
নাশকতা নয়, গ্যাসের চুলা থেকে গ্যাস জমে বিস্ফোরণ ঘটেছিল নগরীর দেওয়ান বাজার মাদ্রাসা ভবনে। আর এতে করে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় জান মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ টিমের প্রাথমিক তদন্ত প্রকাশকালে একথা জানানো হয়।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারী) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যেগে অনুষ্ঠিত হয়েছে অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন” বিষয়ক সভায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ঘটিত তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করেন ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ টিমের সদস্যরা।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অগ্নিকান্ড পূর্ববর্তী সারারাত গ্যাসের চুলার সুইচ খোলা থাকায় রান্নাঘরে গ্যাস জমে যায় এবং ভোররাতে অগ্নিকান্ডের উৎসে বসবাসকারী কেউ রান্নাঘরে প্রবেশ করে দিয়াশলাই কাঠি জ্বালালে কক্ষে জমে থাকা গ্যাস থেকে আগুন লাগে। এরপর তিনি কক্ষ থেকে বের হওয়ার জন্য দরজা খুললে বায়ুশূন্য ঘরে একত্রে প্রচুর বাতাস প্রবেশ করে এবং ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে, যাকে “ব্যাকড্রাফট” বলে।
উল্লেখ্য- গত ২৭ জানুয়ারী মহানগরীর বাকলিয়া থানার দেওয়ানবাজার এলাকায় মাদ্রাসার মালিকানাধীন একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনার পর আগুন লেগে যায়।। ভোর পাঁচটার দিকে এই ঘটনার পর ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। এবং ৩ জন অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে আহত হয়। তাদের মধ্যে এক কিশোরী ও এক বৃদ্ধা মারা যান পর দিন।
এদিকে সোমবার অনুষ্ঠিত সভায় সম্প্রতি সময়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় আশংকাজনক হারে অগ্নিকান্ডজনিত দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এ লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াসে সভার আয়োজন করা হয়।
জেলার প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে “ অনুষ্ঠিত এই সভায় বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট সরকারী দপ্তর, সিটি কর্পোরেশনারের কাউন্সিলরগন, ক্যাবের প্রতিনিধি সহ নানা পর্যায়ের সরকারী বেসরকারী প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, নগরীর অনেক স্থানেই রাস্তা চিকন গলি হওয়ায় পানিবাহী গাড়ি দুর্ঘটনাস্থলে পোঁছতে পারে না। ফলে অগ্নি নির্বাপণ কর্মকান্ড বিঘ্নিত হয়।
এছাড়া ভবন গুলোর আশেপাশের জরাজীর্ণ বৈদ্যুতিক তার ও ক্যাবল টিভির তার অগ্নি নির্বাপণ ব্যাহত করে। এসব প্রতিকারের উদ্দেশ্যে নানা পন্থার ব্যাপারে আলোচনা করা হয়।
কৌশলগত স্থানে ওয়াসার হাইড্রেন্ট স্থাপন, স্কুল-কলেজ সমূহে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ প্রদান, পুকুর ভরাট বন্ধ করণ সহ নানা ব্যাপার তুলে ধরা হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিন বলেন প্রয়োজন হলে অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন, ২০০৩ আনুসারে অপর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপণ সরঞ্জাম থাকলে কারখানা, গার্মেন্টস ও মার্কেটগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।