
সারি সারি ফ্রিজের ভেতর এক সঙ্গে রাখা হয়েছে পঁচা,বাসী রান্নাকরা ও কাঁচা মাংস। প্রতিদিন ভোক্তাদের নিকট এসব মাংসই গরম করে বিক্রি করা হয় ও পরিবেশন করা হয়। নগরীর জিইসি এলাকায় অবস্থিত বাসমতি হোটেলে অভিযান পরিচালনার সময় এ দৃষ্ট ধরাপড়ে ভ্রাম্যমান আদালতের চোখে।
এসব অনিয়মের অভিযোগে বাসমতি হোটেল কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের বাজার মনিটরিং টিম ইফতারি আইটেম বিক্রি ও রেস্টুরেন্টের বৃহত্তম এলাকা চট্টগ্রাম মহানগরীর বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। পবিত্র রমজান উপলক্ষে ভোক্তাদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ নিশ্চিত করতে আজ ইফতারি খাদ্যপণ্যের উপর এ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি), পতেঙ্গা সার্কেল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তাহমিলুর রহমান। তিনি জানান, অভিযানে নগরীর জিইসি এলাকায় বাসমতি হোটেলে প্রবেশ করতেই দেখা যায় ভবনের নীচ তলায় রমজান উপলক্ষে আলাদা একটি জায়গা তৈরি করে রাখা হয়েছে যেখানে সারি সারি ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর। ফ্রিজ খুলতেই দেখা গেল পুরনো বাসী খাবার সাথে রাখা আছে গরু-মুরগীর কাঁচা মাংস, আছে বাটা মশলা। বাসমতি রেস্টুরেন্টে সারি সারি ফ্রিজে স্টক করা আছে বিপুল পরিমাণ রান্না করা মাংস ও অন্যান্য খাবার।

নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এবং আইনে প্রণিত বিধিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে রান্না করা খাবার এবং কাঁচা-মাংস, মশলা এসব একসাথে রাখা যাবে না। এরপর দেখা যায়, ফ্রিজে বিপুল পরিমাণ ডাল্ডা।বাসমতি রেস্টুরেন্টের সামনে দোকানের বিক্রেতারা উচ্চ স্বরে ক্রেতাদের ডাকছেন ঘি-তে ভাজা জিলাপি ক্রয়ের জন্য। কিন্তু বাসমতি রেস্টুরেন্ট ভবনের গ্যারেজের ফ্রিজে ম্যাজিস্ট্রেট খুঁজে পেলেন ডালডার পসরা। বাসমতি রেস্টুরেন্ট কে এসব অপরাধ আমলে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

উল্লেখ্য যে, গত বছর রমজানেও বাসমতি রেস্টুরেন্টকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম পরিচালিত এক অভিযানে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। তাই একই ধরণের অপরাধ পুনরাবৃত্তির দায়ে এবার তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধ পুনরাবৃত্তি ঘটলে হোটেলের লাইসেন্স বাতিল সহ কঠোর শাস্তি আরোপ করা হবে এই মর্মে হোটেল ম্যানেজার দিলীপ এস রোজারিও মুচলেকা দেন।
এছাড়া জামান রেস্টুরেন্ট মেজবানি এন্ড কাবাবকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি, ফ্রিজে বাসী খাবার ও কাচা মাংস রাখার দায়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বাসমতি হোটেল ও জামান হোটেলের ফ্রিজ থেকে প্রাপ্ত বিপুল পরিমাণ বাসী খাবার, মাংস, ডালডা জব্দ করা হয় ও পরবর্তীতে তা ধ্বংস করা হয়েছে।
অভিযান টিমে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি),কাট্টলী সার্কেল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট,মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক ইয়াছিনুল হক চৌধুরী। এছাড়া অভিযানে বিএসটিআই প্রতিনিধি, সিএমপি পুলিশ, ক্যাব সদস্য উপস্থিত ছিলেন।