ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

ঝুলে গেছে ই-পাসপোর্ট

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত সর্বাধুনিক ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) চালু করা নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। সরকারের পক্ষ থেকে চলতি জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে জার্মানির প্রতিষ্ঠান ভেরিডোসের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে সংকট, ই-গেট স্থাপনের কাজে মন্থরগতি, নীতিমালা এবং ফি নির্ধারণ চূড়ান্ত না হওয়ায় ঝুলে গেছে এ বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট প্রকল্পের কাজ। ফলে এমআরপি বা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট নিয়েই আপাতত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভ্রমণ করতে হবে। বর্তমানে ১১৯টি দেশের নাগরিকগণ ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করলেও বাংলাদেশে কবে নাগাদ এ ই-পাসপোর্ট চালু হতে পারে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কেউ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সময় দিবেন, তখনই ই-পাসপোর্ট তৈরি ও বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। সর্বাধুনিক ই-পাসপোর্ট সবার কাছে তুলে দেওয়ার জন্য কাজ চলছে। ইতিপূর্বে দেশের প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার মানুষ এমআরপি পাসপোর্ট পেয়েছেন।

এ বিষয়ে ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান জানান, জুলাই থেকেই ই-পাসপোর্ট বিতরণ করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় পিছিয়ে গেছে। আমরা এখন শেষ মুহূর্তের কাজগুলো সম্পন্ন করছি। তিনি বলেন, আমরা ই-পাসপোর্টের ফি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সোহায়েল হোসেন খান বলেন, ই-পাসপোর্ট চালুর জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করা হচ্ছে। চালুর দিনক্ষণ বলতে পারছি না। তবে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা খরচে ই-পাসপোর্ট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। গত বছরের জুলাই মাসে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ও জার্মানের সঙ্গে ই-পাসপোর্ট ও অটোমেটেড বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানির সঙ্গে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর জিটুজিরভিত্তিতে টার্ন কী পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়। চুক্তি অনুযায়ী জিটুজি প্রকল্পের আওতায় জার্মানের ভেরিডোস কোম্পানি তিন কোটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরবরাহ করবে। ঢাকার উত্তরায় বুকলেটের জন্য একটি অ্যাসেম্বলি কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। যাতে বুকলেটের খরচ অর্ধেকেরও কম হবে। ৫০টি ই-গেট প্রদান করার কথা থাকলে মাত্র তিনটি ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে। তারা সব সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক ১০ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ সেবা প্রদান করবে। চুক্তি অনুযায়ী পাসপোর্টের ইলেকট্রনিক চিপে ১০ আঙুলের ছাপ থাকার কথা। তবে ভেরিডোস মাত্র দুটি আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করতে চাচ্ছে। এতে রাজি নয় পাসপোর্ট অধিদপ্তর। তারা বলছেন, মাত্র দুই আঙুলের ছাপে ভবিষ্যতে জালিয়াতি হতে পারে, এটা নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়। এ নিয়ে জার্মান প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক ও চিঠি চালাচালি হলেও এখনো সমস্যার সমাধান হয়নি।

ই-পাসপোর্ট কার্যকর করতে স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা বা ইলেকট্রনিক গেট (ই-গেট) স্থাপন জরুরি। মোট ৫০টি ই-গেট স্থাপনের কথা থাকলেও দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও দুইটি স্থলবন্দরেও ই-গেট স্থাপনের কাজ শেষ হয়নি। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ সুপার (ইমিগ্রেশন) শাহারিয়ার আলম জানান, বিমানবন্দরে দুইটি নতুন ই-গেট বসানোর কাজ চলছে। তবে কালো তালিকাভুক্ত ব্যক্তি, জাল পাসপোর্ট ও ভিসাধারী ব্যক্তি এবং মানবপাচার ঠেকাতে সেখানে করণীয় বা কোনো নির্দেশনা আসেনি। তৈরি হয়নি নীতিমালা। জানা গেছে, এখনো নির্ধারণ করা হয়নি ই-পাসপোর্ট ফি। এমনকি কীভাবে এর ব্যবহার হবে, তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়নি ইমিগ্রেশন পুলিশকে। ই-পাসপোর্ট ফি পুরোপুরি চূড়ান্ত না হলেও প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ন্যূনতম ছয় হাজার টাকায় একজন নাগরিক ২১ কার্যদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট পাবেন। এছাড়াও সাত দিনের এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য ১২ হাজার এবং একদিনের সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য ১৫ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। পুরোপুরি প্রস্তুত হলে দিনে ২৫ হাজার পাসপোর্ট প্রিন্ট করা সম্ভব হবে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডাটাবেজে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাবে না। তবে কারো পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাকে এমআরপির বদলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। বর্তমানে বই আকারে যে পাসপোর্ট আছে, ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে বর্তমানে পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসম্বলিত যে দুইটি পাতা আছে, ই-পাসপোর্টে তা থাকবে না। সেখানে থাকবে পালিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডের মধ্যে থাকবে একটি চিপ। সেই চিপে পাসপোর্টের বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। এই বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট মূলত একটি এমবেডেড ইলেক্ট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর (মোবাইলের মেমোরি কার্ডের মতো) চিপ সম্বলিত। এই মাইক্রো প্রসেসর চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক (ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি) তথ্য সংরক্ষণ করা হবে, যাতে পাসপোর্টধারীর পরিচয়ের সত্যতা থাকে। ই-পাসপোর্ট ই-গেটের একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখার সঙ্গে সঙ্গে বাহকের পরিচয় নিশ্চিত করবে। নির্দিষ্ট নিয়মে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। থাকবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের ব্যবস্থাও। সব ঠিক থাকলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ভ্রমণকারী ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন। ই-গেটে কোনো তথ্যবিভ্রাট ঘটলেই লালবাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সঠিকভাবে ই-পাসপোর্ট ব্যবহারে সহযোগিতা করবেন।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print