
নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় মুক্তিমঞ্চের ঘোষণা দিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সভাপতি কর্নেল (অব) অলি আহমদ। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ মঞ্চের ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে ভালোবাসে।
সংবাদ সম্মেলনে নতুন মঞ্চ সম্পর্কে অলি আহমদ বলেন, এটি নতুন কোনো জোট নয়, মঞ্চ। এই মঞ্চে থাকবে জামায়াতও।
লিখিত বক্তব্যে জাতীয় সংসদের মধ্যবর্তী নির্বাচন ও কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১৮ দফা দাবি তুলে ধরেন এলডিপির এই সভাপতি।
জামায়াতে ইসলামী কী আপনার ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চে’ আসতে পারবে- জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ বলেন, ‘‘একাত্তরের জামায়াত আর ২০১৯ সালের জামায়াত ‘এক নয়’। দেশপ্রেমিক শক্তি যারাই আসতে চায়, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী তাদের সবাইকে আমরা সঙ্গে নেব। কোনো জাতিকে বিভক্ত করে দূর্বল লোকেরা। অন্যের কাঁধের ওপর বন্দুক রেখে বন্দুক চালান ঠিক না, সবসময় অন্যকে দোষ দিয়ে আমি আগাব এটা ঠিক না। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘‘আপনি (প্রশ্নকারী সাংবাদিক) হাসতেছেন বোধহয়, একটু আরাম পাচ্ছেন। আমার কথাটা শুনেন- ১৯৭১ সালের জামায়াত আর ২০১৯ সালের জামায়াত এক না। এরা বাংলাদেশকে ভালোবাসে।”
তিনি আরো বলেন, ‘‘ এরা (২০১৯ সাল) হলো বাংলাদেশের জামায়াত, এই দেশকে তারা ভালোবাসে। তাদের মধ্যে অনেক সংশোধনী আসছে এবং তারা নিজেদের মধ্যেও বসে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে- তারা দেশপ্রেমিক শক্তি। আমরা আশা করব নিশ্চয় যারা দেশকে ভালোবাসে এবং বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে চায়, দেশবাসীকে মুক্ত করতে চায়- যারাই আমাদের সঙ্গে আসবে- সবাইকে আমরা সঙ্গে রাখব।”
বিএনপির ব্যর্থতার কারণের এই মঞ্চ গঠন করা হলো কি না প্রশ্ন করা হলে অলি আহমদ বলেন, ‘‘আমি কারো ব্যর্থতার কথা বলব না। আমাদের সবার ব্যর্থতা দেশকে আমরা যেভাবে ভালোবাসার কথা। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা তাদেরও ব্যর্থতা রয়েছে। আমরা উপলব্ধি করেছি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে- দিস মাচ অ্যান্ড নো মোর, দিস ফার অ্যান্ড নো মোর।”
তিনি বলেন, ‘‘ যথেষ্ট হয়েছে। উই আর টু ফ্রি দ্যা নেশন। জাতিকে মুক্ত করতে হবে, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারে কে আসলো কে গেল- এটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা চাই, জনগন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক।”
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ বলেন, “জাতীয় মুক্তি মঞ্চ কোনো রাজনৈতিক জোট নয়। জাতির দুরবস্থা ও জাতীয় সমস্যা সমাধানে জাতীয় মঞ্চ কাজ করবে। দেশপ্রেমিক যে কেউ এ মঞ্চে আসতে পারবেন। আমার ১৯ দলীয় জোটের সঙ্গে আছি।” সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ১৮ দফা দাবি পেশ করা হয়।
দাবিগুলোর মধ্যে আরো ছিল দেশবিরোধী চুক্তি প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষা, জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিশন গঠন, গুম-খুন বন্ধের পদক্ষেপ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) নেতা তাসমিয়া প্রধান, খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা আহমদ আলি কাসেমী, ইসলামী সঙ্গীত শিল্পী মুহিব খান।
মঞ্চে না বসলেও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে অলি আহমদের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে এলডিপিতে যোগ দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল।