
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন বোয়ালখালী উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণে বৈষম্য করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে গ্রাহকরা। গ্রীষ্মের তাপদাহ ও টানা লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত গ্রাহকরা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গ্রাহকরা জানান, গত কয়েক মাস ধরে এ বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাহকবৃন্দ। প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিদিনই ১৬-২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। সাপ্তাহিক সরকারি বন্ধের দিন ২৪ঘণ্টায় থাকে না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। তবে উপজেলা সদরের ভিআইপি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে চোখে পড়ার মতো।
বিদ্যুৎ বিতরণে অনিয়ম ও বৈষম্য বন্ধের লক্ষে গত ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপি ও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বোয়ালখালী পূর্বাঞ্চলের কয়েকশত গ্রাহক।
পূর্বাঞ্চলের গ্রাহক সৈয়দ মুহাম্মদ রবিউল হোসেন বলেন, আহলা কড়লডেঙ্গা, আমুচিয়া, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে বিতরণে অনিয়ম ও বৈষম্য দেখা যাচ্ছে। নিয়মনীতি ছাড়াই দৈনিক ১৬-২০ঘণ্টা টানা লোডশেডিং করা হয়। উপজেলা সদরে এ চিত্র উল্টো। আবার পটিয়া থেকে আসা বিদ্যুৎ লাইনে একই এলাকার ধোরলা কালাইয়ারহাট, আহলা সাধারপাড়া, মধ্যম ও দক্ষিণ কড়লডেঙ্গায় বিদ্যুৎ থাকে প্রায় সময়। এব্যাপারে বোয়ালখালী জোনাল অফিসে যোগাযোগ করলে একটাই উত্তর জানায় গ্রিডে সমস্যা, কাজ চলছে।
পূর্ব গোমদন্ডীর বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন জানান, শবে বরাতের দিন প্রায় ১৮ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিলো না। এর আগের দিনও একই অবস্থার মধ্য দিয়ে পার করেছি। এ অবস্থা অজানা কারণে অব্যাহত রেখেছে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন।
বিদ্যুৎ বিতরণে বৈষম্য ও অনিয়মের জন্য পল্লী বিদ্যুৎতের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়ী করছেন গ্রাহকরা। মিলকারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে এ বৈষম্য করা হচ্ছে। অথচ মিলকারখানাগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জেনারেটর রয়েছে।
বোয়ালখালী জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালখালী উপজেলায় ১৭.৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১টি উপ-কেন্দ্র (২০এমভিএ) রয়েছে। এ কেন্দ্র থেকে সাতটি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় উপজেলায়। বোয়ালখালীতে আবাসিক, বাণিজ্যিক, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও সেচ সংযোগ মিলিয়ে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৫০হাজার। এছাড়া রয়েছে ৬৪টি সড়ক বাতি। ২০১৭ সালের ১৩ আগষ্ট ১৩৭.২০ বর্গ কিলোমটার আয়তনের এ উপজেলার ৩৮টি গ্রামকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত এলাকা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বোয়ালখালী সহকারি জোনাল ম্যানেজার মফিজুল ইসলাম জানান, শিকলবাহা গ্রিডের কারণে লোডশেডিংয়ের এ সমস্যা হচ্ছে। এ গ্রিডে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোড নিতে পারে। এরমধ্যে ১৩২ইনকামিং ব্রেকারে কারিগরি সমস্যার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ত্রুটি নিরসনে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।