ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

শীঘ্রই ভেঙ্গে দেয়া হবে মহেশখালের অপরিকল্পিত বাঁধ

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

চট্টগ্রামের হালিশহর, আগ্রাবাদ, সিডিএ এলাকার ১০ লাখ মানুষের মরনফাঁদে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে নির্মিত মহেশখালের অপরিকল্পিত বাঁধ। এ বাঁধের কারণে গত দেড় বছর এসব এলাকায় জলবদ্ধতা স্থায়ী রূপ ধারণ কররেও কর্তৃপক্ষে টনক নড়েনি।

অবশেষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঘোষণা দিয়েছেন জলদুর্ভোগ থেকে নগরবাসীকে রক্ষার স্বার্থে মহেশখালের উপর নির্মিত বাঁধটি শীঘ্রই অপসারণ করা হবে।

বৃহষ্পতিবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন,চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ,পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ ৩ সংস্থার যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে মহেশখালের বাঁধ অপসারণের।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বলেন, আগ্রাবাদ-হালিশহর এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী ভিত্তিতে মহেশখালের উপর একটি বাঁধ নির্মাণ করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বর্ষা মৌসুমের অতিবৃষ্টি, তার সাথে জোয়ারের পানিরচাপে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, এই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সকল সেবা সংস্থা সমূহের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হচ্ছে মহেশখালের উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধটি দ্রুত অপসারণ করা হবে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষরিত পত্রটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। একই সাথে জলাবদ্ধতার হাত থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাকে স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মহেশখালের মুখে পাম্পহাউস সহ স্লুইচ গেইট নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প বাস্তবায়নে লজিস্টিক সহযোগিতা দেবে। এছাড়াও আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের জন্য দরপত্র আহবান করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

.

এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ছয় মাসের জন্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী বাঁধ দিয়েছিল স্লুইসগেট নির্মাণের কথা বলে। উক্ত বাঁধের কারণে নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদ, ছোটপোল বড়পোল, ৩৭ নম্বর হালিশহর মুনির নগর ও ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্য হালিশহর ওয়ার্ডের ১০ লাখ মানুষের জীবন এখন হুমকির মুখে পড়েছে। অপরিকল্পিত ওই বাঁধের কারণে জোয়ারের সময় দুই ওয়ার্ডের মানুষ এবং বৃষ্টির সময় আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষে জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন।

সম্প্রতি আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলায় পানি ঢুকে রোগীদের সীমাহীন দুর্ভোগের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৬ সালের ঈদুল ফিতরের দিন আবহাওয়া শুষ্ক ও সুন্দর থাকার পরও বৃহত্তর হালিশহর ও আগ্রাবাদ এলাকার লাখো মুসল্লি ঈদগাহে জামাতের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হন শুধু মহেশখালের বাঁধের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায়।

.

শুধু জলবদ্ধতা নয় এ বাঁধের কারণে মহেশখাল আজ মশার উর্বর প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বাঁধের কারণে উজানে জোয়ারভাটা না থাকায় পানির স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ নেই। ফলে মহেশখালের উত্তর অংশের সিংহভাগ ভরাট হয়ে গেছে। বদ্ধ পানির দুর্গন্ধ, কচুরিপানা আর নোংরা আবর্জনায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে থাকছে।

এলাকার বাসিন্দা হাবিব শরীফ বলেন, মহেশখাল বাঁধ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফ জামান বলেছিলেন, বাংলাদেশের কোথাও খালের ওপর এ ধরনের বাঁধ দেওয়ার রেকর্ড নেই। এ বাঁধটি বিজ্ঞান ও পরিবেশ সম্মত নয়। খালটির পরিকল্পিত সংস্কারই জলাবদ্ধতা নিরসনের একমাত্র উপায়। আরএস খতিয়ানমূলে খালটিকে পুনরুদ্ধার করে উজানে, ভাটিতে পলি অপসারণ কর খালে জোয়ার ভাটার প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।’

.

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ৩-৪ কোটি টাকা ব্যয়ে অস্থায়ী বাঁধ দেওয়ার সময় বন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছিল বাঁধের কারণে সৃষ্ট পলি অপসারণ ও ড্রেজিং করবে। বাস্তবে কিছুই করা হয়নি। ছয় মাসের মধ্যে স্লুইসগেট নির্মাণের কথা ছিল তা-ও করেনি। সম্প্রতি বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম একটি টেলিভিশনকে বলেছেন, মহেশখালে স্লুইসগেট দেওয়ার এখতিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের, বন্দরের নয়। এখন এলাকাবাসীর প্রশ্ন, তাহলে বন্দর অতিউৎসাহী হয়ে বাঁধটি দিয়েছিল কিসের এখতিয়ারে? কার স্বার্থে?

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন একজন সাংসদের ভাড়াঘর রক্ষার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরের কতিপয় মুর্খ প্রকৌশলীদের দিয়ে এই বাঁধ দিয়ে শুধু জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করে নয়, উপরন্তু একটি জোয়ার ভাটার প্রবাহমান খালকে ইট, কংক্রিট দিয়ে বন্ধ করার এহেন মূর্খ নজির পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। মহেশখালের মত একটা জোয়ার ভাটার প্রবাহিত খালকে ইট, কংক্রিট দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ শুধু একটা খালকে হত্যা করেনি, হত্যা করেছে খাল সংলগ্ন জনপদের পরিবেশ প্রতিবেশ এবং খাল সন্নিহিত ৪ ওয়ার্ডের প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের জীবন ধারাকে। এই মহেশখালের বাধের কারণে বর্ষা ও অমাবস্যা পূর্নিমাতে নগরীর ২৭, ৩৬, ৩৭ ও ৩৮নং ওয়ার্ডে বিস্তীর্ন এলাকা জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে ডুবে যায়, থেমে যায় মানুষের স্বাভাবিক জীবন ধারা। মহেশখাল বাঁধের কারণে বাঁধের আশেপাশের পুঁতি দুর্গন্ধ যা বাতাস ভারী করে তুলছে।

আগ্রবাদ সিডিএ এলাকার বাসিন্দাদের এখন যাতায়াতের একমাত্র বাহন নৌকা।

তিনি অবিলম্বে মহেশখাল বাঁধ অপসারণ করে সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন মহেশখালের মুখে স্লুইসগেইট নির্মান, মহেশখাল কর্ণফুলীর সংযোগস্থল পরিকল্পিত ড্রেজিং করার ও আর.এস, পি.এস খতিয়ান অনুসরন করে মহেশখাল খনন করে খালের দুপাশে ওয়াকওয়ে নির্মানের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।

ছোটপোল এলাকার বাসিন্দা এমএ কাদের বলেন, কিছু মানুষের সুবিধার জন্য বিশাল এলাকায় জলবদ্ধতা মৃষ্টির মাধ্যমে ১০ লাখ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ জলবদ্ধতা স্থায়ী রূপ ধারণ করায় এলাকায় কেউ এখন বসবাস করতে আগ্রহী না। অনেক বাসা বাড়ি ছেড়ে বা বিক্রি করে চলে গেছে। অথচ আগ্রাবাদ সিডিএ একটি অভিজাত এলাকা হওয়া সত্বেও এখানে বসবাসে আগ্রহ হারাচ্ছে মানুষ। এখানকার বাহন সিএনজি টেক্সী, রিক্সা বা প্রাইভেট কারের বদলে নৌকা্‌ই একমাত্র চলাচলে বাহন হয়ে পড়েছে।

 

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print