
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম রসুল নিশানকে অপহরণের ঘটনার জের ধরে শুক্রবার রাতভর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
নিশান শার্টল ট্রেন ভিক্তিক ছাত্রলীগের উল্কা গ্রুপেরও নেতা। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও বিস্তারিত জানাতে পারেন নি।
ক্যাম্পাস সুত্রে জানাগেছে- শুক্রবার সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর লালখান বাজার থেকে গোলাম রসুল নিশান অপহরণ করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে উদ্ধারও করা হয়।
এদিকে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়লের চবি ক্যাম্পাসে নিশানের অনুসারী ছাত্রলীগের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট ও এক নম্বর গেট এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে।

ছাত্রলীগের এ অংশের অভিযোগ ছাত্রলীগের ‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপের নেতা ও একই কমিটির সহসভাপতি মনসুর আলম, উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল টিপু এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশের নেতৃত্বে এই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষ অন্তত ১০জন আহত হয়। তারা হলেন- ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের মিলন, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের সাংবাদিকতা বিভাগের শামীম, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ধ্রুব, পদার্থবিদ্যা বিভাগের আনিস, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগের মাহমুদুল ইসলাম ও মামুন ইসলাম, একই শিক্ষাবর্ষের সাদ্দাম হোসেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অর্ণব ইসলাম, আরবি বিভাগের ইমাম, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অভয় ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সৌরভ তালুকদার। এদের মধ্যে তিনজনের মাথায় ও চোখে আঘাত লাগায় চমেকে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উল্কা গ্রুপের নেতা সুমন খান বলেন, রাতে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপুর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় মনসুর আলম, ইকবাল টিপু ও আবু তোরাব পরশের নেতৃত্বে তাকে অপহরণ করা হয়। আবার আমরা অবরোধ করতে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা মনসুর আলম বলেন, ‘ওর (নিশান) সঙ্গে কী হয়েছে, কে বা কারা অপহরণ করেছে আমরা এ ব্যাপারে জানি না, অবগত নই। আমি তো ফেসবুকে জানলাম। আমাদের বিরুদ্ধে কেউ যদি অভিযোগ করে করে থাকে সেটা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে করেছে। আমাদের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে তারা ঈর্ষান্বিত বলেই এমন অভিযোগ তুলছে। এ ব্যাপারে কথা বলতেও আমার লজ্জা লাগছে।’
উল্লেখ্য, নিশান শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ও ‘উল্কা’ গ্রুপের নেতা।
গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে একই কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় লালখান বাজার মোড় থেকে অপহৃত হন। আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে টাইগারপাসে ঝাউতলা স্টেশনের পাশের একটি পাহাড় থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) পাঠানো হয়।
এ সময় তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এছাড়াও প্লাস দিয়ে নখ তুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।