আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অন্তিমক্ষণ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে চট্টগ্রামে বেড়ে চলেছে উৎসবের আমেজ। নগরীর পাড়া মহল্লা ও গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে প্রতিদিন বসছে উঠান বৈঠক। চলছে নির্বাচনী গণসংযোগ, বিলি হচ্ছে লিফলেট। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন আশার বাণী।
আবার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা, ভাংচুর, দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা এবং পুলিশি হয়রানির অভিযোগের পরিমাণ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত চট্টগ্রামের কয়েকটি আসনের প্রার্থীদের গণসংযোগ, প্রচার প্রচারণা ও টুকিটাকি নিয়ে সংবাদটি তৈরি করা হয়েছে।
নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচারণায় মাঠে নেমেছে চট্টগ্রামের খেলোয়াড়রা : নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে সমর্থন জানিয়্ েমাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশন। শনিবার সকালে কাজির দেউড়ির এম এ আজিজ স্টেডিয়াম এলাকায় প্রচারণা ক্যাম্প উদ্বোধন ও জমকালো র্যালী বের করা হয়। র্যালীটির নের্তৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। র্যালিটি নগরির কাজীর দেউড়ি মোড় প্রদক্ষিন করে আবার স্টেডিয়াম এসে শেষ হয়। এতে ৩ শতাধিক খেলোয়াড় সহ ফুটবল এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
নিরপেক্ষ ভোট হলে বাঁশখালিতে নৌকা প্রার্থী জামানত হারাবে : শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত জাতীয় পার্টির এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালি) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী দাবী করেছেন নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বাঁশখালী আসনে নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান জামানত হারাবে। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) বাঁশখালীর উত্তর চাম্বল এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদুুল ইসলাম চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে আরো অভিযোগ করে বলেন, চাম্বল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুল হকের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় ২৫ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। এরপর বিকেলে জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় আবারও গুলিবর্ষণ করা হয়। তিনি বলেন, হামলার শিকার হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তাকে এবং তার নেতাকর্মীদের থানা থেকে বের করে দেন। তাছাড়া উল্টো তাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেন। তিনি বলেন, যার জনপ্রিয়তা নেই, তারাই হামলা চালায়। তারাই প্রশাসনকে সাথে নিয়ে জোর দেখায়, ডাকাতি করে ভোট নিতে চেষ্টা করে। তার দাবী, বাঁশখালী আসনে এবার লাঙ্গল ও ধানের শীষের মধ্যে প্রতিদ্বন্ধীতা হবে।
গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচারণায় প্রার্থীরা : চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী এম এ লতিফ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পুনরায় নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট আসনের ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি শুক্রবার রাতে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় গণসংযোগ গণসংযোগকালে এ আহবান জানান। শনিবার সকালে এ আসনের ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের মেহের আফজল স্কুল এলাকায় গণসংযোকালেও তিনি নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড চলমান রাখতে ভোটারদের কাছে প্রার্থণা করেছেন। এছাড়া সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই এলাকার বাকের আলী ফকিরের টেক-কলসী দীঘির পাড়-ইপিজেড-বন্দরটিলা আলী শাহ মসজিদ সংলগ্ন বিভিন্ন মহল্লায় ভোটারদের লিফলেট বিতরণ করা হয়। গণসংযোগকালে তার সাথে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নোমানের গণসংযোগঃ আরো একটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেছেন নির্বাচন কমিশনারের কথা আর কাজে কোন ধরনের মিল নেই। তিনি চোরকে বলছে চুরি করতে আবার গৃহস্থকে বলছে সজাগ থাকতে। তার এ নীতি অবলম্বনের কারণেই এখনো পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। শনিবার বিকেলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান নগরীর খুলশী থানার ওয়ার্লেস, ঝাউতলা, আমবাগান, বিহারী কলোনি এলাকায় গণসংযোগকালে এ মন্তব্য করেন। প্রচারণার সময় তার এলাকার ভোটারদের সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ১০ বছরে ঘটে যাওয়া নির্যাতন দুর্ণীতির উপযুক্ত জবাব দিতে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য আহবান জানান। তার নির্বাচনী গণসংযোগে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নের্তৃবৃন্দরা অংশগ্রহণ করেন।
সীতাকুণ্ডে নৌকার প্রচারণায় দিলসাদঃ
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী আলহাজ্ব দিদারুল আলম এর পক্ষে গণসংযোগ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সিনিয়র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আ.ম.ম দিলসাদ। আজ শনিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের পাক্কা মসজিদ,ঘোড়ামড়া এলাকায শতাদিক নেতা-কর্মী নিয়ে হিন্দু ও জেলে পাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগে অংশ নেন। সকাল ১০ টা থেকে দিনব্যাপী গণসংযোগে তিনি নৌকা প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। এসময় দিলসাদ বলেন, নৌকা এদেশের স্বাধীনতার প্রতীক, বঙ্গবন্ধুর প্রতীক, নৌকায় ভোট দেওয়া মানে দেশের উন্নয়ন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে তা অব্যাহত রাখতে আবারো পুনরায় শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের উদ্যেগে সীতাকুণ্ডের আনাচে কানাচে, গ্রামগঞ্জে যেভাবে উন্নয়নের ছোয়াঁ লেগেছে তা সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। তাই সমগ্র উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে নৌকার বিজয় করা ছাড়া বিকল্প পথ নেই।
