ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চুরির কৌশল সম্পর্কে অভিনব তথ্য দিয়েছে কোতোয়ালীতে ধরা পড়া ১১ চোর

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

তালা না ভেঙে, শাটার অক্ষত রেখে দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরির অভিনব তথ্য দিয়েছে নগরীর কোতোয়ালী থানা এলাকা থেকে গ্রেফতারকৃত চোর চক্রের ১১ সদস্য। এসময় চুরির সময় ব্যবহৃত বিভিন্ন সাংকেতিক শব্দ কথাও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে তারা।

শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘীর পাড়ে তুন্নাজ্জিন নামে একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুইটি এলজি ও চারটি কার্তুজ এবং একটি লোহার কাটার ও একটি লোহার রড উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ রবিবার নগরীর মোমিন রোড়ে অবস্থিত ডিসি দক্ষিণ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়,  গ্রেফতারকৃত চোরেদের সবার বাড়ী কুমিল্লা জেলায়। তারা ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বিভিন্ন দোকান ও ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের তালা-শাটার অক্ষত রেখে কৌশলে চুরি করে। চুরি শেষ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে তাদের সময় লাগে ২ থেকে সর্বোচ্চ ৩ মিনিট।

সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান,গত ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর জুবিলি রোডের রয়েল প্লাজার তৃতীয় তলায় কাজী কম্পিউটারস নামে একটি দোকান থেকে ১২টি ল্যাপটপ, ৫২৫ পিস পেনড্রাইভ ও ৪৫০ পিস মেমোরি কার্ড চুরি হয় এরপর গত ২৭ জুন সকালে নগরীর নন্দনকাননে নিউ লাকী ইলেকট্রিক নামে একটি দোকান থেকে ক্যাশবক্সের তালা ভেঙে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা চুরি হয়।

‘এই দুটি চুরির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্তে নেমে আমরা একটি আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সম্পৃক্ততা পাই। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখতে পাই, চোরের দল কাজী কম্পিউটারের শাটারের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করেছে। লাকী ইলেকট্রিকে প্রবেশ করেছে শাটার কৌশলে ফাঁক করে। তালা না কেটে শাটার ফাঁক করে চুরির বিষয়টি দেখে আমরা অনুসন্ধানের মাধ্যমে কুমিল্লার এই চোরচক্রের খোঁজ পেয়েছি। ঈদুল আজহার বন্ধে ফাঁকা নগরীতে চুরি করতে এসে তারা হোটেলে উঠেছিল। এই বন্ধের মধ্যে ৪-৫টি চুরি করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা ১১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।

 এসময় ওসি মহসিন আরো বলেন, এই চোরের দল নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময় বিভিন্ন সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করে যেমন চোরের দল দোকানকে বলে অফিস। তালাকে বলে আম। কাটারকে বলে গাড়ি। চাদরকে বলে ঠোঙ্গা। দোকানের ভেতরে যে চুরির করার জন্য প্রবেশ করে তাকে বলে অফিসম্যান। পুলিশকে ডাকে তেলাচোরা বা তেইল্ল্যাচোরা (তেলাপোকা)। সংবাদদাতাকে ডাকে লাইনম্যান, চুরি করাকে বলে ডিউটি, চুরির টাকাপয়সাকে বলে ব্যবসা। চুরি করা টাকা ভাগ করার সময় এক লাখ টাকাকে বলে ‘এক টাকা’।

 গ্রেফতার ১১ জনের মধ্যে দলনেতা বা লাইনম্যান হচ্ছে হানিফ। এক হাত পুড়ে বিকলাঙ্গে পরিণত হওয়া হানিফ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে প্রতিষ্ঠান টার্গেট করে। কামাল এই দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। হানিফ খবর দেয় কামালকে। চুরির প্রস্তুতি নিয়ে দলের অন্য সদস্যদর খবর দেয়। বিকাশের মাধ্যমে তাদের যাতায়াত ভাতা পাঠানো হয়। হানিফ ও কামাল যৌথভাবে সবুজ সংকেত দিলেই চোরের দল অভিযানে নামতে পারে। লিয়াকত ও তৌফিক হচ্ছে অফিসম্যান, মানে তারা দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে। কাটার দিয়ে তালা কাটে কামাল হোসেন, মিজান ও মো. কামাল। বাকিরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাইরে থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে  এডিসি শাহ মো. আব্দুর রউফ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের শাটারের প্রস্থ ছোট হলে তালা কাটে। আর শাটারটি প্রশস্ত হলে শাটার ফাঁক করে ভেতরে দু’জন ঢোকে। তারপর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে ক্যাশবাক্স ভেঙে টাকাপয়সা নিয়ে নেয়। ল্যাপটপ পেলে সেগুলোও নেয়। ২-৩ মিনিটের মধ্যে চুরি শেষ করে তারা বেরিয়ে আসে। চুরির সময় বাইরে থাকা সদস্যরা কখনো ছাতা মেলে কিংবা কখনও চাদর বিছিয়ে মানুষের দৃষ্টি এড়ানোর জন্য বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে। তারা সাধারণত সকালে কিংবা রাতে চুরি করে।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদী হাসান  জানান, হানিফের নিয়ন্ত্রণে এই ধরনের ৯টি গ্রুপ আছে। তারা গত একযুগ ধরে চুরি করে আসছে। গ্রুপের সদস্য প্রায় ৫০ জন। তাদের সবার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। তারা ঢাকার গুলশান, মহাখালী, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কুমিল্লা শহরের কোতোয়ালি, সিলেট সদর, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে চুরি করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। দেশের বিভিন্ন জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় বড় শোরুম, বড় কাপড়ের দোকান, বাজারের বাইরে থাকা বড় মুদির দোকান, পরিবেশক কোম্পানির অফিস, বিকাশ এজেন্ট প্রতিষ্ঠানকে সাধারণত তারা টার্গেট করে। চুরির পর হানিফ দলনেতা হিসেবে তিন ভাগের এক ভাগ টাকা নেয়। কামাল নেয় ২০ শতাংশ টাকা। বাকি টাকা অন্যদের মধ্যে বিলি করা হয়। তবে যারা দোকানের ভেতরে ঢুকে, তাদের জন্য ‘বিশেষ বখশিস’ থাকে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো,  লিয়াকত হোসেন (২৪), মো. আকরাম (২৩), মো. হানিফ (৪০), মো. তৌফিক (২৬), মো. মাসুম (২৬), নয়ন মল্লিক (২২), মো. মিলন (২৫), কামাল হোসেন (২৮), জামাল উদ্দিন (৩০) ও মো. কামাল (৩২)।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print