
চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম ছাত্রীর উপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে স্কুলের পিয়ন। এ ঘটনায় পিয়ন নয়ন মজুমদার (২২) কে সান্সপেন্ড করা হলেও ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়ে উঠেছে একটি প্রভাবশালী মহল।
পৌরসভার শশাংকমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী যৌন নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
প্রথমে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালী মহল তৎপর হলেও ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় নড়ে চড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবরে দেয়া এক লিখিত অভিযোগে ছাত্রীর বাবা (একটি ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধি) জানায়, গত ১২ মার্চ রবিবার সকালে বৃষ্টি হওয়ায় ভিকটিম ছাত্রীটি ছাতা নিয়ে স্কুলে যায়। স্কুল ছুটির পর সে ছাতা ফেলে আসায় স্কুলের অনতিদূরে বাসা থেকে আবারো স্কুলের পথে রওয়ানা হয়। তখন স্কুল থেকে সর্বশেষ একজন শিক্ষক বেরিয়ে আসছিলেন। তিনি ছাত্রীটিকে দেখে কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞেস করলে ছাত্রীটি ছাতা ফেলে আসার কথা জানায়। তখন শিক্ষক ছাত্রীটিকে বলেন-স্কুলে কোন ছাত্র-শিক্ষক নেই, সবাই চলে গেছে, তুমি পিয়ন থেকে ছাতাটি নিয়ে এসো।
ছাত্রীটি স্কুল রুমে প্রবেশের সাথে সাথে পিয়ন নয়ন মজুমদার (২২) পিতা-মৃত দিলীপ মজুমদার ছাতা দেয়ার কথা বলে ছাত্রীটিকে নিজের থাকার ঘরে নিয়ে যৌন নিপীড়ন চালায় গায়ে হাত দিয়ে মোবাইলে ছবি তোলে।
এদিকে মেয়ে স্কুলে গিয়ে ফিরতে দেরী হওয়াতে তার মা গিয়ে স্কুল বন্ধ এবং কাউকে না পেয়ে ফিরে যায়। পরে ছাত্রীটির বাবা পুনরায় স্কুলে গেলে দেখ তার মেয়ে একটি অন্ধকার রুম থেকে বেরিয়ে আসছে।
তার বাবা জানায় মেয়েকে ভয় লাগোনার কারণে প্রথমে সে আমাদেরকে এ ঘটনা বলেনি। আমার সন্দেহ হওয়ায় তার মারধর করি। পরে আবার আদর করে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে পিয়ন নয়ন মজুমদার তার সাথে খারাপ আচরণ করে ছবি তুলেছে বলে জানায়।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষকা চাঁন্দ সুলতানা ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা চালায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানতে পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে পিয়নকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আলম মামুন পাঠক ডট নিউজকে জানান, যৌন নির্যাতনের মত কিছু ঘটেছে বলে আমার জানানেই। ছাত্রীটির সাথে খারাপ আচরণ করেছে শুনেছি। তবে মেয়ের বাবার অভিযোগ পাওয়ার পর ঐ কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পটিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোতাহের বিল্লাহ পাঠক ডট নিউজকে জানান, একটি স্কুল ছাত্রীর উপর স্কুলের পিয়ন যৌন নির্যাতন করেছে মর্মে মেয়েটির অভিভাবকরা অভিযোগ দেয়ার পর আমরা বিষয়টি তদন্ত করতে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি। কমিটি তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়ার পর ঐ কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ইউএনও স্যারে নির্দেশে ঐ পিয়নকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কেউ এ ঘটনা চাপা দিতে পারবে না।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা চাঁন্দ সুলতানার মোবাইলে বার বার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কর্মচারি পালাতক রয়েছে।