
চট্টগ্রামের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী তাসফিয়ার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের দ্বারপ্রান্তে তদন্তকারী পুলিশ টিম। শীঘ্রই জানা যাবে মৃত্যু রহস্য। ইতিমধ্যে তাসফিয়ার বাসার সিসিটিভি ফুটেজসহ একাধিক ফুটেজ সংগ্রহ করে তা পর্যবেক্ষণ করেছে টিমটি। সনাক্ত করা গেছে ঘটনার দিন চায়না গ্রিল রেষ্ট্রুরেন্ট থেকে তাসফিয়াকে বহনকারী অটোরিকশাটিরও। এছাড়া মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশের একাধিক টিম নিহত তাসফিয়া ও গ্রেফতার আদনানের পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট একাধিকজনের কথা রেকর্ড করেছেন বলে পুলিশ।
সূত্র মতে জানিয়েছে, নগরীর চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে তাসফিয়া আর বাসায় ফিরে আসেনি। তাসফিয়ার বাসার সিসি টিভির ফুটেজেও এর সত্যতা মিলছে। ফুটেজে দেখা যায়, ১ মে বিকেল পাঁচটা ২০ মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে তাসফিয়া আর ফেরেনি। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাসফিয়ার বাসার নিরাপত্তারক্ষী লোকমান হোসেনও এমন তথ্য দিয়েছেন। অন্য একটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, তাসফিয়ার বাসার গলির খানিক সামনে ধীরগতিতে চলছিল সিএনজি অটোরিকশাটি। বাসায় যেতে হলে ওয়েলফুড রেস্টুরেন্টের সামনের পথ পাড়ি দিয়ে মেডিকেল সেন্টারের গলি দিয়ে ঢোকার কথা। কিন্তু তাসপিয়াকে বহনকারী অটোরিকশাটি সে পথ ধরে যায়নি। অন্যদিকে তাসফিয়া ও সিএনজি অটোরিকশাটিকে রাত আটটা ১০ মিনিটে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে দেখেছে বলে একাধিক জনের মতামত।
তাসফিয়া হত্যাকান্ডের কি অবস্থা জানতে চাইলে নগর পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ইতিমধ্যে চায়নাগ্রিল রেস্টুরেন্ট, জিইসিসহ পতেঙ্গায় যাওয়ার পথে থাকা একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করে তা পর্যবেক্ষণ করছি। এছাড়া হত্যাকান্ডের অন্যতম একটি ক্লু ছিলো তাসফিয়াকে বহনকারী সেই সিএনজি অটোরিকশাটি আটক করা। আমরা ইতিমধ্যে তা সনাক্ত করেছি। এখন সেই অটোরিকশা ও চালক গ্রেফতার হলেই রহস্য খুলে যাবে বলে ধারণা তার। তিনি তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে জানিয়ে বলেন, এ হত্যাকান্ডে অন্য কোন রহস্য আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছি।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেয়ে কিছুই বলতে চাইছেনা সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে তাদের দাবি ভিডিও ফুটেজগুলো পর্যালোচনা করে পুলিশ ইতিমধ্যে মৃত্যু রহস্যের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। সেদিন তাসফিয়া আমিনকে কারা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে নিয়ে গেছে এবং কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা অনেকটাই পরিস্কার তবে সেক্ষেত্রে আরো তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেন তারা।
এর আগে গত বুধবার (২ মে) সকালে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ১৮ নম্বর ব্রিজঘাটের পাথরের ওপর থেকে সান-সাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। পরে একই দিন সন্ধ্যায় নগরের খুলশী থানার জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাসফিয়ার কথিত প্রেমিক আদনান মির্জাকে (১৬) আটক করে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (০৩ মে) তাসফিয়ার বাবা বাদী হয়ে আটক আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে পতেঙ্গা থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন সকালে আদনানকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাই পুলিশ। আদালত রবিবার শুনানির দিন ধার্য করে আদনানকে কারাগারে পাঠায়।