্ষ।
শনিবার দুপুরে কেএসআরএম মিডিয়া এডভাইজার মিজানুর ইসলাম বলেন, ঈদের আগে বন্দিদের মুক্ত করতে আমাদের জোর প্রচেষ্টা চলছে। দস্যুদের প্রতিনিধির সাথে আমাদের প্রতিদিনই কথা হচ্ছে। আলোচনার অগ্রগতি হচ্ছে। তবে ঈদের আগে মুক্ত হবে কি হবে না তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞাতায় বলতে পারি ঈদের আগে বন্দিরা মুক্তি পেলেও তারা ঈদের আগে দেশে ফিরতে পারবেন না। কারণ দেশে ফিরিয়ে আনার বেশ কিছু কাজ রয়েছে। সে কাজ সম্পন্ন করে দেশে ফিরতে তাদের ২৫/৩০ দিন সময় লাগবে। তবে প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ঈদের আগে নাবিকদের মুক্ত করা কঠিন।
এদিকে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে জিম্মি থাকা জাহাজ আবদুল্লাহতে মজুদ খাবার পানি ফুরিয়ে আসছে বলে জানা গেছে। জিম্মি হওয়ার আগে ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি মজুদ ছিল জাহাজে। এখন নাবিকদের রেশনিং করে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
মালিকপক্ষ সূত্রে জানাগেছে,এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে নাবিকদের জন্য প্রায় ২৫ দিনের হিমায়িত খাবার মজুদ ছিল। তবে শুকনো খাবার অনেক দিনের জন্য মজুদ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাইয়ে যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে জলদস্যুদের কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করা আছে। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনো বাংলাদেশি জাহাজ জলদস্যুদের অপহরণের শিকার হলো। এর আগে ২০১০ সালে একই কোম্পানির এমভি জাহান মণি জাহাজটি সোমালিয়ার জলসদ্যুরা ছিনতাই করেছিল। ওই সময় জাহাজে ২৫ ক্রু এবং ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ মোট ২৬ ব্যক্তি ছিলেন। মুক্তিপণ দিয়ে ১০০ দিন পর জাহাজসহ তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।
