ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

তাবলিগের দু’পক্ষের কোন্দল উসকে দিচ্ছে হেফাজত!

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে দু’পক্ষের সংর্ঘষের পর তাবলিগ জামাতের দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। অভিযোগ আছে, সরকার আলোচনার মাধ্যমে দ্বন্দ্ব নিরসনের উদ্যোগ নিলেও বিষয়টি উসকে দিচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। সরকারের পক্ষ থেকে দুপক্ষকে কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাদ বিরোধীদের নিয়ে বিক্ষোভ করছেন হেফাজতের অনুসারীরা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন মসজিদে সাদ অনুসারীদের ওপর হামলা, মারাধর ও হেনস্তার অভিযোগও পাওয়া গেছে। সাদ বিরোধীদের সমর্থন দিয়ে সারাদেশে সাদের অনুসারীদের প্রতিহত করা ও মামলা করার জন্য হেফাজত প্ররোচনা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হেফাজতের নেতারা কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্র। তারা সাদবিরোধী তাবলিগ কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মাওলানা সাদের অনুসারী শুরা সদস্য ওয়াসিফুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন নাসিম ও মাওলানা মোশাররফের বিরুদ্ধে মামলা করার। এছাড়া, মামলায় স্থানীয় সাদের অনুসারীদের নামও অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মামলার নমুনা কপিও দেওয়া হচ্ছে। জেলা-উপজেলায় স্থায়ীয়ভাবে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করতেও বলা হয়। শিগগির বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষের ঘটনায় আগামী শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) বাদ জুমা সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে ‘সম্মিলিত ওলামায়ে কেরাম ও সর্বস্তরের তৌহিদি জনতা’ নামের একটি সংগঠন। বুধবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে করে তারা এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। মানববন্ধনে হেফাজত নেতা চকবাজার শাহী মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি মিনহাজ উদ্দিন ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। তারা সাদ অনুসারীদের অবাঞ্ছিত করার দাবি জানান।

ইজতেমা মাঠে ভীত-সন্ত্রস্ত এক শিশু
৩ ডিসেম্বর উত্তরার নিজ বাসায় হামলার শিকার হন সাদ অনুসারী তাবলিগকর্মী আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে ১০-১৫ জন আমার বাড়িতে আসেন। তারা জোর করে বাড়িতে ঢুকে আমাকে ও আমার ভাইকে মারধর করেন। নানাভাবে তারা আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।’

১ ডিসেম্বর সাভারের ব্যাংক কলোনিতে হামলার শিকার হন মনজুরুল ইসলাম (৬০)। হামলায় মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায় তার। এ ঘটনায় সাভার থানায় জিডি করেছে তার পরিবার। আহত মনজুরুল ইসলামের ছেলে জহির ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার বাবা মাগরিবের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন। তখন ব্যাংক কলোনির মাদ্রাসা ছাত্র বাবার সামনে আসে,তাকে মাদ্রাসার সামনে যেতে বলে। যেতে না চাইলে মাদ্রাসার ছাত্ররা বাবার জামার কলার ধরে মারধর শুরু করে। তাকে টেনে হেচড়ে মাদ্রাসার সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে আমার বাবাকে কয়েকবার আছাড় দেওয়া হয়। এ কারণে তার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে গেছে। বাবাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাকেও মারধর হয়। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

তাবলিগের দুপক্ষে বিভক্ত হওয়া নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য একাধিক বৈঠক করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। গত ১৫ নভেম্বর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলিগ জামাতের দুপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, তাবলিগ ও সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারত যাবেন। সেখানে সাদ ইস্যু নিয়ে দেওবন্দ ও নিজামুদ্দিনের মুরব্বিদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সংর্ঘষ এড়াতে তাবলিগের দুপক্ষের সব কার্যক্রমও স্থগিত রাখতে বলা হয়। সাদবিরোধী ও অনুসারী কেউই কোনও জোড়, ওজহাতি জোড় কিছুই করতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত হয়।

জানা যায়, ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীরে নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সমাবেশে হেফাজত মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, ‘ইজতেমার মাঠে আলেম ও ছাত্রদের যারা রক্ত ঝরিয়েছে, এদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। শহীদের রক্তের বদলা নিতে হবে। হামলার উসকানিদাতা ওয়াসিফুল ইসলাম, শাহাবুদ্দীন, ফরীদ উদ্দীন মাসউদ ও তাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমাবেশর জন্য সিএমপি কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে হবে।’

গত বছর থেকেই মাওলানা সাদবিরোধীদের সঙ্গে একাত্ব হয় হেফাজত। তাদের বিরোধিতার জেরে বাংলাদেশে এসেও ইজতেমায় যোগ দিতে পারেননি মাওলানা সাদ। ২৮ জুলাই হেফাজতপন্থী কওমি আলেমদের উদ্যোগে প্রথম তাবলিগ জামাত নিয়ে ওয়াজাহাতি জোড় (স্পস্টকরণ সভা) অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে হেফাজত আমির শাহ আহমদ শফী উপস্থিত ছিলেন। সভা থেকে ৬টি সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়। সিদ্ধান্তের মধ্যে— মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে আসতে না দেওয়া এবং তার অনুসারীদের বাংলাদেশে কাজ করতে না দেওয়া ছিল অন্যতম। এরপর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াজাহাতি জোড় করে আসছিলেন হেফাজত ও তাবলিগের কর্মীরা। সর্বশেষে ১৭ নভেম্বর শনিবার দুপুর থেকে রাজধানীর বারিধারায় ঢাকা মহানগর হেফাজতের অস্থায়ী কার্যালয়ে ওয়াজাহাতি জোড় অনুষ্ঠিত হয়। একই দিন চট্টগ্রামেও ওয়াজাহাতি জোড় অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে হেফাজত আমির উপস্থিত ছিলেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রসঙ্গে সাদবিরোধী তাবলিগের সাথী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম বলেন, ‘সারা দেশে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের দাবি তুলে ধরেছি। আহতদের নিয়েও সংবাদ সম্মেলন হবে। আরও বড় ধরনের কর্মসূচিও আসতে পারে।’

সাদ অনুসারী তাবলিগের মুরব্বি আব্দুল্লাহ মনছুর  বলেন, ‘সরকার সমাধানের চেষ্টা করলেও নানা কারণে সমাধান হচ্ছে না। কেউ কেউ বিরোধ বাড়াতে ষড়যন্ত্র করছে। সারাদেশে আমাদের অনেক সাথী নানাভাবে হামলা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। হেফাজত নানাভাবে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে দুপক্ষের কার্যক্রম স্থগিত রাখার কথা বলা হলেও তারা মানছে না। এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।’

সূত্র-বাংলা ট্রিবিউন

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print