চট্টগ্রামে বাজার মনিটরিং কার্যক্রমের আওতায় পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মশলা গুঁড়ো করে মোড়কজাত এবং বিক্রির দায়ে দুই প্রতিষ্ঠানকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
১৩ মে রবিবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
।অভিযানকালে মহানগরীর আগ্রাবাদের চৌমুহুনী এলাকার কর্ণফুলি মার্কেটে বাজার দেখা যায়, বিএসটিআই অনুমোদনহীন প্ল্যান্ট ব্যবহার করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মসলা মাড়াইকরণ এবং খোলা বাজারে হলুদ,মরিচ, ধনিয়া ও অন্যান্য মসলাজাতীয় দ্রব্য উৎপাদন ও বিক্রি করার দায়ে মেসার্স আল আমিন মসল্লা ফ্যাক্টরি ও মেসার্স হানিফ স্টোর এই দুটি দোকানকে বিএস টি আই অধ্যাদেশ-১৯৮৫ এর ২৪ ধারার লঙ্ঘন করার দায়ে ৩১ (এ) ধারায় ৭ হাজার টাকা করে মোট ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান, অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, অভিযান পরিচালনার সময় মুদি বাজার, কাঁচা বাজার, মাছ-মাংস-মুরগীর বাজার সহ পুরো মার্কেট এলাকার দোকানদার ও বিক্রেতাকে মূল্যতালিকা সংরক্ষণ, সঠিক ওজন যন্ত্র ব্যবহার, পাকা রশিদ সংরক্ষণ , ভেজাল ও বি এসটিআই মানবিহীন পণ্য বিক্রি না করা প্রভৃতি বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
অভিযানকালে বিএসটিআই ফিল্ড অফিসার জনাব দীপংকর কুমার দত্ত, ক্যাব প্রতিনিধি রুখসানা আক্তার ও সিএমপি পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।এবং আগ্রাবাদ , চৌমুহুনীর কর্ণফুলী মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ভ্রাম্যমান আদালতের অপর এক অভিযানে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণ না করে বরফ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে স্টার আইস ফ্যাক্টরি (মালিকঃ হাজী মোঃ আলী, মোঃ ফজলুর রহমান) কে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৩,৫৩ ধারায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মহানগরীর আগ্রাবাদের চৌমুহুনী এলাকার কর্ণফুলি মার্কেটের পিছনে অবস্থিত ফ্যাক্টরিটি পরিদর্শন কালে দেখা যায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ব্যবহার না করেই নোংরা পানি দিয়ে বরফ উৎপাদন করছে। ব্যবহৃত বরফ তৈরির ট্রে/ক্যান ( যে পাত্রে পানি জমে বরফ হয়) মরিচা পড়েছে। বরফ তৈরির জন্য স্টেইনলেস স্টিলের আইস ট্রে/ ক্যান ব্যবহার না করে টিনের তৈরি ট্রে/ক্যান ব্যবহার করছে। অভিযান কালে দেখা যায়, প্রতিটি ট্রে/ক্যান ই আয়রণের ক্ষয়জনিত কারণে মরিচা পড়েছে এবং এগুলোই নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করছে।
স্যানিটিশেন ও ডাক্তারি সনদ ব্যতিরেকে কর্মীরা নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পানি উৎপাদন কাজ করছে। মালিক ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত থাকায় উপস্থিত মালিক প্রতিনিধি আইস ফ্যাক্টরির প্রয়োজনীয় লাইসেন্স প্রদর্শন করতে পারেনি। ফ্যাক্টরিতে জীবাণুনাশক প্রক্রিয়া এবং কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো সিস্টেম নেই। ফ্যাক্টরীর বরফ উৎপাদনস্থলের সাইড ওয়াল ও সিলিং অপরিষ্কার ও মাকড়সার জালে পরিপূর্ণ। এরকম পরিস্থিতিতে উৎপাদিত বরফ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এসব বিবেচনায় ফ্যাক্টরিটিকে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে যথাযথভাবে ফ্যাক্টরির মান উন্নত করতে উপস্থিত আদালত নির্দেশনা দিয়েছে। আদালতের নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে ফ্যাক্টরির উৎপাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হবে মর্মে মালিক প্রতিনিধি মুচলেকা সম্পন্ন করেছে।
