ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

গ্রাম পুলিশের পোষাকে কষ্টের গল্প শুনালেন শিশু মানিক

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

pict manik 29.8.2016-4দুই ভাইয়ের মধ্যে মানিক বড়ো। পুরো নাম মাঈনউদ্দীন মানিক। একমাত্র আদুরে ছোট ভাই বাবুল। মা ও ছোট ভাইয়ের মুখে দু’বেলা আহার জোগাড়ে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরন্তর সংগ্রাম করে যাচ্ছেন ১৩ বছরের মানিক। এই মানিক এখন গ্রাম পুলিশের পোষাক পরেই অনিয়মিত চাকরী করেন কক্সবাজারের পেকুয়া থানায়।

যে বয়সে হেঁসে খেলে সময় বয়সী শিশুদের সাথে ঘুরে বেড়ানো এবং বই হাতে স্কুলে যাওয়ার কথা সে বয়সে মানিক কাজ করছে থানায়।

১০ আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাবা দফাদার ( গ্রাম পুলিশ প্রধান) আকরম মিয়া চলে যান না ফেরার দেশে।

pict manik 29.8.2016উত্তরাধিকারের জন্য বাবা শুধু রেখে গেছেন‘ গ্রাম পুলিশ’ এর একজোড়া পোষাক। এই পোষাকটিই তার একমাত্র সম্বল। মায়ের বোঝা না হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতেই এখন চাকরি বেছে নিয়েছেন মানিক। থানার স্যারদের ( এসআই, এএসআই ও কনষ্টেবল) চা, নাস্তা, পানি ও হালকা কাজগুলো করাটা ঝক্কি-ঝামেলার হলেও এটাকে খুব উপভোগ করছেন শিশু মানিক।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সুতাচুরা ঠান্ডাপাড়া গ্রামে বসবাস মানিকদের। বাবা আকরাম মিয়া ইউনিয়নের দফারদার (গ্রাম পুলিশ) পেশায় দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। আকরাম দফাদারের ছিলো এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি। বিশ্বস্থ ছিলেন বলে থানা পুলিশও তাকে বেশ ভালো চোখে দেখতেন। তার তিন ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে মাসে মাত্র ৩ হাজার টাকা বেতনে সংসার খুব সুখেই চলছিল। কিন্তু সেই সুখ তাদের সংসারে বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মরণ ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় গত ১০ বছর আগে মারা যান আকরাম মিয়া দফাদার। বাবার মৃত্যুর কয়েক বছর পর মারা যান মানিকের আরেক ভাই। পিতৃহীন দু’ছেলে মাঈনউদ্দীন ও বাবুল নিয়ে মা মুশারমা বেগম এখন অসহায়।

গত ২৯ আগস্ট কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়ন’ কক্সবাজার জেলা সম্মেলনে মরহুম বাবার পক্ষে বাবারই রেখে যাওয়া একজোড়া পোষাক পড়ে অংশ নেন শিশু গ্রাম পুলিশ মানিক। সোমবার দুপুরে তার সাথে কথা হয় কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে। চোখে মুখে বিষন্নতার চাপ।

pict manik 29.8.2016-3মানিক শুনালেন তার ট্রাজেডিপূর্ণ জীবনের গল্প। সে নিজে কোন দিন স্কুলে যাননি। গবীর বলে বাবার মৃত্যুর পর ছোটভাই বাবুলের সে সুযোগ হয়নি। পরিবার থেকে পড়াশুনার খরচাদি না পাওয়ায় বেকারত্ব জীবন ভালো লাগে না মানিকের। বাবার মৃত্যুর পর কাফনের কাপড় কেনার টাকা না থাকার কথা প্রতিবেশিদের মুখ থেকে শুনেছে। চাঁদা উত্তোলন করে কাফনের কাপড়ে কিনে গ্রাম পুলিশ প্রধান আকরাম মিয়াকে দাফন করা হয়েছিল।

সারাজীবন তার বাবা গ্রাম এবং গ্রামের মানুষ পাহারা দিয়েছেন। কিন্তু দু’বেলা দু’মুঠো ভাত ছাড়া আর কিছুই জুটেনি। সহায় সম্বল বলতেও কিছুই রেখে যেতে পারেনি। এরপরেও শিশু মানিকের অনেক আগ্রহ, বাবার মতোই সে গ্রাম পুলিশ হবেন। সেই আকাঙ্খকা বুকে লালন করেই ছুটে এসেছে ‘বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়ন’ কক্সবাজার জেলা সম্মেলনে। বাবা রেখে যাওয়া গ্রাম পুলিশ পোষাক পরেই অনুষ্ঠানস্থলে সবার সাথে ব্যস্ততম সময় পার করেন মানিক।

মানিক জানালেন, বাবা নেই, এখন মাও অসুস্থ। বয়স না হওয়ায় তার চাকরিও হয়নি। এখন শুধু তার দাবী অন্তত মরহুম বাবার পদে তার মা’কে নিয়োগ দেয়া হোক।

লেখাপড়ার অধির আগ্রহ থাকার পরেও আর্থিক অভাবে তা হচ্ছে না। বয়স মাত্র ১৩ বছর। চাকরির বয়স হয়নি, এরপরেও মায়ের বোঝা হয়ে থাকতে পছন্দ নয় বিধায় শিশু মানিক পেকুয়া থানায় স্যারদের হালকা কাজগুলো করছেন জানিয়ে মানিক বলেন, ‘আমাদের ছোট পরিবার, মা এবং ছোট ভাই দু’জনই অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। মাও বর্তমানে অসুস্থ। তারপরও আমার বাসায় বসে থাকতে ভালো লাগে না।

শিশু বয়সে থানায় চাকরিটা অনেক কষ্টের হলেও এনজয় করছেন জানিয়ে শিশুমানিক বলেন, ‘যখন আমি স্যারদের কাছে চাকরি করছি সবাই আমাকে স্নেহ করেন। অস্থায়ী চাকরি পেয়ে এখনও এনজয় করছি। যখন ভালো লাগবে না তখন ছেড়ে দিব। সবাই আমাকে অনেক আদর এবং করুনা করে টাকা পয়সাও দেন। সবাই ভালো বলছে। দিনে ৫০/১’শ টাকা পাই। এসব টাকা দিয়ে ভাই ও মাকে নিয়ে আছি বেশ ভালো’।

সর্বশেষ

০৯ নং ওয়ার্ড জাসাস কমিটি অনুমোদিত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৪৭ বছর ⦿বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print