ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চট্টগ্রাম কলেজে প্রকাশ্যে অস্ত্রহাতে ছাত্রলীগঃ আতংকিত শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা

চট্টগ্রাম কলেজে অস্ত্র হাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

চট্টগ্রাম কলেজে অস্ত্র হাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।

দীর্ঘ দুই যুগ ধরে চট্টগ্রামে ছাত্রশিবিরের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ২০১৫ সালের ১৬ই ডিসেম্বর শিবিরকে বিতাড়িত করার পর অভ্যন্তরীন কোন্দলে জর্জরিত চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ। ২০১৫ সাল থেকে প্রায় ৪০ বার নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দলের এই ছাত্র সংগঠন। নিজেদের মধ্যে মারামারিতে এই পর্যন্ত আহত হয়েছে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী। অশান্ত হয়ে উঠেছে।  শান্তপ্রিয় ক্যাম্পাসটি।

চলতি বছরের শুরুতে পুলিশ প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হস্তক্ষেপে অভ্যন্তরীন কোন্দল কিছু দিন বন্ধ ছিল। কিন্তু গত সোমবার রাতে কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষনাকে কেন্দ্র করে আবারো প্রকাশ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিবাদ দু’টি গ্রুপ।

মঙ্গলবার কমিটি বাতিলের দাবীতে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে পদবঞ্চিতরা। এসময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে এক সাংবাদিকসহ তিনজন আহত হয়। আজ বুধবার বুধবার আবারো বিবাদমান দু’টি গ্রুপ সংঘর্ষে হয়। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে ব্যাপক ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসময় প্রকাশ্য অস্ত্র হাতে গুলি ছুঁড়তে দেখা যায় এক যুবককে। কয়েকজন যুবককে দেশীয় অস্ত্র হাতে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া দেয় ।

দেশের প্রাচীনতম ও বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের প্রকাশ্য অস্ত্রের মহড়ায় আতংকিত শিক্ষার্থী, অভিবাবক ও স্থানীয়রা। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রাম কলেজের পাশে অবস্থিত মহসিন কলেজ ও ৩টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে।

চট্টগ্রাম কলেজে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়া। ফাইল ছবি।

জানা যায়, চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ থেকে শিবিরকে বিতাড়িত করতে নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ নুরুল আজিম রনি ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুর মোস্তফা টিনু অনুসারীরা এক জোট হয়ে কাজ করে। কিছুদিন নিজেদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকলেও বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে উভয় গ্রুপ কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে। তারা এর আগেও ২০১৬ সালে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছিল। এই দুই গ্রুপের কোন্দলের অনেক নিরীহ শিক্ষার্থীকে হয়রানির শিকার হতে হয়। চকবাজার থানার একজন ওসিকে বদলী করা হয়েছিল দুই গ্রুপের কোন্দলের কারনেই।

বুধবার সংঘর্ষের বিষয়ে স্থানীয়রা জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের একটি মিছিল গণি বেকারি মোড় থেকে এসে কলেজের সামনে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। তারা পুলিশের ধাওয়া খেয়ে সংগঠিত হয়ে পিস্তল, দা, ছোরা, রামদা হাতে দুপুর ১টার দিকে ফের মিছিল নিয়ে কলেজের সামনে আসে। এসময় পুলিশ ও প্রতিপক্ষের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া যায়। এসময় এক ছাত্রীসহ ৫জন আহত হয়।

চট্টগ্রাম কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমি বড়ুয়া নিজের আতংকের কথা জানিয়ে পাঠক ডট নিউজকে বলেন, কলেজে এসে ছিলাম ক্লাস করতে। কিন্তু সংঘর্ষের কারনে ক্লাস হয়নি।  মঙ্গলবার মা বাসা থেকে আসতে দিচ্ছিলোনা তারপরও আসলাম। এসে দেখি আজ আরও খারপ অবস্থা। এভাবে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। আমরা শিক্ষার জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস চায়। আমরা বিগত দুই তিন বছর এই ঝামেলাগুলো দেখতে পাচ্ছি।

.

চট্টগ্রাম কলেজ স্কুলের এক ছাত্রকে নিয়ে আসা তার অভিবাবক হুমায়ন কবির বলেন, সোমবার ঝামেলা হয়েছিল শুনে মঙ্গলবার নিজইে সন্তানকে নিতে আসলাম।  এসে দেখি আরো খারপ অবস্থা। ছোট ছোট পোলাপাইন অস্ত্র হাতে মিছিল করছে। আমাদের সন্তানরা কি শিখবে। আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে নিরাপদে থাকতে চাই।

চকবাজার এলাকার দেবপাহাড় মোড়ের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাঠক ডট নিউজকে বলেন, ভাই কি আর বলবো এভাবে কি চলতে পারে। কিছু দিন পরপরই তারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে। আর আমাদের দোকান পাট ভাংচুর করে। আমরা এই এলাকার ব্যবসায়ীরা খুবই সমস্যা আছি।

চট্টগ্রাম কলেজের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভাই আমরা শিক্ষক হয়েও খুব আতংকের মধ্যে আছি। বহিরাগতরা এতে শিক্ষক ছাত্রদের হুমকি দেয়। কিছুদিন পরপরই এভাবে মারামারি হয়। কি করবো আমরা বুঝতে পারছিনা।

দু’গ্রুপের সংঘর্ষের কারনে আতংকিত কিনা জানতে চাইলে আগ্রাবাদ টু চকবাজার রোড়ে চলাচলকারী টেম্পু চালক সহিদ জানান, আতংকতো লাগবেই। তারা মারামারি করলে এতে গাড়ী ভাংচুর করে। তাই গত দুইদিন গাড়ী কম চালিয়েছি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ঘোষিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল বলেন,ঘোষিত কমিটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। কমিটিতে থাকা অনেকে ছাত্রদল ও শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল । ছাত্রত্ব নেই এমন অনেককে কমিটিতে রাখা হয়েছে। আমি এই কমিটি মানিনা তাই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দস্তগীর চৌধুরী পাঠক ডট নিউজকে বলেন, গত দুইদিন কলেজের ভিতরে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিছু অছাত্র রাস্তায় এসে বিশৃঙ্খলা করছে। এখানে কলেজের কেউ নেই। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে। যারা রাস্তায় বিশৃঙ্খলা করছে তাদের চিহিৃত করা যাচ্ছেনা তারা কোথাকার শিক্ষার্থী। যারা বিশৃঙ্কলা করছে তাদের অধিকাংশের বয়স ৩০ এর উপরে অনেকে আছে ছোট ছোট বাচ্চা। আমি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের কাউকে দেখিনাই। আর পদবঞ্চিত কেউ ছিলোনা।

.

ঘোষিত কমিটির অনেকে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কলেজের কমিটিতে ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের কোন ছেলে আসার প্রশ্নই আসেনা। যারা অভিযেগা করছে এটা সম্পূর্ণ অসত্য। কমিটিতে কেবল যারা ছাত্রলীগ করে তাদেরই স্থান দেয়া হয়েছে।

ঘোষিত কমিটির অনেকের ক্ষোভের বিষয়ে তিনি বলেন, একটি ইউনিটে দীর্ঘদিন কমিটি না থাকলে যা হয়। সবাইতো রাজনীতি করে। কাংখিত পদ না পেয়ে অনেকের ক্ষোভ থাকবেই । সবাই সভাপতি সেক্রেটারী হতে চায়। মহানগর ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী আছে সবাইতো আর সভাপতি সেক্রেটারী হবেনা। হবে দুইজন। সংগঠন করতে হলে নেতৃত্বকে মানতে হবে।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার (চকবাজার জোন) নবেল চাকমা বলেন, কমিটি গঠন নিয়ে গত দুই দিন কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print