দেশে জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে একাত্তর সালে স্বাধীনতাযুদ্ধ আর হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে চব্বিশ সালের দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ—সব ক্ষেত্রেই গণতন্ত্রকামী জনগণ বিজয়ী হয়েছে। সুতরাং হাজার হাজার আহত মানুষের আর্তচিৎকার, লাখো শহীদের রক্তস্নাত জমিনে আমাদের মধ্যে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, যেকোনো মূল্যে আমাদের সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা গেলে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করে আর কেউ আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে সক্ষম হবে না।
জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়কে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের একটাই বার্তা—বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী কিংবা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী, এই বাংলাদেশ আপনার-আমার, আমাদের সবার। তথাকথিত সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু নয়, এই জাতিরাষ্ট্রে আমাদের একটাই পরিচয়, আমরা সবাই বাংলাদেশি।
তিনি আরো বলেন, ‘এই বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আপনার যতটুকু অধিকার, আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার। আমাদের সবার কাছে সবার আগে বাংলাদেশের স্বার্থই হবে সবচেয়ে বড়। রাষ্ট্র-রাজনীতি, শাসন-প্রশাসন পরিচালনায় আমরা গুরুত্ব দেব মেরিটোক্রেসিকে। এ দেশের সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে—এটাই বিএনপির রাজনীতি।
সবাইকে নিজেদের অধিকার আদায় এবং দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
‘গুজবে কান দেবেন না’
১৫ বছরে মাফিয়া সরকারের শাসনামলে হিন্দুসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর অন্যায়-অত্যাচারের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে যাতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ ধর্মীয় রীতিনীতি নিশ্চিন্তে নিরাপদে উদযাপন করতে পারেন, তেমন একটা রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণের জন্যই বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ। সবার উদ্দেশে আমাদের বার্তা একটাই—ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার।’
তারেক রহমান আরো বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচারের পৃষ্ঠপোষক এবং তাদের দোসরদের কোনো উসকানিতে দয়া করে পা দেবেন না; কোনো গুজব-গুঞ্জনে দয়া করে কান দেবেন না।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, আফরোজা খানম রীতা, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম জামাল, জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, অপর্ণা রায় দাস, সুশীল বড়ুয়া, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, তরুণ দে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব প্রমুখ বত্তৃদ্ধতা করেন।