ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

‘অসৎ উদ্দেশ্যে গণহত্যার মামলা’, শেখ হাসিনা ইস্যুতে মোড় পাল্টে দিতে পারে ভারত

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে পালিয়ে যান তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকেই প্রতিবেশী দেশটিতে অবস্থান করছেন তিনি। এদিকে, তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।

গত ৮ আগস্ট শপথ নেয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও বলেছেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আদালত থেকে নির্দেশনা পেলে তাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে অন্তর্বর্তী সরকার যদি তার প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করে; ভারত কি তা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে? এ ব্যাপারে ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তি কী বলে?

প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে ২০১৩ সালে প্রত্যর্পণ চুক্তি প্রথমবারের মতো সই হয়। ২০১৬ সালে তা সংশোধন হয়। চুক্তিটি ছিল দুই দেশের অভিন্ন সীমান্তে বিদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদের সমস্যা মোকাবিলার লক্ষ্যে একটি কৌশলগত ব্যবস্থা। চুক্তির প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল পলাতক ও অপরাধীদের প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়াকে সুগম করা। বিশেষ করে যারা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ কার্যকলাপে জড়িত, তাদের।

বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় বিদ্রোহীদের আশ্রয় গ্রহণ এবং ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে বাংলাদেশি বিদ্রোহীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করার এক অভিন্ন উদ্বেগ থেকে চুক্তিটি করা হয়।

চুক্তিতে কিছু ধারা রয়েছে যাতে বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয় কিংবা এমন কোনো অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয় এবং কমপক্ষে এক বছর কারাদণ্ড হয় তাহলে উভয় দেশই ওই ব্যক্তিকে ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে।

চুক্তির দ্বৈত অপরাধের নীতির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হলো যে অপরাধের জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ করা হয়েছে তা অবশ্যই উভয় দেশে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত হতে হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, বলপূর্বক গুম ও গণহত্যাসহ একাধিক স্তরের গুরুতর অভিযোগে মামলা হয়েছে। রাজনৈতিক মর্যাদা এবং অভিযোগের প্রকৃতি বিবেচনা করে ভারতে আশ্রয় চাওয়া তার জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

এরপর ২০১৬ সালের সংশোধনীর কারণে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। সংশোধিত চুক্তি ফলে প্রত্যর্পণের শর্ত আরও সহজ হয়। এর ফলে আগে তথ্যপ্রমাণ পেশের প্রয়োজনীয়তা ছিল; তা দূর হয় এবং শুধুমাত্র অনুরোধকারী দেশের একটি উপযুক্ত আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রয়োজন হয়।

প্রত্যার্পণ চুক্তির আলোকে যদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ করে, তাহলে চুক্তির আওতায় ভারত তাকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ করতে আইনত বাধ্য।

তবে প্রত্যার্পণ চুক্তির ৬ নম্বর ধারায় উল্লেখ আছে, যদি কোনো দেশ মনে করে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছে তাহলে তাকে প্রত্যর্পণে অস্বীকৃতি জানানো যাবে। কিন্তু এই ধারাতেই আবার বিশেষভাবে উল্লেখ আছে, হত্যা, সন্ত্রাসবাদ ও অপহরণের মতো অপরাধগুলো রাজনৈতিক অভিযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলোর সবই হত্যা, অপহরণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা হয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো বিবেচনা করলে দেখা যাচ্ছে, ধারা ৬ অনুযায়ী ভারত তাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবে না।

প্রত্যর্পণে অস্বীকৃতি জানানোর আরেকটি ভিত্তি হতে পারে ধারা ৮। এতে বলা আছে, যদি ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয় তাহলে তাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানানো যাবে। ভারত এই ধারাটি ব্যবহার করতে পারে। তারা দাবি করতে পারে হাসিনার বিরুদ্ধে সঠিক বিচার করার ‘সৎ উদ্দেশ্যে’ মামলা করা হয়নি।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার যেহেতু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল সে কারণে নয়াদিল্লি এই ধারা ব্যবহারে সমর্থন পেতে পারে। তবে বাংলাদেশ সরকার তাকে ফেরত চাওয়ার পরও যদি ফেরত না দেয়া হয়, তাহলে এটি ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক বৈরিতার পর্যায়ে নিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক পর্যালোচনামূলক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধে এমন সব উঠে এসেছে।

সর্বশেষ

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মোনালিসা গ্রেফতার

করের আওতায় আসছেন গ্রামাঞ্চলের ব্যবসায়ী-চিকিৎসক-আইনজীবীরা

মৃত আত্নীয়কে দেখে বাড়ী ফেরা হলোনা স্বামী-স্ত্রী

কোস্টগার্ডের আধুনিকীকরণে সব ব্যবস্থা নিয়েছে সরকারঃ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

উন্মোচন করা হলো টাইগারদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জার্সি

ঈদে নতুন নোট কবে থেকে পাওয়া যাবে, মিলবে ব্যাংকের যেসব শাখায়

তৌহিদ হোসেন-জয়শঙ্কর বৈঠক ⦿বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে উদ্বেগ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print