ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

রেমিট্যান্স ব্লকেডের চাপ

রেমিট্যান্স শাটডাউনের চাপ সামলাতে বেশি দরে ডলার কেনার নির্দেশ ব্যাংকগুলোকে

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

দেশে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ডলার সংকট। পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে ধীরে ধীরে আরও অবনতি হচ্ছে। এরই মধ্যে যোগ হয়েছে প্রবাসীদের মধ্যে ‘রেমিটেন্স শাটডাউন’ এর ব্যাপক প্রচারণা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচার গুলিতে কয়েকশত নিরীহ মানুষের মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশে রেমিটেন্স না পাঠানোর প্রচারণা শুরু হয়েছে। এতে সরকারের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে দেশে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহে ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার ঘটনা এই আতঙ্ককে বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতির সম্ভাব্য ভয়াবহতা টের পেয়েছে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকও। এরই মধ্যে ক্ষতি এড়ানোর উপায় ভাবতে শুরু করেছে তারা। প্রথম পর্যায়ে দেশের সব ব্যাংকে বর্তমানের চেয়ে কিছুটা বেশি দামে প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার কেনার নির্দেশ দিয়েছে।

জানা গেছে, রোববার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকর পক্ষ থেকে কয়েকটি ব্যাংককে মৌখিকভাবে বেশি দরে রেমিট্যান্সের ডলার কেনার এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী করা তোলা।

সূত্র মতে, বেশি রেমিট্যান্স আহরণ করে এমন ১২টির মতো বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) এ নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘ক্রলিং পেগ’ চালুর পর ব্যাংকগুলোতে ডলার রেট সর্বোচ্চ ১১৮ টাকা হলেও রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মৌখিক নির্দেশের পর বেশ কয়েকটি ব্যাংক রেমিট্যান্স কেনার রেট ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১৮ টাকা ৭০ পয়সা অফার করছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও বহিরাগতদের তাণ্ডবে দেশের মানুষের মতো প্রবাসীদের বড় অংশ বেশ ক্ষুব্ধ। গণমাধ্যমের ভাষ্য অনুসারে, এই আন্দোলনে গুলিতে কমপক্ষ্যে ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যদিও সরকারের দাবি ১৪৭ জন। পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে কয়েকহাজার মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের অনেকের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে, কারো পা কেটে ফেলতে হয়েছে। অনেককেই হয়তো সারাজীবন শরীরের মধ্যে বুলেট নিয়ে কাটাতে হবে। সংবাদপত্র, ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও করুণ মৃত্যুর ছবি দেখে স্বজন হারানোর বেদনা অনুভব করছেন প্রবাসীরা। তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাদের এই ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলন দমানোর কৌশল হিসেবে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত। এতে প্রবাসীরা গতকাল রোববারের আগে পর্যন্ত প্রায় ১০ দিন দেশে থাকা তাদের স্বজনদের সাথে ঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারেননি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রবাসীদের নানা পোস্ট এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে অনেকেই বলছেন, আমাদের টাকায় দেশ চলে। আর সেই আমাদেরকেই মায়ের সাথে কথা বলা, সন্তানের মুখ দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। দেশে যখন চরম অস্থিরতা তখন দেশে থাকা স্বজনদের নিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে অনেক বেশী উদ্বেগ ছিল। হাজার হাজার মাইল দূরে বসে তারা উদ্বেগে-অস্থিরতায় ছটফট করেছেন, কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সময়টিতে তারা প্রিয়জনের সাথে ঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারেননি। তাদের এই ক্ষোভ, হতাশা ও আতঙ্ককে ঘিরেই রেমিটেন্স শাটডাউন তথা দেশে রেমিটেন্স না পাঠানোর প্রচারণা শুরু হয়েছে। ক্রমেই এর তীব্রতা বাড়ছে।

রেমিটেন্স শাটডাউন প্রচারণার একেবারে শুরুর দিকেই দেশে কাকতালীয়ভাবে রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ১৯ থেকে ২৪ জুলাই দেশে রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ১৮ জুলাই পর্যন্ত এসেছিল ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। যেখানে এর আগের মাসে এসেছিলো ২৫৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। অর্থাৎ চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।

যদিও আলোচিত সপ্তাহে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে দেশে ৩ তিন ব্যাংক বন্ধ ছিল, আর দুদিন ব্যাংকিং হয়েছে সীমিত পরিসরে। এসব কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ কমে দিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে এবং প্রকৃত অবস্থা জানতে চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন অনেক ব্যাংকার। তবে তাতেও আতঙ্ক কাটছে না। কারণ এর আগে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বানে ব্যাপক প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। এ ক্যাম্পেইনে দেশটি থেকে পণ্য আমদানি অনেক কমে গেছে। তাই রেমিটেন্স শাটডাউন ক্যাম্পেইন জোরেশোরে চলতে থাকলে এর নেতিবাচক প্রভাব এড়ানো মুশকিল হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণেই রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক বাড়তি দামে ডলার কেনার নির্দেশ দিয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে গত ৮ মে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালুর পর ডলারের দর এক লাফে ৭ টাকা বেড়ে ১১৭ টাকা হয়। দুই মাসের বেশি সময় ধরে ডলারের দর ১১৭ থেকে ১১৮ টাকায় স্থিতিশীল আছে। দাম বাড়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে। কিন্তু রেমিট্যান্স কমতে থাকে গত সপ্তাহে। কোটা সংস্কার ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে গত সপ্তাহের ছয় দিনে অন্য সময়ের এক দিনের সমান রেমিট্যান্সও আসেনি।

দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সংঘাত-সংঘর্ষে হতাহত ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৈধপথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর প্রচারণা করছেন বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলমান গুজব ও অপপ্রচার বিশ্বাস না করে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তবে তার এই অনুরোধকে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করে হাজার হাজার ভিডিও পোস্ট করেছেন প্রবাসীরা। আর তাতেই ধারণা করা যাচ্ছে, তারা কতটা ক্ষুব্ধ।

গত ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সংঘর্ষ পরবর্তীতে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতায় এ পর্যন্ত সরকারি হিসাবে ১৪৭ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। তবে কয়েকটি গণমাধ্যমে মৃত্যুর সংখ্যা দুই শতাধিক বলা হচ্ছে।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print