
চট্টগ্রামের পিতার সামনে ছুরিকাঘাত করে যুবলীগ কর্মী এম আর অনিক (২১) খুনের প্রধান আসামী ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন তুষারসহ দুই আসামী কলকাতায় গ্রেফতার হয়েছে।
ভারতের কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) গত শুক্রবার মহিউদ্দিন তুষার ও মুহাম্মদ আলকাসুর রহমান (এখলাসুর রহমান)কে আটক করার পর গতকাল ২৪ জুন রবিবার তাদের বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারত সরকার।
ভারতীয় গণমাধ্যমে গতকাল রবিবার এখবর প্রকাশিত হয়েছে।
জানাগেছে, গত শুক্রবার রাতে খাস কলকাতার ফ্রি স্কুল স্ট্রিট এলাকায় আত্মগোপন থাকাবস্থায় স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বাংলাদেশের এ দুই খুনিকে গ্রেফতার করে। তবে বাংলাদেশ সরকারে পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
সুত্র জানায়, খুনি মহিউদ্দিন সহ অনিক হত্যার অধিকাংশ অাসামী চট্টগ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছে। মহিউদ্দিন তুষার এখলাস মাত্র ৫ দিন আগে কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে চলে যায়।
অনিক হত্যার পর দিন নগরীর চকবাজার থানায় ১২ ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীকে আসামী করে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেখানে এখলাস রহমানের নাম রয়েছে ১০ আসামী হিসেবে।
এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের দেয়া তথ্যের ভিক্তিতে কলকাতা পুলিশ ৩দিন আগে দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করলেও বিষয়টি প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ সরকার।
এ বিষয়ে রবিবার রাতে সিএমপির গোয়েন্দা শাখার কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তারা এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে আজ সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে ভারতে আটক দুজনকে হস্তান্তরের কথা স্বীকার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসাইন। তিনি বলেন, সোমবার ভারতের আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুজনকে বেনাপোল সীমান্তে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেদেশের পুলিশ।
এর আগে দুপুরে পাঠক ডট নিউজের পক্ষ থেকে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনিক হত্যার আসামী ভারতে আটক হয়েছে বিষয়টি আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
ভারতীয় গণমাধ্যমটি প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে খুন করে এদেশে আত্মগোপন করতে চেয়েছিল দুই অপরাধী। নাম মহম্মদ মহিনুদ্দিন (মহিউদ্দিন তুষার) এবং মহম্মদ আলকাসুর রহমান (প্রকৃত নাম এখলাসুর রহমান)। চার-পাঁচদিন আগে সীমান্ত পার হয়ে ওই দু’জন ঢুকে পড়ে এদেশে। তারপর সোজা কলকাতায়। এরা যে এদেশে ঢুকেছে তার প্রমাণ ছিল বাংলাদেশের কাছে। দু’দেশের মধ্যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বহু আগেই। কিন্তু তার সফল প্রয়োগ অনেক ক্ষেত্রেই হত না। কিন্তু এবার বাংলাদেশ প্রশাসনের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে নড়ে বসে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স।
সূত্রে মারফত খবর পাওয়া যায় ওই দু’জন আত্মগোপন করেছে খাস কলকাতার ফ্রি স্কুল স্ট্রিট এলাকায়। এই এলাকা বাংলাদেশিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। বছরভর বাংলাদেশের নাগরিকরা এদেশে এসে এই এলাকাতেই থাকে। শুক্রবার এখান থেকে পু্লিশ গ্রেফতার করে ওই দুই দুষ্কৃতীকে। তারপর প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সেরে আজ রবিবার বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
১৮ জুন চট্টগ্রামে চকবাজার থানা এলাকায় এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মহম্মদ মহিনুদ্দিন এবং মহম্মদ আলকাসুর রহমান নামে ওই দুই দুষ্কৃতী। নিজেদের বাঁচাতে তারা কাজে লাগিয়েছিল চেনা ছক। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। আজ বাংলাদেশের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে দু’জনকে।
উল্লেখ্য মোটর সাইকেলে হর্ণ বাজানোকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন রাতে দামপাড়া চট্টেশ্বরীর মোড়স্থ সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের বাড়ীর সামনে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী তুয়ার মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে ৩০/৫৩ জনের সন্ত্রাসীরা দামপাড়া পল্টন রোড়ের মো. নাসির ড্রাইভারের সামনে তার ছেলে ও স্থানীয় যুবলীগ কর্মী এম আর অনিককে ছুরিকাঘাত করে খুন করে।
*চট্টেশ্বরী রোড়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে গুলিতে যুবলীগ কর্মী খুন