
বাসায় আটকে রেখে কাজের শিশুকে আমানুষিত নির্যাতনের অভিযোগে চট্টগ্রামে শ্যামলী ভট্টাচার্য্য নামে এক নারী আইনজীবিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার ১০ বছরের শিশু রিয়াদকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
রবিবার (২৮ জুলাই) রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ জেকে টাওয়ারে বাসা থেকে এই নারী আইনজীবিকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
এদিকে গ্রেফতারকৃত আইনজীবি শ্যামলীকে পুলিশ আজ সোমবার দুপুরে আদালতে হাজির করলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আবু সালেম নোমানের তাকে জামিন মঞ্জুর করেছেন।

আদালতে দায়িতে থাকা এসি প্রসিকিশন মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন জামিন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি পাঠক ডট নিউজকে বলেন, মহিলা আইনজীবি শ্যামলী ৮ মাসের অন্তঃসত্তা হওয়া আদালত চট্টগ্রাম আইনজীবি সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জিম্মায় তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, হামজারবাগে একটি ভবনে গৃহকর্তী মহিলার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন শিশু গৃহকর্মী রিয়াদ (৮)। তার সারা শরীরজুড়ে গরম খঞ্চি দিয়ে চ্যাকা ও কামড় আর মারধরের দাগ রয়েছে।
ওই ভবনের একজন বাসিন্দা জানান, শিশুটিকে ২ মাস আড়াই মাস বাসায় আটকে রেখে অমানুষিকভাবে নির্যাতন চালাতো গৃহকর্মী শ্যামলী। তিনি একজন উৎশৃঙ্খল নারী। তার স্বামী আদনান মুসলিম হলেও এই মহিলা হিন্দু। সকালে স্বামী স্ত্রী দুজন শিশু আদনানকে বাসায় বন্দি করে বাইরে তালা মেরে চলে যায়। রাতে এসে তার উপর নির্যাতন চালাতো।

গতকাল দুপুরে ছেলেটি নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ভবনের ৬ তলা থেকে জানালা দিয়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে ভবনের দারোয়ানের সহায়তায় এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে পুলিশের খবর দেয়।
এই ঘটনায় গৃহকত্রী অ্যাডভোকেট শ্যামলী ভট্টাচার্য্যিকে রাতে পুলিশ গ্রেফতার করে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সিনিয়র ডেপুটি গভর্ণর আমিনুল হক বাবু পাঠক ডট নিউজকে বলেন, শিশু রিয়াদকে উদ্ধারের পর আমি থানায় গিয়েছিলাম তাকে দেখতে। তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। যা ভাষায় প্রকাশ করাম মত না। পুরো শরীর দগদগে হয়ে গেছে। শরীরে হাতে কামড় এবং গরম লোহার খঞ্চি দিয়ে চ্যাকা দেয়া হয়েছে। আমি এই নারীর বিচার দাবী করছি।
পাচঁলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাসেম ভুঁইয়া বলেন। রিয়াদ নামে শিশুটিকে নির্যাতের পর এলাকার লোকজন থানায় নিয়ে আসে। এই শিশু বাদী হয়ে তার উপর নির্যাতনের মামলা করার পর আমরা গৃহকত্রী শ্যামলীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি।