
নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের দাবী জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, এখন আর নির্বাচন হয় না, হয় কারচুপি, ভোটহীন কিংবা জালভোটে নির্বাচিত হয়। তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার দরকার সবার আগে।
তিনি আজ শনিবার বিকালে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘির মাঠে জাপার নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিসহ অন্যান্য ব্যাংক লুটের ঘটনা ইতিহাসে বিরল। এসব লুটেরাদের বিচার করেনি সরকার। তাই দেশে একের পর এক আর্থিকখাতে ধস নামছে। দুর্নীতির মহাসড়কে দেশ এখন পথভ্রষ্ট। উল্লেখ্য করে সাবেক এ প্রেসিডেন্ট দেশের মানুষ এ থেকে পরিবর্তন চায়। দেশকে বাঁচাতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, এখন উন্নয়নের নামে ব্যাংক লুট করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ওনি কথা দিয়েছিলেন ১০ টাকায় চাল খাওয়াবেন। এখন চালের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। একজন রিকশাওয়ালার তিন থেকে চারজন সন্তান। তারা ৭০ টাকা কেজিতে কিভাবে ভাত খাবেন? ঘরে ঘরে চাকরি দেওযার কথা বলেছিলেন, কিন্তু এখন দেশে ৪ কোটি ৮২ লাখ বেকার। ওরা এখন দেশের বোঝা, পরিবারের বোঝা, সমাজের বোঝা। বেকারত্ত্বের অভিশাপ নিয়ে তারা মাদকের আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু ওনারা ভালো আছেন। মানুষ কেমন আছেন, তাদের তা জানার সময় নেই। কারা ব্যাংকের টাকা চুরি করলো তাদের নাম জানতে পারলাম না। নিশ্চয় আপনারা জড়িত আছেন। তাই কিছু বলেন না।’
জাতীয় পার্টির শাসনামলের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে এরশাদ বলেন- আমাদের সরকারের আমলে যা উন্নয়ন হয়েছে তা আর কোন সরকার করতে পারেনি। তাই দেশের মানুষ এখন আবারও ক্ষমতায় দেখতে চায় জাতীয় পার্টিকে।
দেশের জনগণ ক্ষমতার পরিবর্তন চায় উল্লেখ করে জাপার চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা একক সরকার চাই না। সবাইকে নিয়ে সরকার ঘটনা করতে চায় জাতীয় পার্টি। এখনতো একজনের কথায় চলছে। তাই দেশের মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই। তিনি বলেন, এখন তো নির্বাচন হয় না, সীল মারে। তাই আগামী নির্বাচন কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশকে উদ্ধার করতে হবে। পরিবর্তন করতে হবে দেশকে।’
এরশাদ তার বক্তব্যে আরো বলেন, কিছুদিন আগে বলা হতো ব্যাংকে টাকা অলস পড়ে আছে টাকা নেওয়ার কেউ নেই। অথচ এখন বলা হচ্ছে ব্যাংকে টাকা নেই। কোথায় গেল এই টাকা প্রশ্ন করেন এরশাদ।
‘বাংলাদেশের মতো ব্যাংক ডাকাতি আর কোথাও হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষককেরা ব্যাংকের ঋণের টাকা দিতে না পারলে জেলে যেতে হয়। কৃষকের বিচার হয়, কিন্তু প্যারাডাইস পেপারসে যাদের নাম আসে, এদের তো বিচার হয়না?’
এরশাদ বলেন, ‘এখন সরকার চালায় কে? শুধু একজন। আমাকে স্বৈরাচার বলছেন। এখন আন্তর্জাতিক সংস্থা এ সরকারকে স্বৈরাচার বলছে। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান, শেয়ার বাজার ধবংস. ব্যাংকের টাকা লুট, সব ধবংস।
তাই দেশ বাঁচাতে জনগণকে বাঁচাতে সবাই এগিয়ে আসুন।’
সম্মিলিত জাতীয় জোটের নেতা ও ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন, সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, জাতীয় পার্টি চট্টগ্রাম নগর আহ্বায়ক সোলায়মান আলম শেঠ, জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ এম.পি, বিএনএ চেয়ারম্যান সেকান্দর আলী মনি, জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, মেজর (অব:) খালেদ আক্তার, ইসলামী ফ্রন্টের স উ ম আবদুস সামাদ, আল্লামা মছিহুদ্দৌলা, মুফতি মুহাম্মদ ছাদেকুর রহমান হাশেমী, অধ্যক্ষ মুফতি আহমদ হোসাইন আলকাদেরী, মাওলানা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী, মুক্তিযোদ্ধা গাজী এম এ ওয়াহিদ সাবুরী, মাওলানা হারুনুর রশিদ রেজভী, জাপা ভাইস চেয়ারম্যান হাজী মো: ইলিয়াছ এম.পি, মাহজাবীন মোর্শেদ এম পি।
