
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও গণপরিষদের সাবেক সদস্য মো: ইসহাক মিয়া বলেছেন, আওয়ামীলীগ সকল ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার সংরক্ষণে উদ্যোগী থেকেছে। ধর্মাচারণ প্রতিটি মানুষেরই আবেগ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ।
তিনি আজ শনিবার নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মাহে রমজানের তাৎপর্য বিষয়ক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ আজ স্বাধীন ও উন্মুক্ত পরিবেশে নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করে সুখে-শান্তিতে বসবাস করছে। এই শান্তিময় পরিবেশকে কোনোভাবেই ক্ষুন্ন হতে দেব না।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, চিরায়ত ও লোকায়ত ভাবধারায় সমৃদ্ধ বাঙালির ধর্মদর্শন অসাম্প্রদায়িক। এখানে প্রত্যেক ধর্মের আলাদা আলাদা ধর্মাচার ও আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও মুসলমানদের ঈদ, হিন্দুদের শারদীয় দুর্গা পূজা, বৌদ্ধদের বৌদ্ধ পূর্ণিমা ও খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের বড়দিন, এবাদত, প্রার্থনা ও অর্চ্চনার মধ্য দিয়ে যখন উৎসবে পরিণত হয় তখন তা ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সার্বজনীন হয়ে উঠে।
সভাপতির ভাষণে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ত্যাগ ও সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জনের জন্য প্রতিদিন রোজা, নামাজ, এবাদত, সেহ্রেী ও ইফতার গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের ভেতরে যে আত্মশুদ্ধির ধারা প্রবহমান তা সমাজকে সব ধরনের কলুষতামুক্ত করবে। তিনি আরো বলেন, রমজান মাসে ভোগবাধিতা মন থেকে ধুয়ে-মুছে না গেলে সামাজিক শুদ্ধতা আসবে না। সমাজ শুদ্ধ হলেই এর প্রভাব রাজনীতিতেও পড়বে। তিনি ব্যবসায়ী, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এই রমজান মাসে একটি অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট পরিকল্পিতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা শিকারের চেষ্টা চালালেও সাধারণ ব্যবসায়ী, ক্রেতা এবং প্রশাসনের সচেতনতার কারণে তারা সফল হতে পারেনি। এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য প্রশাসনকে আরো উদ্যোগি হওয়ার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন বলেন, এবার চট্টগ্রামে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বেশ শান্তিপূর্ণভাবেই মাহে রমজান মাস অতিবাহিত হতে চলেছে। পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব সৌহার্দ ও সম্প্রীতি রক্ষার মধ্য দিয়ে রমজান মাসের তাৎপর্য আরো বেশি মহিমান্বিত হয়েছে। তিনি ঈদের কেনাকাটার বাজারগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও নগরীর যানজট নিরসন এবং সরকারের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি সংগঠনের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য এখন থেকে প্রত্যেককে স্বক্রিয় ভূমিকা পালনের গুরুত্বারোপন করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, নঈম উদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম.এ.রশীদ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এড. আবু হানিফ, মহানগর জাসদ’র সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুল, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক শামসুদ্দিন খালেদ সেলিম, জাতীয় পার্টির মনজু, আহ্বায়ক আজাদ দোভাষ। সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড.সুনীল কুমার সরকার, মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মিসেস হাসিনা মহিউদ্দিন, মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, আইন সম্পাদক এড. ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বাবু চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো: হোসেন, ধর্ম সম্পাদক হাজী জহুর আহমদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মানস রক্ষিত, শ্রম সম্পাদক আবদুল আহাদ, প্যানেল মেয়র নেছার উদ্দিন আহমেদ মনজু, মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনজুমান আরা আনজী, ন্যাপ মহানগরীর যুগ্ম সম্পাদক মিঠুল দাশ গুপ্ত, উপ প্রচার সম্পাদক হাজী শহিদুল আলম, উপ দপ্তর সম্পাদক জহরলাল হাজারীসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, ১৫টি থানা ও ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক-যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সহযোগি সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে বিশ্ব ও মুসলিম উম্মার শান্তি এবং সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন দারুল ফজল মার্কেট জামে মসজিদের ইমাম হাজী মাওলানা ফজল কবির।