ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

আদিবাসীদের আজ ফুল বিজু আগামীকাল মূল বিজু

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

(তুরু তুরু শব্দে বাঁশি বাজে, গ্রামে ঘুরে বেড়াব সবাই মিলে, আজ বিজু, আজ বিজু।)
খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান—এই তিন পাহাড়ি জেলায় চলছে আনন্দের ধুম। এই ধুমধামের আয়োজনে চারপাশটা মুখরিত। হবেই বা না কেন, আজ যে বিজু! বিজু মানে আনন্দ, হই-হুল্লোড়, বিজু মানে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো। বিজু মানে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করা, সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করা, সর্বোপরি বিজু মানে হলো মিলনমেলা।
বিজু পাহাড়ি আদিবাসীদের প্রধান উৎসব। বাংলা বছরের শেষ দুদিন ও নববর্ষের প্রথম দিন বিজু পালন করা হয়। পার্বত্য অঞ্চলে ১০ ভাষাভাষী ১১টি সম্প্রদায়ের বসবাস। প্রতিটি সম্প্রদায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উৎসব পালন করে। তবে বিজু উৎসব সবাই একই সময়ে পালন করে। বিজু প্রতিটি সম্প্রদায়ের কাছে আলাদা নামে পরিচিত। চাকমারা বলে বিজু, মারমারা বলে সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বলে বৈসুক। শহরাঞ্চলে যা ‘বৈসাবি’ নামে পরিচিত। ত্রিপুরাদের বৈসুক থেকে ‘বৈ’, মারমাদের সাংগ্রাই থেকে ‘সা’, আর চাকমাদের বিজু থেকে ‘বি’, একত্রে ‘বৈ-সা-বি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে শহর জীবনে।
আদিবাসীদের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উৎসবের যেমন ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে, তেমনি উৎসবের তিনটি দিনের নামও আলাদা। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন উৎসবের প্রথম দিনকে হারি বৈসুক, দ্বিতীয় দিনকে বিসুমা ও তৃতীয় দিনকে বিসিকাতাল বলে। মারমারা প্রথম দিনকে সাংগ্রাই আকনিয়াহ, দ্বিতীয় দিনকে সাংগ্রাই আক্রাইনিহ ও শেষ দিনকে লাছাইংতার বলে। চাকমাদের কাছে এগুলো ফুল বিজু, মূল বিজু ও গোজ্যেপোজ্যে দিন হিসেবে পরিচিত।
উৎসবের প্রথম দিনে ঘরবাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয় এবং ফুল দিয়ে সাজানো হয়। এদিন পাহাড়ি ছড়া বা নদীতে ফুল ভাসিয়ে দিয়ে পুরোনো বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে থাকছে প্রতিটি ঘরে নানা মুখরোচক খাবার। বিশেষভাবে বলা যায় ঐতিহ্যবাহী ‘পাজন’ এর কথা। এ খাবার কমপক্ষে ২০ ধরনের শাকসবজি দিয়ে তৈরি করা হয়। তৃতীয় দিনে দল বেঁধে মন্দিরে গিয়ে নতুন বছরের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এ ছাড়া চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাদের আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান তো থাকছেই। মন ছুঁয়ে যাওয়ার অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম চাকমাদের বিজু নৃত্য, ত্রিপুরাদের গরাইয়া নৃত্য ও মারমাদের জলকেলি ইত্যাদি।
উৎসব নিয়ে মাতামাতি কার নেই। বাড়ি যাওয়ার জন্য ছটফট করছে ঢাকা শহরের অবস্থানরত এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। খাগড়াছড়ির বিসু কুমার ত্রিপুরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন। তিনি বলেন, ‘বাড়ি তো অবশ্যই যাব। এর জন্য ১১ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট কেটে রেখেছি, যেন টিকেট নিয়ে ঝামেলা পোহাতে না হয়।’
অন্যদিকে মন খারাপ করে বসে আছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী জুয়েল চাকমা। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার কারণে এবার বিজুতে বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না। “পাজন” খাওয়াও হবে না। সবকিছু খুব মিস করব।’
‘উৎসবের জন্য এক সপ্তাহ আগে টিকিট করতে গেলেও সরাসরি বাড়ি যাওয়ার টিকিট করতে পারেননি। তাই তাঁকে বাধ্য হয়ে অন্য পথের গাড়িতে যেতে হবে। তার পরও তাঁর মনে এতটুকু কষ্ট নেই—বললেন রাঙামাটির মং ছাইনু মারমা। তিনি পড়াশোনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী প্রিমা চাকমা জানান, ‘ছয় বছর ধরে বিজু ঢাকায় করতে হচ্ছে। এখানে থাকলে বিজুর সত্যিকারের আমেজটা ঠিক অনুভব করা যায় না। এলাকার বিজুর দিনগুলো খুব মনে পড়ে।’
মনে মনে ভেবে রেখেছেন উৎসবে কী কী করবেন। এমন কথা হচ্ছিল ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তনয়া চাকমার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘উৎসবের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘরবাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করব, ফুল দিয়ে ঘর সাজাব। আর বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়াব।’
এবারের বৈসাবির উৎসবে ঢাকার বেশির ভাগ আদিবাসী শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরবেন শিকড়ের টানে, বহুদিনের চেনা গ্রামে। ক্ষণিকের জন্য হলেও পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব নিয়ে আসবে এক পশলা বৃষ্টির মতো শান্তির বারতা।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print