
সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে বাঁশখালীর পূর্ব বৈলছড়ি এলাকায় রাতের আঁধারে স্কেভেটর চালিয়ে পাহাড় কেটে কলেজের মাঠ ভরাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত চার দিন ধরে নির্বিচারে পাহাড় কাটায় স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও তা অমান্য করে পাহাড় কাটা অব্যাহত রয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে।
পূর্ব বৈলছড়ি খান বাহাদূর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবীর কান্তি দত্ত বলেন, ‘গ্রামের ছোট রাস্তা ও এলাকাবাসীর ভোগান্তি লাঘবের কথা চিন্তা করে রাতে পাহাড় কাটা হচ্ছে। পাহাড় কাটা হচ্ছে মূলত নবনির্মিত পূর্ব বৈলছড়ি খান বাহাদূর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ নির্মাণ ও বাঁশখালী গার্লস কলেজের মাঠ ভরাটের জন্য। এ দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।
বাঁশখালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘১৪ গণ্ডা বা ২৮ শতক জায়গা সরকারকে দান করেছেন সাবেক এ সংসদ সদস্য। ফলে ওই জায়গায় সরকারি প্রাইমারি স্কুলটি নির্মাণ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ জায়গা এখন সরকারের। মাটি কাটতে আমার কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগের পর আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে জানিয়েছি। স্যার, সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) পাঠালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছেন।’
বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুল ইসলাম মৃদুল বলেন, ‘পাহাড় কাটার ঘটনাস্থল গত ২২ জানুয়ারি পরিদর্শন করে মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। যদি আবার কেউ মাটি কাটার উদ্যোগ নেয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৈলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কপিল উদ্দিন বলেন, ‘গ্রামবাসীর অভিযোগের পর প্রশাসন মাটি কাটা বন্ধ করে দিলেও মাটি কাটা থেমে নেই। আগে ২০টি ট্রাকে মাটি টানলেও এখন ৩৮টি ট্রাকে রাতভর মাটি টানছে। সন্ধ্যা হলেই স্কেভেটর চালু হয়।’
বাঁশখালী গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ মুসা সিকদার বলেন, ‘পাহাড় কাটার ব্যাপারে আমি জানি না। সব কিছু কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মেয়র সাহেব জানেন।’
চট্টগ্রামের সাবেক সিটি মেয়র ও বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমি নিজের জন্য পাহাড় কাটছি না। স্কুল- কলেজের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য মাঠ ভরাট করতে পাহাড় কাটছি।’ তিনি বলেন, স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীরা যাতে খেলাধুলা করতে পারে এ জন্য মাঠ ভরাট করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে, পাহাড় কাটা কিংবা মাটি ভরাটের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।