ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

সিলেটের ভ্রমণে । এবার ছুটিতে বেড়িয়ে আসতে পারেন রাতারগুল, বিছানাকান্দি ও জাফলং!

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

পাহাড়ের শহর সিলেট। সবুজের শহর সিলেট। গত বছরের এপ্রিলে আমরা বন্ধু-কলিগরা মিলে সিলেট ভ্রমণ করে এলাম। এবারের টার্গেট ছিল রাতারগুল সোয়ার্ম ফরেস্ট ও বিছানাকান্দি দেখা, সেই সাথে তৃতীয়বারের মতো দেখে এলাম জাফলং। ট্যুর ছিল দুইদিনের।

সিলেট ভ্রমণ প্রারম্ভ
আমরা ঢাকা থেকে রাতের বাসে রওনা দিয়ে সকালে গিয়ে পৌঁছাই সিলেটে। গ্রীণলাইনের বাসের টিকেটের দাম হল ৯৫০ টাকা, ট্রেনে গেলে খরচ পড়বে ৭৫০ টাকার মতো। হোটেল আমরা আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছিলাম, সিলেট বাসস্টান্ড / ট্রেন স্টেশন থেকে মাত্র ২ কিলো দূরে মীরাবাজারের হোটেল সুপ্রিম সহজেই খুঁজে নিতে পেরেছি পৌঁছানোর পর। প্রতি রাতের খরচ পড়েছে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকার মধ্যে।

সিলেট ভ্রমণ পরিভ্রমণ
আমরা ঢাকা থেকেই পরিচিত একজনের মাধ্যমে একটি নোয়াহ গাড়ি ভাড়া করে রাখি , দুই দিনের জন্য ভাড়া ছিল ৮০০০ টাকা। ড্রাইভার ভালো ছিল, তবে এসব ক্ষেত্রে যেমন হয়, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কিছু ভাড়া বাড়িয়ে নেয়াড় চেষ্টা করেছিলো, সেক্ষেত্রে আমার পরামর্শ থাকবে প্রথমেই শক্তভাবে ডিল করলে পরে গিয়ে সমস্যা হবে না। আপনারা সিলেট পৌঁছানোর পর ও গাড়ি খুঁজে নিতে পারবেন হোটেল এর স্টাফদের সাহায্যে, সেক্ষেত্রে ভালোভাবে দামাদামিটা করে নিবেন। এছাড়া গাড়ি নিতে না চাইলে বাস পাবেন, কিন্তু বাসে হয়তো ঘোরার মজাটা পাবেন না, বাস বাদে আছে সি,এন,জি সেক্ষেত্রে একদিনের জন্য ১৫০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।

প্রথমদিন রাতারগুল ও বিছানাকান্দি
শহর থেকে বের হতে না হতেই চার ধারে পাহাড়ের সারি একদম মন ভালো করে দেয়। রাস্তাগুলো বেশ ভালোই বলা যায়। রাতারগুল পৌঁছাতে কতক্ষণ লেগেছিল মনে নেই, পৌঁছানোর পরে ওখানে নৌকা ভাড়া করতে হবে , প্রতি নৌকা ভাড়া ছিল ৭০০ টাকার মতো। সোয়ার্ম ফরেস্ট সম্পর্কে যারা বিশেষ কিছু জানেন না, গুগলে সার্চ করে পড়ে নিতে পারেন, দুই শব্দে বলতে গেলে এটি পানিতে ডুবে থাকা বন। অসম্ভব সুন্দর এই বন, আর নৌকায় যেতে যেতে চারিদিকের নিস্তব্ধতা , পানির শব্দ , বাতাসে পাতা নড়ার শব্দ আপনাকে অন্য এক জগতে নিয়ে যাবে।

.

রাতারগুলে নৌকা করে আমাদের নিয়ে যায় টাওয়ারের কাছে, এই টাওয়ারের উপর থেকে পুরো ফরেস্ট দেখা যায়। সেখানে কিছুক্ষণ কাটিয়ে আমরা আবার বনের ভেতর দিয়ে ফেরত আসি।

.

রাতারগুল দেখে আমরা দুপুরেই রওনা দেই বিছানাকান্দির উদ্দেশ্যে। বিছানাকান্দি পৌঁছাতে বিকাল হয়ে যায়। হাদারপাড় নৌকা ঘাটে পৌঁছে আমরা ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া নেই একটা , ভাড়া ছিল ১০০০ টাকার মতো ।

নৌকায় চড়ে বিছানাকান্দি যাওয়ার এই পথের সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। নিজের চোখেই দেখে আসুন , দেশের ভেতর এমন একটা জায়গা ভাবা যায় না। পানির উপরের মিষ্টি ঠাণ্ডা বাতাস , স্বচ্ছ পানি , চারিদিকে ঘেরা পাহাড় মিলিয়ে অসাধারণ এক পরিবেশ। পুরো পথ পাড়ি দিয়ে বিছানাকান্দি মেইন স্পটে পৌঁছালে স্বচ্ছ পানির নিচের পাথরের স্তর আপনাকে মুগ্ধ করবে। কাঁচের মতো এতো সুন্দর পানি আমি কখনো দেখিনি।

বিছানাকান্দি থেকে সন্ধ্যার পর আমরা ফিরে আসি হোটেলে, রাতে পৌঁছে সিলেটের বিখ্যাত পাঁচ ভাই-তে খেতে যাই, যদিও অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় তেমন কোন খাবার পাইনি, খুব ব্যস্ত হওয়ায় কারণে সার্ভিস ও ভালো ছিল না। সব মিলিয়ে পাঁচ ভাই-য়ে খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের ভালো ছিল না।

.

দ্বিতীয় দিন জাফলং
পরদিন আমাদের রওনা দিতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিলো। প্রথমে আমরা যাই জাফলং এ। জাফলং এ এটা আমার তৃতীয়বার যাওয়া, বলতে গেলে প্রতিবার ই গিয়ে আমি জাফ্লং এর অবস্থা করুণ থেকে করুণতর হতে দেখেছি। পাথর তুলে তুলে জাফ্লং এ দেখার মতো তেমন কিছু অবশিষ্ট নেই, পাহাড় বেয়ে নেমে ৫০০ টাকা দিয়ে নৌকা ভাড়া করে আমরা জাফলং মেইন স্পটে যাই, নৌকার পথ শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যায় এটি অল্প রাস্তা, ইন্ডিয়ার টেরিটরির পাশ দিয়েই সেখানে একটি মরণফাঁদ আছে যেখানে নাকি প্রতি বছর ই ১০/১২ জন মারা যায় বলে শুনলাম।

আমাদের সামনেই দুটি ছেলে তলিয়ে যাচ্ছিলো, একটি নৌকা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। তাই জাফলং যারা যাবেন খুব সাবধানে থাকবেন, দেখলে পানি অগভীর মনে হলে পাথর উঠিয়ে ফেলার কারণে অনেক জায়গা-ই ফাঁপা হয়ে গিয়েছে। জাফলঙ এ একটি ঝর্ণা আছে যেটি বেশ ভেতরে জাফলং থেকে। আপনাদের সময় থাকলে দেখে আসতে পারেন, আমরা যাইনি। আমাদেরকে জমিদার বাড়ি দেখানো নাম করে খাসিয়া পল্লীর ভেতরে সি,এন,জি দিয়ে নিয়ে যায় আমাদের মাঝি দেখানে আসলে দেখার মতো কিছুই নেই। একটি খুব ছোট চা বাগান আছে , এতোটুকুই। তাই আপনাদের এমন কোন জায়গার কথা বললে গিয়ে সময় নষ্ট না করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

দুপুরে আমরা জাফলং এর পাশেই একটি রিসোর্টের হোটেলে খাই, খাবার বেশ ভালো ছিল।

জাফলং ঘুরে আমাদের প্ল্যান ছিল লালাখালে ঘুরবো। কিন্তু লালাখাল ঘাটে পৌঁছে জানতে পারি ৫টার পরে আর নৌকা চলাচল নিষেধ। যাইহোক লালাখাল ঘাটের পাশের দোকানে চা সিঙ্গারা খেয়ে ঘুরে ফিরে আমরা ফিরে আসি হোটেল এ। সেদিন রাতেই রাতের ট্রেন ধরে রওনা দেই ঢাকার উদ্দেশ্যে। আমাদের সিলেট ভ্রমণ হল শেষ। ট্রেন জার্নি ভালোই ছিল, যদিও বাস বেশি কমফর্টেবল।

সবমিলিয়ে খরচ খুব বেশি না, তাই আসছে পুজা আড় আশুরার ছুটি মিলিয়ে দুইদিনে ঘুরে আসতে পারেন সিলেট, ঘরের কাছের স্বর্গ রাজ্যে।

সর্বশেষ

০৯ নং ওয়ার্ড জাসাস কমিটি অনুমোদিত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৪৭ বছর ⦿বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print