
চট্টগ্রাম বিভাগীয় মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বুধবারের মতবিনিময়কালে কর্মকর্তাদের মুখে শুধু প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বন্দনা করতেই দেখা গেছে।
মতবিনিময়ের শুরুতে সভার সভাপতি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. আবদুল মান্নান আগত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে একাধিকার ঘোষণা করেন যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয় আপনাদের কার এলাকায় কি সমস্যা আছে তা শুনবেন এবং নোট করে পরবর্তীতে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন। কিন্তু তাঁর সে ঘোষণাকে কেউ আমলে নেননি।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ২৪ জন কর্মকর্তা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে সিইসি, ইসি, ইসি সচিব ছাড়া বাকীদের মধ্যে সকলের বক্তব্যে ছিল সিইসি’র প্রতি বন্দনায়।

নির্বাচনের মাঠে বিশেষ করে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারনায় সরকারী দলের লোকজেনর বাধা প্রদানসহ সাম্প্রতিক সময়ের ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সহিংস ঘটনা গুলো নিয়ে কোন কর্মকর্তাই কোন কথা বলেননি। যাদের নাম ঘোষণা হয়েছে তারাই মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়িয়ে সিইসি’র প্রশংসা করেছেন। এর মধ্যে ব্যতিক্রম দেখা গেছে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান এবং র্যাব-৭ এর পরিচালক কর্ণেল মিফতাহ উদ্দিনকে।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রামে তিনটি উপজেলা নির্বাচনের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং সহিংস এলাকা। এগুলো হচ্ছে কক্সবাজারের মহেশখালি,চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি এবং সন্দ্বীপ। ইতিমধ্যে এসব এলাকায় একাধিক সহিংস ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি উল্লেখ করে এসব এলাকার আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি বিশেষ নির্দেশনা দেয়ার জন্য সিইসির প্রতি তিনি অনুরোধ জানান।

এছাড়া র্যাব-৭ এর পরিচালক কর্ণেল মিফতাহ উদ্দিন বলেন চট্টগ্রাম র্যাব ৭ এ র্যাবের অফিসার সংকট রয়েছে। তিনি নির্বাচনে যথাযথ দায়িত্বপালনের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় সংখ্যক র্যাব অফিসার প্রদানের জন্য সিইসি’র প্রতি অনুরোধ জানান।
এ ছাড়া মতবিনময়কালে তিনজন জেলা প্রশাসক, কুমিল্লা এবং কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, জেলা আনসার কমান্ডার, আনসারের উপ-মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের কোতোয়ালী ,ফেনী সদর থানার ওসি, লক্ষীপুর সদর এবং বি বাড়িয়ার উপজেলা নির্বাহী কমকর্তাসহ ২০ জন কর্মকর্তা বক্তব্য রাখেন।
এসকল কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনে মনে হল নির্বাচনের চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুরো পরিস্থিতি যেন নির্বাচন কমিশনের অনুকুলে আছে। অথচ একই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফটিকছড়ির একটি ঘটনায় একজনের বৈধ অস্ত্র জব্দ করেছেন বলে সিইসিকে অবহিত করলেও কি ঘটনা ঘটেছিল তা জানাননি।
এ ছাড়া গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার ড. আবদুল মান্নান তার আগের দিন ১৬ ডিসেম্বও বিএনপি প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমানের বিজয় র্যালিতে হামলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে সে কথাও তিনি সিইসিকে জানাননি। জেলা প্রশাসকের অফিসে চট্টগ্রাম জেলার ১০টি আসনের বিরোধী বিভিন্ন দলের প্রার্থী নির্বাচনে মাঠে যে হামলা এবং পুলিশি হয়রানিসহ মামলার শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেছেন তাও তিনি সিইসিকে অবহিত করেননি। সকলের বক্তব্যে শুধু সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনের প্রশংসাতেই ভরপুর হয়ে উঠে।