
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, মান্নান ভাই ছিলেন রাজনৈতিক কর্মী সৃষ্টির একজন সৃজনশীল কারিগর। কর্মীদের সঙ্গে তাঁর অন্তরঙ্গ সহাবস্থান দলের ভিত্তিতে সুদৃঢ় করেছে।
তাই তিনি সকল রাজনীতিকের কাছে একজন আদর্শিক শিখা হিসেবে প্রজ্জ্বলিত হয়ে থাকবেন।
তিনি বুধবার সাবেক মন্ত্রী ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের পূর্বাঞ্চলীয় উপ-অধিনায়ক মরহুম এম.এ.মান্নান’র ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর কবরস্থান প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, আমাদের সবার মধ্যে রাজনৈতিক উচ্চা-আকাক্সক্ষা থাকতে হবে। তবে তা যেন মোহ ও লোভমুক্ত থাকে। আজকের প্রেক্ষিতে এই বিচ্যুতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে দেশ, জাতি ও দলের ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশ আজ কলঙ্কমুক্ত।
আর তাই আওয়ামী লীগের পতন মানে ৭১’র পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসরের পুন:উত্থান ঘটবে। এই সত্যটিকে উপলব্ধি করে মানুষের মাঝে দলের অবস্থানকে নিশ্চিত করতে হবে এবং জনপ্রতিনিধিদেরও উচিত জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান না নেয়া। তাহলে একদিন জনগণই তাদের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখবে।
সভায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক এম.পি ও রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী বলেন, মান্নান ভাই আপাদমস্তক একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক ছিলেন। তাঁর মতো কয়েকজন ত্যাগী এবং জেল-জুলুমের শিকার নেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁর ছায়ায় পরিশুদ্ধ থাকার প্রয়াস চালিয়েছি। আজকের তরুণ প্রজন্মকে মান্নান ভাইয়ের জীবন ও কর্ম থেকে পাঠ নিতে হবে। তাঁকেই অন্তরে ধারণ করতে পারলে তরুণ প্রজন্ম পরিশুদ্ধ হবে।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, মান্নান ভাইয়ের একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে আমি তাঁকে কাছ থেকে দেখেছি। তিনি জনকল্যাণমুখী রাজনীতির সাধনা করে গেছেন; কর্মীদের কাছে তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন এবং কর্মীদের সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করতেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশ আজ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এই মর্যাদাকে লুণ্ঠিত করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনকল্যাণমুখী রাজনৈতিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে হবে।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম.এ. সালাম বলেন, এম.এ. মান্নান অনেক ঝড়-ঝাপটা সহ্য করেছেন। কিন্তু কখনো ভেঙ্গে পড়েননি। বটবৃক্ষের মতই তিনি সংকল্পে অঁটল। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর পর্বতসম অবদান আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। মান্নান ভাই লেখা-লেখিও করতেন। তিনি রাজনীতিক না হয়ে একজন বড় মাপের লেখকও হতে পারতেন। তিনি আজ নেই; আমাদের ভালো কাজের মাধ্যমেই মান্নান ভাইকে চিরঞ্জীব করে রাখতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম. রেজাউল করিম চৌধুরী, এম.এ. রশিদ, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সফর আলী, কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুল লতিফ টিপু, কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আবুল হাশেম বাবুল, শামসুল আলম, আবুল বশর।
উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এড. সুনীল কুমার সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শফিকুল ইসলাম ফারুক, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আবদুল আহাদ, ইঞ্জিনিয়ার মানস রক্ষিত, উপ প্রচার সম্পাদক শহীদুল আলম, উপ দপ্তর সম্পাদক জহরলাল হাজারী, নির্বাহী সদস্য এম.এ. জাফর, আবুল মনসুর, গৌরাঙ্গ চন্দ্র ঘোষ, গাজী শফিউল আজিম, বখতিয়ার উদ্দিন খান, শেখ শহিদুল আনোয়ার, রোটারিয়ান মো: ইলিয়াছ, হাজী বেলাল আহমদ, থানা আওয়ামী লীগের আলহাজ্ব নরুল ইসলাম, আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর চৌধুরী সিইনসি স্পেশাল, আলহাজ্ব সাহাব উদ্দিন আহমেদ, সিদ্দিক আলম, আনসারুল হক প্রমুখ।
এছাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভাশেষে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মরহুম এম.এ. মান্নানের কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের পর দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আলহাজ্ব আবদুচ ছালাম।