ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

লোহাগাড়া জামায়াত নেত্রী’র পুত্র আরিফকে ছাত্রলীগের সভাপতি করার তোড়জোড়!

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

নাম তার আরিফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা সদর বটতলী মোটর ষ্টেশনে দীর্ঘদিন ‘কেন্ডি’ নামের ‘চা’ দোকান করার করতো। লোহাগাড়া উপজেলা সদরের দর্জি পাড়ায় তার বাড়ী। মা দিলু আরা বেগম মহিলা জামায়াতের রুকন। বাবা সামশুল আলম বিএনপি’র কর্মী।

বিএনপি-জামায়াত ঘরনার এই যুবককে লোহাগাড়া ছাত্রলীগের সভাপতির তোড়জোর চলছে বলে নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা চলছে।

জানাগেছে-মামলা-হামলা থেকে বাঁচতে পারিবারিক ইচ্ছায় মা-বাবা ছেলে আরিফকে কৌশলে যুবলীগের রাজনীতিতে ঢুকিয়ে দেয়।

.

অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি ঘোষিত উপজেলা যুবলীগের কমিটিতে কোন স্থান না হওয়ায় এখন উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে শীর্ষ নেতৃত্বে আসতে মরিয়া এই আরিফ।  দলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দীনের পেছনে ছুটছেন বেশ কিছুদিন ধরে। আর এমন একজন জামায়াত ঘরাণার বিতর্কিত যুবক আরিফুল ইসলাম আরিফকে লোহাগাড়া-উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি করে নতুন কমিটি ঘোষণার তোড়জোড় বলে জানাগেছে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দীনের কোটায় আরিফ সভাপতি এবং স্থানীয় দলীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা নদভীর কোটায় শফিউল আজম জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কমিটি প্রায় চূড়ান্ত এমন কথা ছাত্রলীগ কর্মীদের মুখে মুখে। যে কোন দিন ঘোষণা আসতে পারে উপজেলা ছাত্রলীগের।

তবে বিষয়টি অস্বিকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দীন। তিনি পাঠক ডট নিউজকে বলেন, এখনো কাউকে চুড়ান্ত করা হয় নি।  অনেকে প্রার্থী আছেন।  যে কেউ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে পারেন। আরিফও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন। কাউকে আমরা চুড়ান্ত করিনি।  সব প্রার্থীর ব্যাপারে যাচাই বাছাই চলছে এবং এমপি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সবার গ্রহণযোগ্য ও দলের জন্য ত্যাগীদের প্রধান্য দিয়ে কমিটি দেয়া হবে।  জামায়াত বিএনপি ঘরনার অভিযোগ উঠলে তা যাচাই বাছাই করা হবে।

তবে আরিফকে তিনি দলীয় কর্মী হিসেবে ৪ বছর ধরে মিটিং মিছিলে দেখেছেন বলে জানান।

 এ প্রসঙ্গে চটগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, লোহাগাড়ায় আসলে অনেকেই প্রার্থী হয়েছে। আরিফও একজন প্রার্থী আরিফের বিরুদ্ধে লোহাগাড়ার অনেকেই বিভিন্ন অভিযোগ করেছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, কমিটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সাথে সেল্পিতে আরিফ।

এদিকে, লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় একাধিক নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, আরিফ ২০০৯ সালে আমিরাবাদ সুফিয়া আলিয়া মাদ্রাসা হতে দাখিল পাশ করেন। এরপর ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম হাজী মহসিন কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হন। ২০১১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পর পড়ালেখার প্রাথমিক ইতি টানেন। প্রায় ৩ বছর বেকার জীবন-যাপনের পর লোহাগাড়া উপজেলা সদরের বটতলী মোটর ষ্টেশনে ‘ক্যান্ডি’ নামের দুটি চা-কফির দোকান খুলে বসেন। দীর্ঘ ৩/৪ বছর চা-কফি ও বিরাণীর দোকান চালাতে গিয়ে অনেক টাকার দেনা পড়ে যায় তার। এখনও মোটর ষ্টেশনের কামাল ষ্টোর নামের মুদির দোকানের মালিক রিদুয়ানুল হক ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, আনু আহমদ নামের এক মুরগীর দোকানদার সাড়ে ১৯ হাজার, শহিদুল ইসলাম নামের সবজির দোকানদার ১৩ হাজার ও সাহাব উদ্দীন নামের মাংসের দোকানদার ১২ হাজার টাকা পাওনা আদায়ের জন্য তার পেছনে-পেছনে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

দেনার ভারে বর্তমানে ক্যান্ডি নামের চা’র দোকানটি সাময়িক বন্ধ রেখেছেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, আরিফ শুধু চা দোকানী নয়। সে একজন প্রতারকও। চেক প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলাও রয়েছে।  এছাড়াও বর্তমানে সে জি.আর মামলা নং-২০০/১৪ এর গ্রেফতারী পরোয়ানা মাথায় নিয়ে খুব দাপটের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

অন্যদিকে দলীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার ৫/৬ মাস পর জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ সকল উপজেলা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। উদ্যোগের প্রক্রিয়া হিসেবে গত ২৩ মে লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিসহ কয়েকটি উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগ।

দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম বোরহানের সাথে আরিফ।

সে সময় নতুন কমিটি গঠনে গ্রুপিং-কোন্দল ও বিতর্ক এড়াতে ঢাকার সচিবালয়স্থ ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি’র কার্যালয়ে একটি সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকে ভূমি প্রতিমন্ত্রীসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমদ, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাথে সমন্বয়ের ভিত্তিতে স্ব-স্ব উপজেলা কমিটি ঘোষণার সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে গত ২০ জুন সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু, লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে গৃহীত সিদ্ধান্তের উল্টো পথে হাঁটছেন দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ।

কমিটি গঠনের জন্য জেলা ছাত্রলীগ কর্তৃক ডিও (চাহিদাপত্র) চাওয়া হলে গত ১১ সেপ্টেম্বর লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে মিজানুর রহমান মিজানের নাম দলীয় প্যাডে ‘ডিও’ আকারে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবরে প্রস্তাবপত্র প্রেরণ করেন।

ইতোপূর্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা নদভী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শফিউল আজম জুয়েলের নাম জেলা ছাত্রলীগ বরাবরে ডিও আকারে প্রস্তাবপত্র প্রেরণ করেন। কিন্তু, জেলা ছাত্রলীগ এমপি নদভীর কোটা অনুযায়ী শফিউল আজম জুয়েলের নাম চূড়ান্ত করলেও অদৃশ্য কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবপত্রকে উপেক্ষা করে মহিলা জামায়াত নেত্রীপুত্র, অ-ছাত্র ও চা দোকানী আরিফকে সভাপতি করে কমিটি ঘোষণার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জেলা ছাত্রলীগ থেকে আমার কাছে ডিও চাওয়া হলে আমি যথানিয়মে জেলা ছাত্রলীগের নিকট গত ১৩ সেপ্টেম্বর ডিও প্রেরণ করেছি। কিন্তু, আমার ডিও উপেক্ষা করে মহিলা জামায়াতের রুকনের পুত্র, অ-ছাত্র ও চা’য়ের দোকানদারকে সভাপতি করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ এমন তথ্য আমি জানতে পেরে রীতিমত হতভাগ হয়েছি।  যদি এরকম কিছু হয় তাহলে উপজেলা আওয়ামী লীগ এ কমিটি মেনে নেবো না।

এ প্রসঙ্গে লোহাগাড়া বটতলী শহর উন্নয়ন কমিটির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আলহাজ্ব মামুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, আরিফকে দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্ডি নামের চা দোকান করতে দেখেছি। সে কখন রাতারাতি ছাত্রলীগ নেতা হয়ে গেল ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।

এছাড়াও তার মা মহিলা জামায়াতের রুকন হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় পরিচিত।

লোহাগাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হামিদ বেঙ্গল বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ অবস্থায় চিহ্নিত ও এলাকায় পরিচিত মহিলা জামায়াতের রুকন পুত্রকে ছাত্রলীগের সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বিবেচনা করা মোটেই কাম্য নয়।

একই প্রসঙ্গে লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান মুজিব বলেন, জামায়াত নেত্রীপুত্র, অ-ছাত্র, প্রতারক ও চা দোকানীকে ছাত্রলীগের সভাপতি বিবেচনা করা মানেই ছাত্ররাজনীতিতে অশুভ সংকেতের গন্ধ। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

এ প্রসঙ্গে সদ্য বিলুপ্ত লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, আমি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তাকে সক্রিয়ভাবে কোনদিন দেখিনি। শুধু নেতাদের সাথে ছবি ও সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট দিতে দেখেছি। এছাড়াও তার মা মহিলা জামায়াতের রুকন। তাকে দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্ডি নামের চা দোকান করতে দেখেছি এটা স্টাবলিষ্ট বিষয়।

উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সক্রিয় নেতা রবিউল ইসলাম রুবেল বলেন, চা দোকানী ও মহিলা মহিলা জামায়াতের রুকনপুত্রকে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে আনা মানেই আওয়ামী রাজনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া। কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে তাকে নেতৃত্বে আনা হচ্ছে জানি না। তবে, চা দোকানী আরিফের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের কোন কমিটি আমরা মেনে নেবো না।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print