
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের প্রায় দেড় কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীরা।
মঙ্গলবার (২এপ্রিল) দিবাগত রাত ৮টার দিকে তারাবি নামাজ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র লুট এবং ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে মসজিদ থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার হাতিমাথা পাড়া এলাকা দিয়ে মোটরসাইকেলে করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফন্টের (কেএনএফ) একটি দল ব্যাংকে এবং অপর একটি দল বিচ্ছিন্নভাবে মসজিদ ও উপজেলা অফিসার কোয়ার্টারে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা ব্যাংকের ভোল্ট ভেঙে নগদ টাকা লুট করেন। দেড় থেকে দুই কোটি টাকা লুট হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ব্যাংকের সাথে সংশ্লিষ্টরা।

নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতক্ষ্যদর্শী আরও জানান, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত পুলিশের ১০টি ও আনসার সদস্যদের ৪টিসহ ১৪টির মতো অস্ত্র লুট করে এবং তারাবির নামাজ চলাকালে মসজিদ থেকে রুমা উপজেলা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এছাড়াও সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের সামনে অফিসার্স কোয়ার্টারে প্রবেশ করে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মো. সাইফুল ইসলামকে জিম্মি করে বিভিন্ন কাজের রক্ষিত টাকাও নিয়ে যায়।
রুমা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনের সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের টাকা ও নিরাপত্তাকর্মীদের অস্ত্র লুট করে নিয়ে গেছে। এ সময় তারা ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করেছে। আমি ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সোনালী ব্যাংক বান্দরবান জেলা ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রাজন কান্তি দাশ বলেন, ঘটনা জানতে পেরেছি। ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করতে পারিনি।

তিনি জানান, মঙ্গলবার চাকরিজীবীদের ঈদের বেতন ও বোনাস ব্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে সোনালী ব্যাংকে হানা দেয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল। এ সময় ব্যাংকে থাকা নগদ টাকাসহ ১৪টি অস্ত্র ও ব্যাংকের ম্যানেজার মো. নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। তবে ব্যাংক থেকে কত টাকা নিয়ে গেছে তা জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে দেড় থেকে ২ কোটি টাকা সন্ত্রাসীরা লুট করে নিয়ে গেছে।
বান্দরবান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী বলেন, ব্যাংকের টাকা লুট, অস্ত্র ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক চলছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানাব।