
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপের তুফান আলী শাহ্ মাজারের ওরশকে কেন্দ্র করে শাহ আলম হত্যা মামলার আসামী মিনহাজুল আবেদীন নাঈমকে(২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ সময় ব্যবহৃত একটি সিএনজি চালিত অটো রিকশা (চট্টগ্রাম থ-১৩-৪১৯৭) উদ্ধার করা হয়। মিনহাজ হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে বলে জানান পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৭ মে বিকেলে নগরীর পশ্চিম কালুরঘাট এলাকা থেকে মিনহাজুল আবেদীন নাঈমকে গ্রেফতার করা হয়। পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম এর তত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পরিতোষ দাশ এ অভিযান পরিচালনা করেন। মিনহাজুল আবেদীন নাঈম বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ ফকিরাখালী এলাকার মো.মুছার ছেলে।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, গত ২৮ এপ্রিল স্ব-উদ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই এবং এসআই পরিতোষ দাশকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১২ মে মামলার পূর্ববর্তী তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালখালী থানার এসআই মো. ফারুক হোসেন এর কাছ থেকে তদন্তভার গ্রহন করার পর পলাতক আসামীদের গ্রেফতার এবং মূল রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। এরপর শাহ আলম হত্যাকান্ডের পরিকল্পনার সাথে জড়িত এজাহার বর্হিভূত পলাতক আসামী মিনহাজুল আবেদীন নাঈমকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান তিনি।
গত ২০ মার্চ রাত পৌণে ৯টার সময় বোয়ালখালী উপজেলার মধ্যম চরণদ্বাীপ ৭নং ওয়ার্ড ফকিরাখালী এলাকার হযরত তুফান আলী শাহ্ (রহ.) মাজার গেইটের সামনে ওরশকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। ্এ সময় বিরোধী পক্ষ শাহা আলমকে পূর্ব ছুরিকাঘাত করে। এতে শাহ আলম মারা যান। এ ব্যাপারে শাহ আলমের ভাই সিরাজুল ইসলাম নবী বাদী হয়ে বোয়ালখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) জনাব আবু জাফর মো. ওমর ফারুক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পরিতোষ দাশের যৌথ জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মিনহাজুল আবেদীন নাঈম জানায়, গত ২০ মার্চ সন্ধ্যা সোয়া ৮টার দিকে সময় মামলার আসামী মিনহাজের আপন চাচাত ভাই সাদ্দাম তাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। এতে সে ঘটনাস্থল তুফান আলী শাহ মাজারের সামনে যায়। সেখানে শাহ আলম মাজারে আধিপত্য বিস্তারকারী উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
শাহ আলম এক পক্ষের লোক হওয়ায় বিরোধী পক্ষ তাকে হত্যা করে মাজার থেকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা করে। উক্ত পরিকল্পনার জের হিসাবে এজাহার নামীয় আসামী মো. তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী (২৫) হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি দিয়ে শাহ আলমের বুকের বাম পাশে আঘাত করে। এরপর গুরুতর জখম প্রাপ্ত হয়ে পড়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতারকৃত আসামী মিনহাজুল আবেদীন নাঈম ভিকটিম শাহ আলমকে ধরে মাজার গেইট এর ডান পাশে নির্জন জায়গায় চুপিসারে রেখে দেয়। এরপর আসামীরা একটি সিএনজি চালিত অটো রিকশা যোগে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার পর গ্রেফতারকৃত আসামী নাঈম নিজেকে নির্দোষ সাজানোর জন্য চিৎকার করে সবাইকে বলে যে, শাহ আলমকে কারা যেন ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আশেপাশের লোকজন মূমূর্ষ অবস্থায় ভিকটিম শাহ আলমকে চ.মে.ক হাসপাতালে জরুরী বিভাগে প্রেরণ করলে কর্তব্যরত ডাক্তার শাহ আলমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য মিনহাজ মামলার প্রধান আসামী আব্দুল মান্নানের সাথে প্রতিনিয়ত তার বাসায় গিয়ে শলা-পরামর্শ করতো।
২৮ মে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল্লাহ কায়সার এর আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক মিনহাজুল আবেদীন নাঈম হত্যাকান্ডে জড়িত অপর আসামীদের নাম উল্লেখ করে হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে বলে জানান পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।