ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

মসজিদে মসজিদে ঘোষণা দিয়েও ভোটারদের কেন্দ্রে আনা যাচ্ছে না: সংসদে মেনন

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, নির্বাচন নিয়ে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। উপজেলা নির্বাচনেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মসজিদে মসজিদে ঘোষণা দিয়েও ভোটারদের আনা যায় না। এটা নির্বাচনের জন্য শুধু নয়, গণতন্ত্রের জন্যও বিপজ্জনক।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন মেনন। তিনি আর্থিক খাতের দুরবস্থা, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা ও উন্নয়ন বৈষম্যের কঠোর সমালোচনা করেন।

মেনন বলেন, রোগ এখন উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। পাঁচ দফা উপজেলা নির্বাচনে তাঁর দল, এমনকি আওয়ামী লীগের নিজ দলের প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা করুণ। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং তাঁদের যোগসাজশ রয়েছে। এর ফলে নির্বাচন ও সামগ্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ভোট দেওয়ার ব্যাপারে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।

ভোটাধিকারের জন্য ১৯৬৩ সাল থেকে শুরু করে সর্বশেষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন করার কথা তুলে ধরে মেনন বলেন, আবার যেন এই বৃদ্ধ বয়সে সবটাই ‘পুনর্মূষিকোভব’ করতে না হয়। রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন অংশ দেশের ওপর নির্বাচনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করলে রাজনৈতিক দল শুধু নির্বাচন নয়, রাষ্ট্র পরিচালনায়ও প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলবে। এটা সবার জন্য যেমন, আওয়ামী লীগের জন্যও তেমন প্রযোজ্য।

১৪ দলের শীর্ষ নেতা মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলের শরিকদের নিজ পায়ে দাঁড়াতে বলেছেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক স্পেস না থাকলে কেউ সংগঠন, আন্দোলন, ভোট নিয়ে এগোতে পারে না।

বাজেট আলোচনায় মেনন বলেন, সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রার পথে কাঁটা হয়ে রয়েছে আর্থিক খাতের দুর্গতি। ব্যাংক খাতে লুটপাট, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা কারও অবিদিত নয়। ঋণখেলাপির দায়ে ব্যাংকগুলো ন্যুব্জ। চলছে তারল্যসংকট। করের টাকা দিয়ে ব্যাংকের ঘাটতি মূলধন পূরণ করার জন্য বরাদ্দ এবারও রাখা হয়েছে বাজেটে।

মেনন বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীন ভূমিকা দূরে থাক, ব্যাংকগুলোকে কার্যকর নজরদারি করতেও অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। নিজের অর্থই তারা সামাল দিতে পারেনি এবং তার কোনো জবাবদিহি দেশবাসী পায়নি। রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক প্রদান, ব্যাংকমালিকদের আবদারে ব্যাংক আইন সংশোধন করে ব্যাংকগুলোকে পারিবারিক মালিকানার হাতে তুলে দেওয়া, একই ব্যক্তি একাধিক ব্যাংকের মালিক বনে ব্যাংক খাতকে নিয়ন্ত্রণ করা, ব্যাংক মালিক অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে সিআরআর নির্ধারণ করা-—এসবই ব্যাংক খাতে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।

মেনন বলেন, অর্থমন্ত্রী ব্যাংক খাতে সংস্কারের জন্য কিছু কথা বলেছেন, তাও ভবিষ্যৎবাচক। ব্যাংক কমিশন গঠনের প্রস্তাবকেও তিনি আলোচনাসাপেক্ষ রেখে দিয়েছেন। মেনন বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন আর এক টাকাও ঋণখেলাপি হবে না। কিন্তু এক মাসের মধ্যে ঋণখেলাপির পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা এই বাজেটের পরিমাণের এক–পঞ্চমাংশ। আর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি কীভাবে নির্দিষ্ট হবে, তা জানা নেই।

সাবেক মন্ত্রী মেনন বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী যেমন ব্যাংক সংস্কার করতে পারেননি, এবারেও এ নিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে। কারণ ওরাই অর্থনীতির বর্তমান নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে। বাজেটের ঘাটতি অর্থ পূরণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ টাকা সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে। এতে ব্যাংকের তারল্যসংকট আরও বাড়বে। বেসরকারি বিনিয়োগ আরও কমে যাবে। কর্মসংস্থান হবে না। এসবই একই সূত্রে গাঁথা।

মেনন বলেন, ‘অপরাধীদের চিহ্নিত না করে পুঁজিবাজারের জন্য যে ব্যবস্থাদির কথা তিনি বলেছেন, তা কতখানি কার্যকর হবে সেটা দেখার বিষয়।’

মেনন বলেন, কালোটাকা দিয়ে জমি–ফ্ল্যাট কেনার বিশেষ সুবিধা, বিপুল পরিমাণ পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার কোনো প্রক্রিয়া না থাকার সুবিধা পাবে ধনীরা। দেশের বিকাশমান মধ্যবিত্ত এ ক্ষেত্রে বিশেষ চাপের মধ্যে থাকবে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সাধারণ পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু চিনি, ভোজ্য তেল, এলপিজি, প্লাস্টিক সামগ্রী, অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি-পাতিল, এসবই মধ্যবিত্তের গৃহস্থালির জিনিস।

কালোটাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়ে মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন টাকা যাতে পাচার না হয় সে জন্য বিনিয়োগে স্ট্রিমিং করতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ যাবৎ এ ধরনের ব্যবস্থা থেকে বিশেষ সুফল পাওয়া যায়নি। এতে ফ্ল্যাট-জমির দাম মধ্যবিত্তের আওতার বাইরে চলে যাবে। আর অনৈতিকতাই উৎসাহিত হবে।

মেনন বলেন, উন্নয়নের ফল মাত্র কিছু লোক পাচ্ছে, জনগণ পাচ্ছে না। সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়েছে কিছু হাতে। ১০ শতাংশ ধনী মোট সম্পদের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এরা মূলত ‘রেন্ট সিকার’। ক্ষমতার চারপাশে বলয় গড়ে তুলেছে তারা বিভিন্ন ধরনের লুণ্ঠন, দখল-বেদখল, জোর-জবরদস্তির মারপ্যাঁচের মাধ্যমে। দেশের সব ব্যাংক, বিমা, আবাসন, এমনকি প্রবাসে লোক পাঠানো—সবই এদের হাতে।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে মেনন বলেন, গ্যাস খাতে দুর্নীতি বন্ধ করেই আমদানীকৃত এলএনজির দাম সমন্বয় করা সম্ভব।

মেনন বলেন, তাঁর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তাঁর ফাঁসি দাবি করা হয়েছে। যাঁরা এ দাবি করেছেন, তারা প্রতিদিন নানা বিষয়ে ফতোয়া দিচ্ছেন। ইউটিউবে প্রতি মুহূর্তে ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি ও সাম্প্রদায়িকতা প্রচার করছেন। সাইবার সিকিউরিটি আইনে সাংবাদিকসহ যে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, কিন্তু এঁদের করা হয় না।  সুত্রঃ শীর্ষ কাগজ

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print