চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) এক আবাসিক শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সৌম্য দাস নামের এক শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত সৌম্য দাস কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা হলের প্রভোস্ট ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে অনুষ্ঠিত স্টুডেন্টস ডিসিপ্লিন কমিটির ২৯৬তম (জরুরি) সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই দিনে স্টুডেন্টস ডিসিপ্লিন কমিটি ও ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের সদস্য সচিব স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, সৌম্য দাস মুক্তিযোদ্ধা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত ও আপত্তিকর ভিডিও গোপনে ধারণ করেন এবং অনলাইনে বিভিন্ন প্রাপ্তবয়স্কগ্রুপের সঙ্গে যুক্ত থেকে সেখানে প্রশাসকের (অ্যাডমিন) ভূমিকা পালন করেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধি ১৫ ও ১৬ এর পরিপন্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির প্রচেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিটি।
সবদিক বিবেচনা করে ডিসিপ্লিন কমিটি তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে (হল ও একাডেমিক কার্যক্রমসহ) পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। একই সঙ্গে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে—কেন তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, যেমন স্থায়ী বহিষ্কার, গ্রহণ করা হবে না, সে বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৯ নভেম্বর বিকাল ৪টার মধ্যে স্বহস্তে লিখিত জবাব জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, সৌম্য দাস চাইলে আগামী ১০ নভেম্বর বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিতব্য স্টুডেন্টস ডিসিপ্লিন কমিটির সভায় ব্যক্তিগত শুনানিতে উপস্থিত হয়ে নিজের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাবেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বহিষ্কারের আদেশ বহাল থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বহিষ্কারের আদেশনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি বোর্ডে প্রচার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীর হাতে কপি না পৌঁছালেও তাকে এ আদেশ সম্পর্কে অবহিত বলে গণ্য করা হবে।
এদিকে, ভিডিও ধারণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২২ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। স্বাধীনতা চত্বর থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। সমাবেশে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহদী রব্বানী প্রশাসনের নিকট তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
দাবিগুলো হলো-১. অভিযুক্তের মোবাইল ফোনের ফরেনসিক পরীক্ষা করা, ২. তার ছাত্রত্ব বাতিল করে আজীবন বহিষ্কার করা ও ৩. চুয়েট প্রশাসন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে চুয়েট প্রশাসন জরুরি সভা ডেকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
সুত্র : ইত্তেফাক অনলাইন।
