রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধিঃ
দূর্ঘটনা প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা ছাড়াই রাঙামাটি শহরে নির্মাণাধীন ছয়তলা ভবনে কাজ করার সময় ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত শ্রমিকের নাম মোঃ কামরুজ্জামান (৩২)।
তার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলাধীন ফুলবাড়ি থানার ভাঙ্গামোড় গ্রামে। তিনি চার সন্তানেরজনক বলে জানিয়েছে তার সহকর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে আটটার সময় শহরের রিজার্ভ বাজারস্থ উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে সকালের নিহতের লাশ হাসপাতালে নিয়ে সেটি পোষ্টমটেম না করেই তড়িগড়ি করে গোসল করিয়ে কাফন পরিয়ে নিহতের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালায় নির্মাণকাজ পরিচালনকারী ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ।
পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ এসে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এসময় কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে প্রাথমিকভাবে আটক করে নিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রশিদ।
আটককৃতরা হলো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিয়োজিত সাব-ঠিকাদার মোঃ শাহজাহান (৬০) ও ভবনটির মালিকের শ্যালক মোঃ জসিম।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নির্মাণ শ্রমিকরা জানায়, রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের রাস্তার দ্বারেই নির্মিত ছয়তলা বিশাল এই ভবনটির মূল মালিক কুয়েত প্রবাসী এক ব্যক্তি। তারই অর্থায়নে শ্যালক জসিমের পরিচালনায় চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিস্থ ক্যান্টমেন্ট এলাকার বাসিন্দা হাজী আবু তাহের এর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ভবনটি নির্মান করা হচ্ছিলো।
উক্ত ঠিকাদারের নিয়োগকৃত সাবঠিকাদার শাহজাহানের তত্ত্বাবধানেই নির্মাণ করা হয়েছে এই বিশাল ভবনটি। দূর্ঘটনা প্রতিরোধে কোনো প্রকার প্রস্তুতি ছাড়াই প্রধান সড়কের পাশে এবং বিদ্যুতের ৩৩ হাজার কেভির সংযোগ লাইনের দ্বার ঘেষেই নির্মিত হচ্ছিলো ভবনটি। এতে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছিলো লক্ষীপুর, কুড়িগ্রাম থেকে আসা অন্তত ১০/১২ জন নির্মান শ্রমিক।
বৃহস্পতিবার সকালেও অন্যান্য দিনের ন্যায় কাজ শুরু করেছিলো কামরুজ্জামান ও তার সহকর্মীরা। এসময় একটি পিলারের ঢালাই দেওয়ার জন্যে রড বাধার সময় একটি রড পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ৩৩ হাজার কেভির বিদ্যুতের তারে লাগলে সেটি কামরুজ্জামানের হাতে থাকায় সহজেই বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে পড়ে যায়। এসময় সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এসময় নিহতকে কৌশলে হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসে বিল্ডিংয়ের প্রবেশ পথ বন্ধ করে ভেতরে নিহতের লাশ গোসল করিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় ঠিকাদারের লোকজন। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে তথ্যটি সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে।