ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

খাতুনগঞ্জে দাম কম, ক্রেতা নেই, লোকসানে ব্যবসায়িরা

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

রাজীব সেন প্রিন্সঃ

চট্টগ্রামের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ। রোজা শুরুর কয়েকদিন আগেও যে খাতুনগঞ্জ ছিলো জমজমাট? যানজটে ঠাসা ছিল এখানকার প্রবেশের সবকয়টি সড়ক। কিন্তু মাত্র পনের দিনের ব্যবধানে পাল্টে গেছে এ পাইকারী বাজারের পুরো চিত্র। প্রতিটি রাস্তা এখন অনেকটাই ফাঁকা। কোলাহল নেই ক্রেতা বিক্রেতাদের। অলস সময় পার করছে শ্রমিক দিন মজুর ও ঠেলা চালকরা। পাইকারি ব্যবসায়িরা রোজার আগে বেশি দামে ক্রয়করা পণ্য বর্তমান বাজার অনুযায়ী লোকসানে বিক্রি করলেও ক্রেতাশুন্য বাজার।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ স্টকিষ্ট ট্রেড অ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ জাহেদী বলেন, পণ্যের দাম এত কম থাকার পরও দেশের বৃহৎ এ ভোগ্যপণ্য বাজারে এখন ক্রেতা নেই, অথচ রোজা শুরুর আগেও এসব পণ্যের দাম যখন উর্দ্ধগতি ছিলো। তখন বাজার জুড়ে ভিড় ছিলো ক্রেতাদের। পুরো খাতুনগঞ্জ জুড়ে ছিল যানজট আর জনজট। প্রতিযোগীতা দিয়ে খুচরা ব্যবসায়িরা পুরো রমজান মাসের নিত্যপণ্য এক সাথে ক্রয় করতে গিয়ে তখন এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো। খুচরা বাজারে পর্যাপ্ত মাল থাকায় খাতুনগঞ্জ প্রায় ক্রেতাশূণ্য। ফলে লোকসানে পাইকারী ব্যবসায়ি।

.

পাইকারি বাজারের মেসার্স খাজা ট্রেডার্সের মো. আব্দুল মান্নান অভিযোগ করে বলেন, পাইকারি বাজারে দাম অর্ধেকে নেমে এলেও এর কোন প্রভাবই নেই খুচরা বাজারে। তাদের কাছে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। সেক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকার, জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখলে ভোক্তা পর্যায়ে এর সুফল ভোগ করবে বলে মনে করেন তিনি।

দেশের ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বছরের সর্বনিম্ন দামে বিক্রি হচ্ছে মসলাজাতীয় কাঁচা পণ্য পেঁয়াজ,রসুন ও আদা। মসুর ডাল, ছোলা, ভোজ্যতেলও আগের তুলনায় দাম কম।

গত ১৫ দিনের তুলনায় ৫ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত কেজি প্রতি কমেছে এসব ভোগ্যপণ্যের দাম। মান ভেদে পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩ থেকে ১৬ টাকা কেজি দরে, যা রোজা শুরুর আগে ৩০-৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছিলো। ১০০ টাকা কেজির রসুন পাওয়া যাচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। আদার দামও কমেছে কেজি প্রতি ৩৫ টাকা পর্যন্ত। দু সপ্তাহের ব্যবধানে মসুর ডালে ১২ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমে ৪৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ছোলায় কমেছে ১০-১২ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ৫ থেকে ৭টাকা কমেছে সয়াবিনের দাম।

.

খাতুনগঞ্জ পাইকারি ব্যবসায়ি আলহাজ্ব সোলায়মান বাদশা জানিয়েছে, গত ১৫দিনের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজারে মসলাজাতীয় তিনটি কাঁচা পণ্য পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বাজার বছরের সর্বনিম্নে চলে এসেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে নি¤œমুখী দর ও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্যগুলোর দাম এখন কমতির দিকে।

মেসার্স দ্বিন এন্ড কোম্পানীর মালিক এস এম কামাল উদ্দিন বলেন, মসুর ডাল,ভোজ্যতেল, পামওয়েল ও ছোলার দাম এখন অনেক কম। রোজা শুরুতে এসব পণ্যের ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে দু সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে এসব পণ্যে।

পাইকারির দরপতনে ব্যতিক্রম খুচরা বাজার : খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার থেকে নগরীর কাজির দেউড়ি বাজারের দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। এই দুরত্বের মধ্যে প্রতিকেজি পণ্যে ১০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব ভোগ্যপণ্য। বেশিদামে কেনা পণ্য মজুদ থাকায় আগের মূল্যে বিক্রির অজুহাত খুচরা ব্যবসায়ির। আবার গাড়ি ভাড়া, দোকান ভাড়া সবকিছুর খরচ বাদ দিয়ে পাইকারি থেকে কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রির কথা জানিয়েছে কেউ কেউ।

.

পাইকারিতে মূল্যহ্রাসের প্রভাব খুচরায় কেন পড়েনি? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সরেজমিনে যায়, নগরীর কাজির দেউড়ি বাজার, রেয়াজুদ্দিন বাজার ও বক্সির হাট বাজারের মুদির দোকানগুলোতে। কথা হয় খুচরা বিক্রেতাদের সাথে।

কাজীর দেউড়ি বাজারের ব্যবসায়ি আবু খালেক জানিয়েছেন, ছোলা,মসুর ডাল,পেয়াজ,রসুন,আদা এসব পণ্যের দাম আগের চেয়ে কমেছে। তবে আমাদের কাছে রোজার আগের দরে কেনা পণ্য মজুদ আছে। শেষ হলে নতুন কেনা দামের উপর কেজিতে ৫ টাকা লাভ করে বিক্রি করা হবে।

রেয়াজউদ্দিন বাজারের খুচরা বিক্রেতা আল আমিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পণ্য আনার গাড়ি ভাড়া, দোকান ভাড়া সবকিছুর খরচ বেড়েছে। তাই পাইকারি বাজারের তুলনায় কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। পেয়াজ,আদা-রসুন রোজার আগে বাড়তি দামেই কিনমাল। এখনো মজুদ আছে। সয়াবিনের দাম আগের মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে।

বক্সিরহাট বাজারের মুদি দোকানদার সুবল চৌধুরী জানিয়েছেন, গতকালও পাইকারি বাজার থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে পেয়াজ কিনেছি। এক বস্তা পেয়াজের মধ্যে ৫-৬ কেজি পেয়াজ পঁচা পড়েছে। সবগুলো হিসেবে করে আমরা ২২-২৫ টাকা কেজিতে তা বিক্রি করছি।

পাইকারি ও খুচরায় বিক্রেতাদের মাঝে দামে এত তফাৎ কেন? এমন প্রশ্নে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক সৈয়দ ছগির আহমেদ বলেন, রোজা শুরুর আগে প্রতিযোগীতা দিয়ে খুচরা ব্যবসায়িরা পুরো রমজান মাসের নিত্যপণ্য কিনেছে বেশি দামে। ফলে কয়েকদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে দরপতন হলেও এর সুফল আসছেনা ভোক্তা পর্যায়ে। বেশি পণ্য মজুদ করায় পাইকারি ও খুচরায় দামের তারতম্য রয়ে গেছে।

সেক্ষেত্রে তিনি মনে করেন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ব্যবসায়ীদের মানসিকতার পরিবর্তন। এটি না হলে কখনো বাজারের নৈরাজ্য থামবে না। তাছাড়া বাজার মনিটরিং আরো একটু কঠোর হলে ঠিকই দাম কমে যাবে। কারণ ব্যবসায়ীরা সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। সুযোগ পেলেই ভোক্তার পকেট কাটে।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print