জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ১৯ আগষ্ট রবিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তরা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হারবে জেনে খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে ছাড়া সরকার একতরফা নির্বাচন করতে চায়। তারা সব সময় চেষ্টা করেছে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে দূরে রেখে, খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে একতরফা নির্বাচনের। কারণ আওয়ামী লীগ এখন পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের জনগণের কাছে যাওয়ার জায়গা নেই। তারা নিশ্চিত বিএনপি নির্বাচনে গেলে তাদের ভরাডুবি হবে, সে জন্য একতরফা নির্বাচনের জন্যই এ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। যাতে তাদের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় আসতে পারে। কিন্তু এটি কখনও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খানের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলী মর্তুজা খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম বলেন, আওয়ামি লীগ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এতটাই মরিয়া হয়ে পড়েছে আজ তারা মা, ভাই, বোন, সাংবাদিক, পেশাজীবি, রাজনৈতিক কর্মী কিছুই মানছে না সমানে গ্রেফতার করছে। ১৪ বছরের শিশু রাস্তায় এসেছিল নিরাপদ সড়কের দাবিতে। তাকেও গ্রেফতার হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষর্থীদের খাবার খাওয়ানের অপরাধে মায়েদেরও গ্রেফতার করে রিমান্ডে দেওয়া হচ্ছে। অথছ যারা কোমলমতি শিশুদের উপর হ্যালমেট পরে হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না সরকার। দেশের মানুষ সবই দেখছে, আপনাদের সকল জুলুম নির্যাতনের বিচার বাংলার মাটিতে একদিন হবে। এখনো সময় আছে অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে জনগণের কছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় আপনাদের শেষ রক্ষা হবে না।
সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের বুকের উপর জগদ্ধল পাথরের মত স্বৈরাচারী দানব সরকার ভর করে বসে আছে। এই স্বৈরাচারের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে প্রতিটি শ্রেণী ও পেশার মানুষ। সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগে মামলা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে পবিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, আমির খসরু মাহামুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধেও শিক্ষার্থীদের নিরাপাদ সড়ক আন্দোলনে উস্কানির অভিযোগে মামলা দেওযা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি উস্কানি ও ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বিএনপি গণমানুষের দল। আর তাই দেশের জনগণের সকল ন্যায় ও যৌক্তিক দাবিকে সমর্থন করে। সাধারণ ছাত্ররা সরকার পতনের জন্য নয়, সরকারী চাকুরী পাওয়ার আশায় কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করেছ, বিএনপি শুধু তাদের যৌক্তিক দাবীকে সমর্থন জানিয়েছে। ষড়যন্ত্র ও উস্কানি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও রেহাই পাচ্ছে না, গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াবিহীন কোন পাতানো নির্বাচন দেশের জনগণ মেনে নেবে না, আর কোন একতরফা নির্বাচন দেশের জনগণ হতে দেবে না। সরকার তা বুঝতে পেরে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন নিপীড়ন শুরু করেছে। শুধু বিএনপি নয় সরকার সকল ভিন্নমত ও প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে চায়। জনগণের সকল যৌক্তিক আন্দোলনের মধ্যে তারা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পায়, ক্ষমতা হারানোর পূর্বাবাস পায়। তাই ভিন্নমত দমনে প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন আইন করছে। বিভিন্ন অজুহাতে একের পর এক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করছে।
বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি এস কে খোদা তোতন, নগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ, মহিলা দলের সভানেত্রী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদিকা জেলী চৌধুরী, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. মোরসালিন, দক্ষিণ জেলা স্বোচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইফুদ্দিন সালাম মিঠু, নগর, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফৌজুল কবির ফজলু প্রমুখ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ সকালে শহীদ জিয়া স্মৃতি বিজড়িত বিপ্লব উদ্যানে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
